স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে চুরি হওয়া শিশু এখনও উদ্ধার হয়নি। গত রবিবার সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে জোবাইদা আক্তার (৩) নামের ওই শিশুটি চুরি হয়। সকালে মিটফোর্ড জরুরী বিভাগে রক্ত পরীক্ষা করতে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন শিশুটির মা ও নানী। টিকিট কাউন্টারে ব্যস্ত হয়ে পড়েন শিশুটির মা।
তখন নানীর কোলে ছিল শিশুটি।
ওই লাইনের পেছন দাঁড়িয়ে থাকা বোরখা পরিহিত এক নারী শিশুটির নানীকে বলেন, 'আপনি মুরুব্বি মানুষ, বাচ্চা কোলে রাখতে সমস্যা হলে আমাকে দেন কোলে রাখি।' ঠিক ওই সময় শিশুটির নানীর মোবাইল ফোন বেজে ওঠে। তখন মোবাইলে কথা বলছিলেন নানী।এই সুযোগে বোরখা পরিহিত অজ্ঞাত ওই নারীও শিশুটিকে কোলে নিয়ে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়।
পরে শিশুটির মা বিভিন্ন স্থানে খোঁজা-খুঁজির পর সন্তানকে ফিরে পেতে কোতয়ালী থানা পুলিশের দারস্থ হন। কোতয়ালী থানা পুলিশ জানায়, নিখোঁজ তিন মাস বয়সী শিশু জোবাইদা আক্তারকে উদ্ধার ও অজ্ঞাত ওই চোরকে ধরতে হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে।
ভুক্তভোগীর শিশুটির মা জানান, রাজধানীর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের পারগেন্ডারিয়া এলাকায় তাদের বাসা।সকালে শিশু জোবাইদার রক্ত পরীক্ষা করতে এবং নিজের আলট্রাসোনো করাতে মিটফোর্ড হাসপাতালে এসেছিলেন। রোবখা পরিহিত এক নারী তার সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে যায়।
তদন্তে শিশু চুরির ঘটনার সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়- মিটফোর্ড হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে একটি রিকশা দাঁড়িয়ে ছিল। জরুরি বিভাগের গেটে একপাশে বয়স্ক নারী এবং অন্যপাশে বৃদ্ধ এক লোক বসে ছিলেন। আর গেট থেকে একটু দূরে কালো বোরখা পড়া এক নারী একটি শিশুকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে।ওই নারীর মুখ ও নাক ঢাকা, তার ডান কাধে শিশুটি এবং বাম হাতে একটি সাদা শপিং ব্যাগ। সাদা রঙের জুতো পায়ে। আর শিশুটি পরনে ছিল হালকা গোলাপি রঙের একটি পোশাক।
ফুটেজে আরো দেখা যায়, কিছুক্ষণ ওই নারী শিশুটিকে কোলে নিয়েই ধীরে ধীরে হাটাচলা করছিলেন। তখন একটি কালো প্রাইভেটকার জরুরি বিভাগের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় ওই রিকশাটি চলে যায়। এতে বোরখা পরিহিত ওই নারী বার বার তার অবস্থান পরিবর্তন করতে থাকেন। কিছুক্ষণ পর তার ব্যাগ থেকে মোবাইল ফোন বের করে কথা বলার ভান করে ধীরে ধীরে হেটে গেটের দিকে যেতে থাকে ওই নারী।
ঠিক রবিবার সকাল ৮ টা ৫৬ মিনিটে হাসপাতল থেকে অন্য এক নারী শিশু কোলে নিয়ে বের হয়ে যাওয়ার সময় তার পিছু পিছু বোরখা পরিহিত অজ্ঞাত নারীও হেটে হেটে বের হয়ে যায়।
কোতয়ালী থানা থেকে নিখোঁজ শিশুটির বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া গেলে অথবা বাচ্চা/শিশু চুরি ও অপরাধীর বিষয়ে কোনো তথ্য বা সন্ধান পাওয়া গেলে দ্রুত থানা পুলিশকে জানাতে বলা হয়।
আজ সোমবার এ বিষয়ে কোতয়ালী থানার সহকারী উপণ্ডপরিদর্শক (এএসআই) রাশিদুল হাসান বলেন, শিশু জোবাইদা চুরির ঘটনায় আমরা তদন্ত করছি। ঘটনাস্থল ও আশপাশের বিভিন্ন সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে।
এই ঘটনায় অজ্ঞাতনামা নারীকে আসামি করে থানায় একটি মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।