টানা দরপতন থেকে বেরিয়ে দেশের শেয়ারবাজারে এখন টানা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বেড়েছে। এতে বেড়েছে সবকটি মূল্যসূচক। একই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের গতিও। এর মাধ্যমে টানা চার কর্যদিবস মূল্যসূচক বাড়লো। এর আগে গত সপ্তাহের প্রথম তিন কর্যদিবস শেয়ারবাজারে টানা দরপতন হয়। তবে সপ্তাহের শেষ দুই কার্যদিবসে সূচক কিছুটা বাড়ে। এরপরও সপ্তাহ শেষে শেয়ারবাজারে দাম কমার তালিকায় স্থান করে নেয় বেশি সংখ্যাক প্রতিষ্ঠান। ফলে সপ্তাহের ব্যবধানে মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি বাজার মূলধনও কমে। আর চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার মূল্যসূচক কিছুটা বাড়লেও লেনদেনের গতি কমে যায়। এ পরিস্থিতিতে সোমবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ২ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের শুরুতে দেখা দেওয়া এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লেনদেনের পুরো সময়জুড়ে অব্যাহত থাকে। এমনকি লেনদেনের শেষ দিকে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বেড়ে যায়। এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে ১০৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৯টির। আর ১৬৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম বাড়ার তালিকা বড় করতে মুখ্য ভূমিকা রাখে বিমা খাত। ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৪৭টি বিমা কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। বিপরীতে একটি বিমা কোম্পানিরও শেয়ার দাম কমেনি। বেশিরভাগ বিমা কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার দিনে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১২ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২৪৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৫৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৫ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১১৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৯১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৩৪৯ কোটি ১ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ১৪২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৭ কোটি ২৪ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালসের ২৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৮ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে জেনেক্স ইনফোসিস। এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- আফতাব অটোমোবাইল, ইয়াকিন পলিমার, প্যাসেফিক ডেনিমস, এমারেল্ড অয়েল, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, ফু-ওয়াং ফুড এবং মুন্নু সিরামিক। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৩০ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২১৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬১টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৯টির এবং ১২৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৭ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১১ কোটি ৩০ লাখ টাকা।