রংপুরের পীরগাছা উপজেলার ৫ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী এক শিশুকে তুলে নিয়ে গিয়ে জোর করে ধর্ষন করার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আসামি সোহেল রানাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছে আদালত। রোববার দুপুরে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত ২ এর বিচারক মোঃ রোকনুজ্জামান এ রায় প্রদান করেন। রায় ঘোষনার সময় আসামি উপস্থিত ছিলো। পরে তাকে পুলিশী পাহারায় আদালতের হাজত খানায় নেয়া হয়। মামলার অভিযোগে বলা হয়, রংপুরের পীরগাছা উপজেলার বিরাহিম কুটিয়ালপাড়া গ্রামের মোশারফ হোসেনের শিশু কন্যা স্থানীয় সেচাকান্দি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী ছিলো। সে স্কুলের লেখাপড়ার পাশাপাশি একই গ্রামের সুরুজ আলীর স্ত্রী মর্জিয়া বেগমের কাছে আরবি শিক্ষা গ্রহন করতো। এজন্য প্রতিদিন সকালে ওই বাড়িতে আরবি পড়তে যাইত। মর্জিয়া বেগমের ছেলে আসামি সোহেল রানা পিতা সুরুজ মিয়া প্রায়শই ওই শিশুটিকে বিভিন্ন ভাবে উত্ত্যক্ত করতো। গত ১/৮/২০১৬ ইং তারিখে সকালে শিশুটি মর্জিয়া খাতুনের বাড়িতে আরবি পড়তে যায়। ওই সময় মর্জিয়া খাতুন বাসায় না থাকার সুযোগে আসামি সোহেল রানা শিশুটিকে জোর করে তুলে নিয়ে ঘরের মধ্যে নিয়ে গিয়ে উপর্যুপরি ধর্ষন করে। শিশুটির আত্মচিৎকারে আশে পাশের্^র লোকজন এগিয়ে আসলে আসামি পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ধর্ষিতা শিশুটির বাবা মোশারফ হোসেন নিজে বাদী হয়ে পীরগাছা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে ধর্ষক সোহেল রানা ও তার সহযোগী রত্মা বেগমকে আসামি করে মামলা দায়ের করে। পুলিশ তদন্ত শেষে তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা এস আই কনক কুমার গত ২৮/২/২০১৭ইং তারিখে দুই আসামীর নামে আ্দালতে চার্জসীট দাখিল করে। মামলাটি বিচার শুরু হলে ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষে বিজ্ঞ বিচারক আসামি সোহেল রানাকে দোষি সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন। অন্যদিকে আসামি রত্বা বেগমের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়। সরকার পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী আইনজিবী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত ২ এর বিশেষ পিপি জাহাঙ্গীর হোসেন তুহিন অ্যাডভোকেট জানান, ১২ বছর বয়সী এক শিশুকে জোর করে ঘরের ভেতরে নিয়ে গিয়ে উপর্যুপরি ধর্ষন করার ঘটনায় সর্ব্বচ্য সাজা প্রদান করায় এ রায়ে তারা সরকার পক্ষ সন্তোষ্টি প্রকাশ করছে। বাদী পক্ষ ন্যায় বিচার পেয়েছে বলে আমরা মনে করি বলে জানান। অন্যদিকে আসামি পক্ষের আইনজিবী জহিরুল ইসলাম এ্যাডভোকেট, তার মক্কেল ন্যায় বিচার পাননি এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপীল করা হবে বলে জানান তিনি।