নগরবাসীকে জলাদ্ধতার দুর্ভোগ থেকে রক্ষা দিতে আগামী সপ্তাহ থেকে শুরু হচ্ছে ছয়টি খালের খনন কাজ। পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় খনন কাজ শুরু হবে। বৃহস্পতিবার সকালে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী খালিদ বিন ওয়ালিদ জানিয়েছেন, প্রকল্প অনুযায়ী সাতটি খাল খনন করা হবে। তবে এরমধ্যে একটি খালের খনন কাজ বরিশাল সিটি করপোরেশন শুরু করেছে। সাতটি খাল খনন কাজ সম্পন্ন হলে নগরীর জলাবদ্ধতার সমস্যা দূর হবে বলে জানিয়েছেন সচেতন নগরবাসী। নির্বাহী প্রকৌশলী খালিদ বিন ওয়ালিদ বলেন, আগামী সপ্তাহে খাল খননের কার্যক্রম শুরু করা হবে। আশা করছি খাল খনন শেষ হলে নগরীর জলাবদ্ধতা কমে যাবে। এজন্য নগরী থেকে পানি নিস্কাসনের ড্রেনেজ ব্যবস্থাও ভালো করতে হবে। নির্বাহী প্রকৌশলী আরো জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৬৪ জেলার নদী, খাল খনন প্রকল্পের আওতায় এ কাজ করা হবে। প্রকল্পে ৬ কোটি ৭ লাখ টাকা ব্যয় হবে। এর মাধ্যমে ১৭ কিলোমিটার খাল খনন করা হবে। সাতটি খালগুলো হলো-নগরীর জেল খাল, পলাশপুর খাল, আমানতগঞ্জ খাল, সাগরদী খাল, রূপাতলী খাল, চাঁদমারী খাল ও ভাটার খাল। তিনি আরো জানান, জলবায়ু তহবিলের একটি প্রকল্পের মাধ্যমে সিটি করপোরেশন নগরীর সাগরদী খাল খননের কাজ শুরু করেছে। তাই এ খালের কাজ এখন শুরু করা যাচ্ছেনা। তবে সিটি করপোরেশন যতটুকু করবে, তারপর থেকে খনন করা হবে। এনিয়ে সিটি করপোরেশনের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, প্রকল্পের আওতায় নগরীর আমানতগঞ্জ খালের তিন কিলোমিটার, পলাশপুর খালের ১ দশমিক ৭ কিলোমিটার, জেল খালের ২ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার, ভাটারখালের ১৮০ মিটার, চাঁদমারী ও শাখা খালের ১ দশমিক ৮ কিলোমিটার, সাগরদী খালের ৩ কিলোমিটার ও রূপাতলী খালের ১১শ’ মিটার খনন করা হবে। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)’র জেলা সম্পাদক রফিকুল আলম বলেন, সিটি করপোরেশন এরিয়ার মধ্যে সাতটি খাল খনন গত দুইবছর ধরে ঝুলে ছিলো। সদ্য সাবেক মেয়র একটি চিঠি দিয়ে বন্ধ করার কারণে কাজ করা যায়নি। খাল খনন হলে নগরবাসী জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা পাবে। এজন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থাকে একটি সমন্বিত ব্যবস্থায় আনতে হবে। তিনি আরও বলেন, ৫৮ বর্গ কিলোমিটারের বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকার তিন ভাগের দুই ভাগ এলাকায় ড্রেন নেই। যাওবা রয়েছে তার লেয়ার ঠিক নেই। এগুলো সমাধান করতে হবে। বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, সাতটি খাল খননের জন্য ২০২২ সালের ২৯ মার্চ দরপত্র আহবান করা হয়। ওই বছরের ১২ এপ্রিল বরিশাল সিটি করপোরেশন কাজ বন্ধ রাখার জন্য পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়। এরপর প্রকল্পের টাকা অন্যত্র চলে যাওয়ার উপক্রম দেখা দেয়। এরইমধ্যে বরিশাল-৫ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ও পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীমের চেষ্টায় টাকা ফেরত যায়নি। ফলে নতুন করে দরপত্র আহবান করে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। নদী খাল বাঁচাও আন্দোলন কমিটির সদস্য সচিব কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু বলেন, খাল খননের মাধ্যমে শুধু নগরীর জলাবদ্ধতা দূর হবেনা; একই সাথে ঐতিহ্য ও পরিবেশ রক্ষা পাবে। তিনি আরও বলেন, খাল খনন ঠিকমতো হচ্ছে কিনা এটাও কঠিন তদারকি করতে হবে। সিএস ম্যাপ অনুযায়ী যেন খাল খনন ও সংরক্ষন করা হয় সেইদিকে সিটি করপোরশেনকে কঠোর নজরদারি করতে হবে।