নীলফামারীতে বেগুন আবাদে আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের। কম খরচ এবং লাভ বেশি হওয়ায় চাষিরা বেগুন আবাদে ঝুকছে। বছরে বেগুন চাষ দুইবার করা যায়। শীতকালীন বেগুন চাষ করা হয় শ্রাবন মাসের মাঝামাঝি সময় হতে আশ্বিন মাস পর্যন্ত। অপরপাশে বর্ষাকালীন চাষ করা হয় চৈত্র পুরো মাস ধরে। ওই সময় বীজ বপন এবং চারা রোপন কাজ চলে। ডিমলা কৃষি অফিস জানায়,বীজতলা তৈরী করতে হয় বালি, কমপোস্ট ও মাটি সমপরিমাণ মিশিয়ে। সবল চারা পেতে প্রথমে বীজতলায় বীজ বুনতে হয়। চারা গজানোর ৮ থেকে ১০ দিনের মধ্যে তা তুলে জমিতে রোপন করতে হয়। সৈয়দপুরের কৃষক আনিছুর রহমান জানান, দোআঁশ, বেলে দোআঁশ এবং পলি মাটিতে বেগুন চাষ ভাল হয়। তবে পানি জমে থাকে না, এমন জমিতে বেগুন চাষ করতে হবে। পানি জমে থাকা জমিতে বেগুন চাষ করলে তা পঁচে গিয়ে নষ্ট হয়ে যায়। নীলফামারীর সৈয়দপুরে বেশি বেগুনের আবাদ হয়ে থাকে বোতলাগাড়ী ইউনিয়নে। এ ইউনিয়নে একটি আদর্শ সবজী গ্রাম রয়েছে। এ গ্রামে সকল প্রকার সবজী চাষ হয়ে থাকে। এ গ্রামের বেগুন চাষি মান্নান জানান, তিনি প্রতি বছর বেগুন আবাদ করেন। এ বছরও তিনি ২ বিঘা জমিতে বেগুন আবাদ করেছেন। এতে তার ব্যয় হয়েছে মোট ৭ হাজার টাকা। তবে তিনি ব্যয় বাদে আয় করেন ৪০ হাজার টাকা। তিনি বলেন গত কয়েক বছরের মধ্যে এ বছর বেগুনের দাম ছিল অনেক বেশি। তাই লাভও হয়েছে বেশি। ওই গ্রামের আরেক চাষি মোতালেব জানান, তিনিও এ বছর ৩০ শতক জমিতে বেগুন আবাদ করেছেন। খরচ বাদে তিনি লাভ করেছেন ২০ হাজার টাকা। ডিমলা উপজেলার পাঙ্গা এলাকার কৃষক বছির উদ্দিন। তিনি ১০ শতক জমিতে বেগুন আবাদ করেছেন। ফলনো বেশ ভাল হয়েছে। খরচ বাদে লাভ হবে তার ১৫ হাজার টাকা। এমন আশা করেন। বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের লক্ষণপুর গ্রাম। এ গ্রামের কৃষক মমিনুল ইসলাম জানান, তিনি এ বছর ৩০ শতক জমিতে বেগুন চাষ করেছেন। তার জমিতে বেগুনের ফলন হয়েছে বেশ ভাল। খরচ বাদে তিনিও ২০ হাজার টাকা আয় করবেন বলে জানান। নীলফামারী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. এস এম আবু বকর সাইফুল ইসলাম জানান, এ বছর জেলায় বেগুনের আবাদ বেড়েছে। দাম বেশী থাকায় বেগুন চাষে ঝুকছে কৃষকরা। তবে কত হেক্টর জমিতে বেগুন চাষ হয়েছে তা আলাদা হিসান নেই। ডিমলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সেকেন্দার আলি জানান, ডিমলায়ও বেগুন আবাদ বেড়েছে। তিনি বলেন বর্তমানে দেশে বিভিন্ন জাতের বেগুন চাষ হয়ে থাকে। তার মধ্যে হাইব্রিড, দেশী,ডোপা। জমির পাশাপাশি এখন টবেও বেগুন চাষ করা যায়। অনেকে তা করছেও। সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীমান ভূষণ জানান, এ বছর সৈয়দপুর উপজেলায় বেগুন আবাদ হয়েছে ১৩ হেক্টর জমিতে।