মায়ের আর্তনাদ ও স্বজনদের আহাজারি, কখন আসবে রুবেলের লাশ। অপেক্ষা যেন শেষ হচ্ছে না আর। সেই অপেক্ষা শেষ হলো প্রায় ৫ মাস পর। সৌদি প্রবাসী রুবেল হোসেনের লাশ এলো তার নিজ জন্মভূমিতে। আজ শনিবার দুপুর ১টার দিকে লাশবাহী অ্যাম্বুল্যান্স পৌঁছায় যশোরের শার্শা উপজেলার কায়বা ইউনিয়নের বাগুড়ী গ্রামের বাড়িতে। লাশ পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় শোকের মাতম। স্বজনদের আহাজারিতে বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। এদিন জোহর বাদ জানাজা শেষে বাগআঁচড়া কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। নিহত রুবেল হোসেন যশোর জেলার শার্শা উপজেলার কায়বা ইউনিয়নের বাগুড়ী গ্রামের ফারুক হোসেনের ছেলে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পরিবারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে প্রায় দেড় বছর আগে রুবেল হোসেন সৌদি আরবে যান। সেখানে একটি মাদ্রাসায় পরিচ্ছন্ন কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। কিন্তু কোরবানির ঈদের কারণে মাদ্রাসাটি দুই মাস ছুটি হয়ে যায়। ছুটির কারণে মাদ্রাসায় কাজ না থাকায় ৩ জুলাই রুবেল হোসেন তার এক পরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে অন্য জায়গায় সেপটিক ট্যাংক পরিষ্কারের কাজে যান। ওই সেপটিক ট্যাংকে পড়ে রুবেল হোসেন অচেতন হয়ে যান। পরে তার সহযোগীরা উদ্ধার করে সৌদি আরবের একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে রুবেল হোসেনের লাশ বাংলাদেশ প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ২৬ জুলাই দুপুরে তার নিজ গ্রামে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু কফিন খুলে দেখা যায় কফিনের মধ্যে যে লাশ আছে সেটা রুবেলের লাশ নয়। পারিবারিক আপত্তির মুখে জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে দাফনও করা হয়। পরে জানা যায়, নিহত প্রবাসী রুবেল হোসেনের ঠিকানায় যে লাশটি পাঠানো হয়েছিল, সেটা কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর থানার জবডল গ্রামের মৃত তৈয়ব আলীর ছেলে মোজাম্মেল হকের। তার স্বজনেরা এসে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে লাশ কবরস্থান থেকে উত্তোলন করে তাদের বাড়িতে নিয়ে যান। এরপর থেকে শুরু হয় রুবেল হোসেনের লাশ আসার অপেক্ষা। শনিবার সেই লাশ আসার পর রুবেলের মাসহ স্বজনদের অপেক্ষার পালা শেষ হলো। কায়বা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নানা জটিলতার মধ্য দিয়ে রুবেলের লাশ তার পরিবার হাতে পেয়েছে। জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।