ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে দিনে দুপুরে শিক্ষক ও প্রবাসীর বসতবাড়িতে লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। রোববার সকালে উপজেলা সদরের নিজসরাইল গ্রামে শিক্ষক আবদুল ওহাব ও প্রবাসী জাহাঙ্গীর আলম আল-আমিনের (৪০) বাড়িতে জানালার গ্রীল ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে এই ঘটনা ঘটিয়েছে দূর্বৃত্তরা। নগদ তিন লক্ষাধিক টাকা ও ৩০ ভরিরও অধিক ওজনের স্বর্ণালঙ্কার সহ মূল্যবান মালামাল লুটে নিয়েছে তারা। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন গৃহকর্তারা। ভুক্তভোগী ও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, থানা থেকে মাত্র ৪-৫ শত গজ দূরে নিজসরাইল গ্রামে সরাইল সরকারী অন্নদা স্কুলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও ব্লু বার্ড স্কুলের পরিচালক আবদুল ওহাবের বসতবাড়ি। গতকাল সকালে বসতবাড়ির দরজাসহ প্রধান ফটকে তালা দিয়ে স্কুলে চলে যান আবদুল ওহাব। ধারণা করছেন সকাল সাড়ে ১১টার দিকে একদল দূর্বৃত্ত প্রতিরক্ষা দেওয়াল টপকিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করে। তারা দেশীয় যন্ত্রপাতি দ্বারা বারান্দার গ্রীল কেটে ভেতরে প্রবেশ করে। ২-৩ টি কক্ষের আলমীরার তালা ভেঙ্গে কাপড় চোপড় সহ সকল মালামাল এলোমেলো ভাবে ফেলে দেয়। আর লুটে নেয় ২০-২২ ভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ ২ লক্ষাধিক টাকা। দুপুর ১টার দিকে কাজের বোয়া দিপা কর্মকার এসে দেখেন প্রধান ফটক ভেতরের দিকে আটকানো। দিপা বিষয়টি আবদুল ওহাবকে জানান। তিনি দ্রƒত ছুটে এসে ভেতরে প্রবেশ করে কিংকর্তব্য বিমূঢ় হয়ে পড়েন। আলমীরার তালা ভাঙ্গা। কাপড়সহ অত্যন্ত গুরূত্বপূর্ণ মালামাল ছড়িয়ে ছিটিয়ে খাঁটে ও মেঝেতে পড়ে আছে। এর আগে সরাইল সদরে প্রবেশের প্রধান সড়কের পাশে একই পাড়ায় ৬ তলা ভবনের দ্বিতীয়তলায় প্রবাসী জাহাঙ্গীর আলম আল-আমিনের বাসভবনের রান্নাঘরের জানালার গ্রীল কেটে ভেতরে প্রবেশ করে দূর্বৃত্তরা। একই কায়দায় তারা ২-৩টি কক্ষের আলমীরা ও সুকেসের তালা ভেঙ্গে নগদ ১ লাখ টাকা ও ৮ ভরি ওজনের স্বার্ণালঙ্কার লুটে নেয়। সাথে নিয়ে যায় মূল্যবান মালামাল। প্রবাসীর স্ত্রী মারিয়া আক্তার লিমা জানায়, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় তারা কক্ষে তালা দিয়ে গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলেন। রোববার দুপুর ১টার দিকে কক্ষের ভেতরে প্রবেশ করে দেখেন একাধিক আলমীরা সুকেসের তালা ভাঙ্গা। আশপাশে এলোমেলো ভাবে পড়ে আছে অন্যান্য মালামাল। পরে দেখেন আলমীরায় রক্ষিত নগদ ১ লাখ টাকা ও ৮ ভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার নেই। স্থানীয় একাধিক বাসিন্দার ধারণা একই গ্রƒপের সদস্যরা পর্যায়ক্রমে এই লুটপাটের ঘটনাটি ঘটিয়েছে। এর আগে বড় দেওয়ানপাড়ার বাসিন্দা মো. তোশাররফ হোসেন সাধনের বাসভবনের দ্বিতীয়তলায়ও একই ধরণের ঘটনা ঘটেছে। এক সাথে উপজেলা সদরে তিনটি বসতবাড়িতে গ্রীল কেটে লুটপাটের ঘটনায় অন্যান্য পরিবারের সদস্যদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। লাভলী বেগম নামের এক গৃহকর্তী বলেন, দিনে দুপুরে এমন ঘটনা ঘটলে আমরা বসবাস করব কিভাবে? আমাদেরকে বুঝি আল্লাহ ছাড়া কেউ রক্ষা করার নেই। সরাইল থানার অফিসার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, শিক্ষক আবদুল ওহাব লিখিত অভিযোগ করেছেন। জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ির ঘটনা মৌখিকভাবে জানিয়েছেন। সকলেই বড় ভবন করেছেন কিন্তু সিসি ক্যামেরা ও দারোয়ান নেই। এই গুলো খুবই প্রয়োজন। আমরা বিষয়টি গুরূত্ব সহকারে দেখছি।