নীলফামারীর সৈয়দপুরে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে আওয়ামী লীগের মধ্যে চলে আসছে গ্রুপিং। এখানে আওয়ামী লীগ কয়েক ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। কোন সভা সমাবেশ হলে সেখানে এক নেতা অন্য নেতার মুখ পর্যন্ত দেখতে চান না। কেউ আবার মুখ ফিরিয়ে বসে থাকেন অন্যদিকে। শুধু আওয়ামী লীগে নয়। এখানে দ্বন্দ্ব রয়েছে যুবলীগ,ছাত্রলীগ,কৃষকলীগেও। কেন্দ্রীয় নেতারা এখানের দ্বন্দ্বের কথা জানলেও তারা সমাধানে ব্যর্থ। তাই সৈয়দপুরে যে যার মত করে দল করে যাচ্ছে। বর্তমানে দলে অনেক ত্যাগী নেতা কর্মী নেই। তারা দলকে ভালবেসে নিরব ভুমিকা পালন করছে। আবার অনেকে অন্য দল থেকে এ দলে এসে সহজেই পেয়েছে পদ পদবী। ওই দ্বন্দ্বের নিরসন না হতেই সামনে এল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ওই নির্বাচনে সৈয়দপুর থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন সৈয়দপুর সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সাখাওয়াত হোসেন খোকন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোখছেদুল মোমিন, সহসভাপতি ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম রাশেদুজ্জামান রাশেদ, সাধারণ সম্পাদক মহসিনুল হক মহসিনসহ বেশ কয়েকজন। এদিকে সংসদীয় আসনের কিশোরগঞ্জ থেকে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা জাকির হোসেন বাবুল। শেষ মেষ মনোনয়ন দেয়া হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা জাকির হোসেন বাবুলকে। দলীয় প্রতীক নৌকা দেয়া হয় তাকে। এ ঘোষণার পর সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোখছেদুল মোমিন ও আওয়ামী লীগের অন্যতম নেতা অধ্যক্ষ সাখাওয়াত হোসেন খোকন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মনোনয়ন পত্র জমা করেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা কর্তৃক যাচাই বাছাইয়ে তারা উভয়ে বৈধ প্রার্থী। এদিকে নৌকার প্রার্থীকে পাশ কেটে সৈয়দপুরে আওয়ামী লীগের অনেক নেতা কর্মী বিদ্রোহী প্রার্থী মোখছেদুল মোমিনের হয়ে কাজ শুরু করেন। এতে দলীয় প্রতীক নৌকার মাঝি জাকির হোসেন বাবুলসহ দলের বেশীর ভাগ নেতা কর্মীরা মনোক্ষুন্ন। গত ৫ ডিসেম্বর সৈয়দপুর পৌর কমিউনিটি সেন্টারে নৌকার সমর্থনে রাতে এক কর্মীসভার আয়োজন করা হয়। ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মহসিনুল হক মহসিন। সেখানে কোন কোন নেতাকে ডাকা হয়নি। ওই রেশ ধরে সেখানে আওয়ামী লীগের পৌর কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক ও সৈয়দপুর পৌর দুই নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি হিটলার চৌধুরী ভলুর সাথে দ্বন্দ্ব বাঁধে। এ পর্যায় মোজাম্মেল হক সভা স্থান ত্যাগ করে। কিন্তু হিটলার চৌধুরী ভলুর সাথে লেগে যায় ঝগড়া, পরে হাতাহাতি। দলীয় লোকের মধ্যে কোন্দলের বিষয়টি নৌকার মাঝিকে অবাক করেছে। তিনি মনোক্ষুন্ন হয়ে সভা শেষ করে চলে যান। তিনি বলেন এখানে নৌকার বিপক্ষে কাজ করছে অনেকেই। বিষয়টি দলের হাইকমান্ডকে জানাবেন এমন কথা বলেন। তিনি বলেন সব মিলিয়ে সৈয়দপুরে দলীয় কোন্দল চরমে।