জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে রেলের জমি ব্যক্তি নামে নামজরি করার অপতৎপরতায় মেতেছে একটি চক্র। এ চক্রের প্রধান জাহিদ হোসাইন ভুয়া কাগজপত্র উপস্থাপন করে জমি খারিজের চেষ্টা চালিয়ে বলে অভিযোগ উঠেছে।
একটি সূত্র জানায়, সরিষাবাড়ী রেলের আয়ত্বে থাকা বিআরএস/হাল দাগ ৩৯৬ এর জমি বেহাত করতে নানা অপতৎপরতা চলে আসছে। ওই জমির সাবেক দাগ ছিল ৩৬১ ও ৩৬৪। এই জমিতে একটি পুকুর ছিল। ১৯৯৫ সালের আগে সাবেক পৌর কমিশনার তছের উদ্দিন সরকার এ পুকুরটি রেলে কাছ থেকে লিজ নেন। দীর্ঘ সময় এ জমি তার নামেই লিজ দিয়ে রাখে রেল কর্তৃপক্ষ। এ সুযোগে পুকুরের ওই জমি নিজ নামে করিয়ে নিতে নানা পায়তারা শুরু করেন তিনি। পরে রেলের ওই জমি ফিরে পেতে ১৯৯৫ সালের ১৪ জুন জামালপুর সাব জর্জ ১ম আদালতে রেলওেয়ের কলিকাতার গেজেট ও এলএ ৭/১৯৩৯-৪০ নং কেস দায়ের করে রেল কর্তৃপক্ষ।
তছের উদ্দিন সরকার এ মামলা বাতিলের আবেদন জানিয়ে ১৯৯৭ সালে জামালপুর সাব জর্জ ১ম আদালতে মোকদ্দমা দায়ের করেন। আদালত এ মামলায় তছের উদ্দিনের পক্ষে রায় দেয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে রেল কর্তৃপক্ষ ১৯৯৭ সালে অতিরিক্ত জেলা জর্জ আদালতে ছানী রিভিউ আবেদন করে। আদালত এ মামলায় তছের উদ্দিন সরকারের বিরুদ্ধে রায় দেয়। একই বছরে তছের উদ্দিন সরকার এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে ৩৭৪/১৯৯৭ নং মোকদ্দমা সিভিল রিভিশন আবেদন করেন। হাইকোর্টের বিচারপতি রেলের পক্ষে রায় দেন।
তছের উদ্দিন সরকার ১৯৯৮ সালে ফের এ রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ আবেদন করেন। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিসহ অন্য বিচারপতিরা তছের উদ্দিন সরকারের এ রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেন। তবুও রেলের ওই জমি ভুয়া কাগজপত্রের বলে জাহিদ হোসাইন নামে এক ব্যক্তির নিকট বিক্রি করে দেন তছের উদ্দিন সরকারের ছেলে সুলতানসহ তার ওয়ারিশগন সম্প্রতি ওই পুকুরটি মাটি ফেলে ভরাট করা হয়েছে। চলছে প্লট আকারে জমি বিক্রির চেষ্টা । জমি বিক্রি করতে হলে জমিদাতার নামে জমির খারিজ প্রয়োজন পড়ে। রেলের ওই জমি জাহিদ হাসানের নামে খারিজ করতে গিয়ে ঘটে বিপত্তি। সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিস ওই জমি রেলের বলে জানিয়ে দেয়।
এ বিষয়ে কামরাবাদ ভূমি অফিসের নায়েব গুলজার হোসেন বলেন, তছের উদ্দিন যে পুকুরটি মাটি ভরাট করে বিক্রি করতে চাচ্ছে, ওই পুকুরসহ আশপাশের জায়গাজমি সব রেলওয়ের। জাহিদ হাসান নামে বর্তমান দখলদার ভুয়া কাগজ নিয়ে নামজারি খাজনা খারিস করতে এসেছিল। রেলওয়ের জমির হাইকোর্টের নির্দেশ মোতাবেক তার কাগজ ভুয়া বিদায় খাজনা খারিজ তদন্ত করে বন্ধ করে দিয়েছি। এ ব্যাপারে রেল কর্তৃপক্ষ মো: আলম মিয়া বলেন, রেলওয়ের জমি এলাকার প্রভাবশালীরা বাধাঁ দেয়া সত্তেও জোর করে পুকুর ভরাট করেছে। এখন তারা প্লট বানিয়ে বিক্রির চেষ্টা চালাচ্ছে। রেলওয়ের জমি বিক্রি বন্ধের জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট প্রতিবেদনের আবেদন করবো।
জমির দখলদার জাহিদ হোসাইন বলেন, তছের উদ্দিনের নিকট থেকে কাগজপত্র দেখে জমি ক্রয় করেছি। পুকুর ভরাট করে প্লট আকারে বিক্রির প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ১০১ শতক জমি থেকে ৮৩ শতক জমি কিনেছি ১১৬০০০০ এক কোটি ষোল লাখ টাকা। জমি ভেজাল হলে টাকা ফেরত নিয়ে চলে যাবো বলেও জানান তিনি। সরিষাবাড়ী সহকারী (ভূমি) কমিশনার সাদ্দাম হোসেন বলেন, নায়েব সাহেব সরজমিনে গিয়ে প্রতিবেদন দিয়েছেন, পুকুর ভরাট করে জমি বিক্রি হ্চ্ছে। সেই জমি রেলওয়ে জমি। বিষয়টি তদন্ত করে কাগজ পত্র দেখে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।