বরগুনার তালতলীতে টেকসই বন ও জীবিকা (সুফল) প্রকল্পের বিভিন্ন কাজের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে রেঞ্চ মনিরুল ইসলাম ও বিট কর্মকর্তা ফজলুল হকের বিরুদ্ধে। স্থানীয় ১১টি ভিসিএফ সমিতির হাতে শুধু খাতা কলমে দায়িত্ব ও ক্ষমতা দেওয়া থাকলেও বাস্তবে এর কোন মিল নেই। রেঞ্চ ও বিট কর্মকর্তার সেচ্ছাচারিতায় সুফল প্রকল্পের মুখ থুবরে পড়েছে।
জানা যায়, গত ২০২১-২২ অর্থ বছরে উপজেলার সংরক্ষিত বন এলাকা বড়বগী, সোনাকাটা ও নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের টেকসই বন ও জীবিকা (সুফল) প্রকল্প দেয় বন বিভাগ। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ঐ ৩ টি ইউনিয়নে ১১ টি ভিসিএফ সমিতি করা হয়। প্রতি সমিতি পরিচালনার জন্য একজন ক্যাশিয়ার (বুক কিপার) নিয়োগ দেওয়া হয়। ঐ বুক কিপারকে প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা ও ভিসিএফ সমিতিতে ঘর ভাড়া বাবদ প্রতিমাসে ২ হাজার ৫’শ টাকা করে দেয়ার চুক্তি করা হয়। তবে চুক্তি অনুযায়ী ঘর ভাড়ার টাকা আদৌ দেয়া হয়নি। তবে সমিতিতে সঞ্চয় ও ঋণ পরিচালনা করার জন্য প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা করে দেয়ার কথা থাকলেও ৩ মাস পরে তাদেরকে ৩ মাসের বেতন সিটে স্বাক্ষর রেখে দিয়ে দেয়া হয়েছে ১ মাসের ৫ হাজার টাকা করে। বাকী ২ মাসের টাকা অফিসে খরচ হয়েছে বলে রেখে দিয়েছেন।
এ ছাড়াও ঐ এলাকার বন নির্ভরশীল মানুষকে সচেতন করার জন্য প্রশিক্ষন দেওয়ার কথা থাকলেও নামে মাত্র প্রশিক্ষন দেওয়া হয়েছে। বনকে সুরক্ষা করার জন্য স্থানীয়দের সম্মানী ভাতার মাধ্যমে প্রহরী নিয়োগ করে থাকলেও তাদের কোনো ধরনের সম্মানী ভাতা দেওয়া হয়নি। এ ছাড়া টেকসই বন ও জীবিকা(সুফল) প্রকল্পের ১১টির ভিসিএফ সমিতির অন্যান্য প্রকল্পগুলো সঠিক ভাবে বাস্তবায়ন করছে না তারা।
ভিসিএফ কমিটির সওদাগর পাড়ার সভাপতি মনোয়ার হোসেন মীর, কবিরাজপাড়ার সভাপতি মি.মংথিন জো ও নামেশেপাড়ার সভাপতি মি.মংচিন থান বলেন, রেঞ্চ ও বিট কর্মকর্তার অনিয়ম ও দূর্নীতি কারণে সরকারের এই প্রকল্পটি মুখ থুবরে পড়েছে। প্রকল্পের শর্ত অনুযায়ী আমাদের হাতে কলমে ক্ষমতা দেওয়া থাকলেও বাস্তবে তারা কোনো ক্ষমতাই দেয়নি। সমিতির টাকা ব্যাংক থেকে উঠানোর জন্য চেকে স্বাক্ষর নিয়ে যায়। উত্তোলনকৃত সেই টাকা কোথায় খরচ করে তাও জানায়নি তারা।
কবিরাজপাড়া সমিতির ক্যাশিয়ার(বুক কিপার) রিপা বলেন, আমি বুক কিপার হিসেবে দুই বছর যাবৎ কাজ করে আসছি। গত তিন মাস আগে আমারদের জন্য মাসে ৫ হাজার টাকা করে সম্মানী বরাদ্দ হয়। তবে আমাদের তিন মাসের ১৫ হাজার টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও মাত্র ৫ হাজার টাকা দিয়ে তিন মাসেইর স্বাক্ষর নিয়ে যায়। তখন বলেন বাকি দুই মাসের টাকা বিভিন্ন অফিস খরচ হয়েছে বলে আমাদের পাঠিয়ে দেয়। ১১টি সমিটির ১১ জন বুক কিপারের টাকাই রেখে দিয়েছেন রেঞ্চ ও বিট কর্মকর্তা। এমন অভিযোগ এই ১১টি সমিটির সকল বুক কিপারের।
এবিষয়ে তালতলী রেঞ্চ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন আমি কিছু জানি না। এটা ঐ সমিতির লোকজনের নামে ব্যাংকে টাকা আসে তারাই ভালো জানে। আমরা শুধু এই প্রকল্পের তদারকি করি।
পটুয়াখালী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে যদি কেউ অভিযোগ করেন তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।