বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে আমন ধানকাটা শুরু হয়েছে। হেমন্তের সাত -সকালে রুপালী শিশির ভেজা সোনালী ধান কাটতে কৃষকরা দল বেধে মাঠে ব্যাস্ত হয়ে পড়েছেন। বাড়িতেও উঠানে কৃষাণীরা ধান মাড়াই, সিদ্ধ শুকানোতে ফুসরত পাঁচ্ছেন না। এখানে এবার ১২হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। এই জমি থেকে প্রায় ৪০ হাজার ৩২ মেট্রিক টন ধান পাওয়া যাবে। যার বর্তমান বাজার দর হিসেবে প্রায় দেড় শ কোটি কৃষকের ঘড়ে উঠার কথা আশা করেছেন কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা। ধানের ভাল ফলনে চাষিদের মন উৎফুল্ল হচ্ছে, তেমনী বুকে স্বপ্ন- আশা ধানের শীষে দোল খাচ্ছে।
স্হানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন, সারিয়াকান্দি উপজেলায় বিস্তৃীর্ন এলাকা জুড়ে যমুনা ও বাঙ্গালী নদী রয়েছে। এ নদীর দু'টির চরা ভুমিতে হরেক রকমের ফসলাদী হয়ে থাকলেও, বিল এলাকার বেশির ভাগ জমিতে আমন ধানের চাষ করে থাকেন। বি,আর-১১, রণজিত,গুটি স্বর্না,বিআর-৪৯,বিআর-৮৯ ও কালোজিরা বা সাল্লে ধানের চাষ করেছেন ব্যাপক হারে।প্রথম দিকে পোকা - মাকড়ের ঝুট - ঝামেলা থাকলেও অল্প দিনের মধ্যে তা সেরে গিয়ে ফলন হয়েছে ভালো।
স্হানীয় কৃষকরা এও বলছেন,সারিয়াকান্দি উপজেলার ১২ ইউনিয়নের যে যেখানে আমনের আবাদ করেছেন, ফলন হয়েছে অনেক ভালো।বিশেষ করে বিআর-১১,বিআর-৪৯,রনজিত,সুগন্ধি বা সাল্লে ধানের শীষে ঠাসা ধান দেখে সব চাষীর মনটা জুড়ছে।
কৃষকরা আরও বলেছেন, নতুন ধানের ভাত ছাড়াও বিভিন্ন রকমের পিঠা, মুঠো,পায়েশ -পুলি খাওয়ার উৎসব চলবে এ শীত মৌসুম জুড়ে। ইতোমধ্যে অনেক চাষী ঘড়ে পিঠা, পায়েস,পুলি ও নতুন চালের ভাত খাওয়ার জন্য মেয়ে জামাই, নাতি,নাতনীদের নিমন্ত্রণ দেওয়ার কাজ চলছে। তারাও সাদরে গ্রহনও করছেন সেই নিমন্ত্রও।
ফুলবাড়ি ইউনিয়নের ফুলবাড়ী গ্রামের আমন চাষী সাজু মেম্বার বলেন, প্রথমে ধান গাছে পোকামাকড় দেখে হতাশ ই হয়েছিলাম।অল্পদিনে অনুকূল আবহাওয়ার কারণে রোগ বালাই সেরে গিয়েছে। নতুন ধানে চালের বাড়িতে চলবে পিঠা-পুলি খাওয়ার ধুম।বাজারে ধানের দামও ভালো থাকায় ধান বিক্রির টাকা দিয়ে সংসারের খরচও করছি ভালো ভাবে।
কামালপুর ইউনিয়নের বিবিরপাড়া গ্রামের জিন্নাহ আলী বলেন, এবারতো আমনধান ভালো হয়েছে,দামও ভাল। বেচা ধানের টাকায় অনেকেই সংসারের দেনাদফা পরিশোধ সহ স্বাচ্ছন্দ্য সংসারের খরচ চালাবেন।আমি ৮ বিঘা জমিতে ধান করে ভালো ফলন পেয়েছি এবার।।
উপজেলা কৃষি অফিসার, আবদুল হালিম বলেন, আমন ধান চাষে প্রথম দিকে খরা ও পরে পোকামাকড় দেখা দিলেও পরবর্তীতে আমাদের বিশেষ চেষ্টায় তা সেরে গেছে। ফলনতো এমনি এমনি ভালো হয়নি, অনুকূল আবহাওয়া ও কৃষকদের হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রমতো ছিলোই আমাদের মাঠ পর্যায়ে কর্মীদের দিনে রাতে চেষ্টার কারণে ফলন এবার ভালো হয়েছে। বাজারে দামও ভালো পেয়ে চাষীদের মনে আশার আলো জুগিয়েছে।