যশোরের অভয়নগর উপজেলার শিল্প ও বাণিজ্য শহর নওয়াপাড়া ভৈরব নদে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা বৈরী আবহওয়া উপেক্ষ করে মানুষের ব্যাপক উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। নওয়াপাড়া পৌরসভার আয়োজনে ও আফিল গ্রুপের পৃষ্ঠপোষকতায় আজ শুক্রবার বেলা ৩ টা থেকে এই প্রতিযোগিতা ভৈরব নদে শুরু হয়। এবারের ১২তম আসরে কয়রা, দিঘলীয়া, তেরখাদা, মাগুরা, মুকসুদপুর ও টুঙ্গীপাড়া থেকে মোট ৮টি টালাই নৌকা অংশগ্রহণ করে।
ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা দেখতে উপজেলার তালতলা খেয়াঘাট থেকে নওয়াপাড়া হাইওয়ে থাকা সংলগ্ন ফেরীঘাট পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার স্থান জুড়ে নদের দুই পারে হাজার হাজার দর্শক সমাগম ঘটে। নৌকাবাইচ কেন্দ্র করে নারী-পুরুষ ও শিশুদের মাঝে উৎসবমুখর পরিবেশের পাশাপাশি নদের দুই পার গ্রামীণ মেলায় পরিণত হয়।
প্রতিযোগিতা শেষে সন্ধ্যায় ফেরীঘাট এলাকায় পুরস্কার বিতরণী মঞ্চ থেকে প্রথম খুলনা কয়রার সুন্দরবন টাইগার, দ্বিতীয় গোপালগঞ্জ টুঙ্গিপাড়ার জয় মা কালী ও তৃতীয় স্থান অর্জনকারী মাগুরা টাইগারসহ অংশগ্রহনকারী সকল নৌকাবাইচ দলের হাতে নগদ অর্থ ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন, যশোর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার। সম্মানিত অতিথি ছিলেন, নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার পৃষ্ঠপোষক আফিল গ্রুপের চেয়ারম্যান শেখ আফিল উদ্দিনের (এমপি) প্রতিনিধি মাহাবুবু আলম লাভলু। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন, বার্ষিক নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা পরিচালনা কমিটির সভাপতি, নওয়াপাড়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুশান্ত কুমার দাস শান্ত।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কেএম আবু নওশাদ, পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) থান্দার কামরুজ্জামান, নওয়াপাড়া সরকারি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ রবিউল হাসান, অভয়নগর থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) এবিএম মেহেদী মাসুদ, নওয়াপাড়া নদীবন্দরের উপপরিচালক মাসুদ পারভেজ, আওয়ামী লীগ নেতা শাহ্ আবদুল মুকিত জিলানী প্রমুখ।
এ ব্যাপারে নৌকাবাইচের আয়োজক নওয়াপাড়া পৌরসভার মেয়র সুশান্ত কুমার দাস শান্ত বলেন, ‘গ্রামবাংলার প্রাচীন ঐহিত্য বাঁচিয়ে রাখা ও সাধারণ মানুষের মাঝে কিছুটা হলেও বিনোদনের ব্যবস্থা করে দিতে প্রতিবছর নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এবারের আয়োজন খুলনা তেরখাদার ভাই ভাই জলপরি, গোপালগঞ্জে টুঙ্গিপাড়ার মোবাইল এক্সপ্রেস, একই জেলার মা শীতলা, জয় জয় মা দূর্গা, হরহর মহাদেব, খুলনা কয়রার সুন্দরবন টাইগার, মাগুরার মাগুরা টাইগার ও নড়াইলের মায়ের দোয়া নামের মোট ৮টি নৌকাবাইচ দল অংশ নেয়।’