দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে মাদারীপুর-৩ আসনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আবদুস সোবহান গোলাপের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগম সিদ্দিকী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ তৌফিকুজ্জামান, অভিযোগকারী দু’জনেও আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন। কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য তাহমিনা বেগম এবং কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কালকিনি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ তৌফিকুজ্জামান বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার দাশের কাছে এই অভিযোগপত্র দেন। উত্তম কুমার দাশ শুক্রবার নিজেই বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “আমি ইতোমধ্যে সংসদ সদস্য আবদুস সোবাহান গোলাপের বিরুদ্ধে আরেক সংসদ সদস্য অধ্যাপিকা তাহমিনা বেগমেরসহ ২টি অভিযোগপত্র পেয়েছি। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অভিযোগপত্রটি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে। “নির্বাচনী পরিবেশ যাতে সুষ্ঠু ও সুন্দর থাকে সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।” বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে ঢাক ঢোল বাঁশি বাজিয়ে ও দুই শতাধিক প্রাইভেটকার মাইক্রোবাস ও মটরসাইকেল গাড়ি বহর নিয়ে কয়েক হাজার নেতাকর্মী নিয়ে উপজেলা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার দাসের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন। এ সময় দলীয় সমর্থকেরা তার পক্ষে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন। প্রার্থীর সঙ্গে পাঁচজনের বেশি নেতাকর্মীর না যাওয়ার নির্দেশনা সত্ত্বেও মিছিল নিয়ে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবদুস সোবহান গোলাপ রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এ সময় উপজেলার প্রধান সড়কে দুই ঘন্টার বেশি সময় যানজট সৃষ্টি হয়। উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়ে। স্থানীয়দের দাবী এটা দৃশ্যত এটা বড় ধরনের আচরণবিধি লঙ্ঘন। নির্বাচন কমিশনের জাতীয় সংসদ নির্বাচণ আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় কোনো প্রকার মিছিল কিংবা শোডাউন করা যাবে না। সেখানে নেতাকর্মীরা ঢাল ঢোল বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে হাজার হাজার নেতাকর্মী নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা রুমে প্রবেশ করেন। এ নিয়ে আলোচনা সমালোচনার ঝড় সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে তিনি কয়েক হাজার নেতাকর্মী নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন। যেখানে রিটানিং কর্মকর্তার কাছে পাঁচ জনের বেশি লোক প্রবেশ করা যায় না সেখানে তিনি অনেক লোক নিয়ে রিটানিং কর্মকর্তার কাছে প্রবেশ করেছে এবং নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে হাজার হাজার নেতাকর্মীরা তার জন্য স্লোগান দিয়েছেন। এ সময় উপজেলা সদরের প্রধান সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়। এ প্রসঙ্গে তাহমিনা বেগম সিদ্দিকী বলেন, “ড. আবদুস সোবাহান গোলাপের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ ইতোমধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে দাখিল করেছি। আশা করছি, নির্বাচন কমিশন বিষয়টি আমলে নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।” আচরণবিধি লঙ্ঘনের ব্যপারে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আব্দুস সোবাহান গোলাপের মন্তব্য নেওয়ার জন্য তার গ্রামের বাড়ি কালকিনি উপজেলার রমজানপুর ইউনিয়নে গেলেও তিনি আচরণবিধি নিয়ে কোন ধরনের মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশীদ খান বলেন, ‘আচরণবিধি দেখার জন্য আমাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা আছে। তাঁদের সামনে বিধি লঙ্ঘন কিছু ঘটলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'