মাঠের ভেতরে ও বাইরে কঠিন সময় পার করা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ম্যাচের প্রায় পুরোটা সময় আক্রমণে আধিপত্য দেখাল। শুরুতে ব্রুনো ফের্নান্দেস পেনাল্টি মিস করলেও জোড়া গোলের আলো ছড়ালেন স্কট ম্যাকটমিনে। চেলসিকে হারিয়ে জয়ের পথে ফিরল এরিক টেন হাগের দল। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে বুধবার রাতে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচটি ২-১ গোলে জিতেছে ইউনাইটেড। ম্যাকটমিনে স্বাগতিকদের এগিয়ে নেওয়ার পর সমতা টানেন কোল পালমার। পরে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন ম্যাকটমিনে। ঘরের মাঠে ইউনাইটেড আক্রমণে কতটা ঝড় তুলেছিল, তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে পরিসংখ্যানে। গোলের জন্য তারা শট নেয় মোট ২৮টি, যার ৯টি ছিল লক্ষ্যে। বেশিরভাগ সময় দ্বিতীয় সেরা দল হয়ে থাকা চেলসির ১৩ শটের ৩টি লক্ষ্যে ছিল। লিগে চেলসির বিপক্ষে এই নিয়ে টানা ১২ ম্যাচ অপরাজিত রইল ইউনাইটেড (৫ জয়, ৭ ড্র)। সবশেষ তারা হেরেছিল ২০১৭ সালের নভেম্বরে, স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ২০১৩ সালের মে মাসের পর লিগ ম্যাচে আর জিততে পারেনি চেলসি। প্রথম ১০ মিনিটে একচেটিয়া দাপট দেখায় ইউনাইটেড। চতুর্থ মিনিটে প্রথম ভালো সুযোগ পায় তারা। বাঁ দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে স্ট্রাইকার গাসমুস হয়লুনের শট ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক রবের্ত সানচেস। সপ্তম মিনিটে চেলসির এনসো ফের্নান্দেসের চ্যালেঞ্জে বক্সে আন্তোনি পড়ে গেলে ভিএআর মনিটরে দেখে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। ফের্নান্দেসের দুর্বল স্পট কিক ঝাঁপিয়ে ঠেকান সানচেস। দ্বাদশ মিনিটে প্রথমবারের মতো আক্রমণে যায় চেলসি। বাঁ দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে দুরূহ কোণ থেকে মিখাইলো মুদ্রিকের শট পোস্টের বাইরের দিকে লাগে। প্রথম ১৬ মিনিটে চারটি সেভ করা সানচেস তিন মিনিট পর আর জাল অক্ষত রাখতে পারেননি। বক্সের ভেতর থেকে হ্যারি ম্যাগুইয়ারের শট চেলসি ডিফেন্ডার মার্ক কুকুরেইয়া ঠেকিয়ে দিলেও পেনাল্টি স্পটের কাছ থেকে বাঁ পায়ের শটে গোলটি করেন ম্যাকটমিনে। বিবর্ণ সিটিকে চারে নামিয়ে তিনে উঠল অ্যাস্টন ভিলা ৩২তম মিনিটে ডাবল সেভে ব্যবধান বাড়তে দেননি সানচেস। ফের্নান্দেসের ক্রসে বক্সে ম্যাকটমিনের হেড ফেরানোর পর স্কটিশ মিডফিল্ডারের শটও ব্যর্থ করে দেন স্প্যানিশ গোলরক্ষক। পরের পাঁচ মিনিটে সমতা টানার দুটি সুবর্ণ সুযোগ হারায় চেলসি। রাহিম স্টার্লিংয়ের পাস বক্সে ফাঁকায় পেয়েও গোল করতে পারেননি নিকোলাস জ্যাকসন। এগিয়ে এসে তাকে রুখে দেন গোলরক্ষক আন্দ্রে ওনানা। আর মুদ্রিক বল মারেন বাইরে। প্রথমার্ধের নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোল পেয়ে যায় চেলসি। মুদ্রিকের পাস ধরে বক্সে ঢুকে পড়েন পালমার। তার সামনে প্রতিপক্ষের দুই খেলোয়াড়। জায়গা বানিয়ে নিচু শটে চমৎকার ফিনিশিংয়ে দলকে সমতায় ফেরান ২১ বছর বয়সী মিডফিল্ডার। দ্বিতীয়ার্ধেও আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ চলতে থাকে। ৬০তম মিনিটে লুক শর শট বক্সে চেলসির ডিফেন্ডার লেভি কলউইলের হাতে লাগলে পেনাল্টির জোরাল আবেদন করে ইউনাইটেডের খেলোয়াড়রা। তবে রেফারির সাড়া মেলেনি। ৬৯তম মিনিটে দলকে আবার এগিয়ে নেন ম্যাকটমিনে। আলেহান্দ্রো গারনাচোর ক্রসে বক্সে হেডে বল জালে জড়ান তিনি। বাকি সময়ে ইউনাইটেড যেমন ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পেয়েছে একাধিক, চেলসিও ম্যাচে ফেরার কয়েকটি সুযোগ পেয়েছে, কিন্তু কেউই কাজে লাগাতে পারেনি সেগুলো। স্কোরলাইনেও তাই আর পরিবর্তন আসেনি। ১৫ ম্যাচে ৯ জয়ে ২৭ পয়েন্ট নিয়ে এক ধাপ এগিয়ে ছয় নম্বরে উঠেছে ইউনাইটেড। সমান ম্যাচে ষষ্ঠ হারের স্বাদ পাওয়া চেলসি ১৯ পয়েন্ট নিয়ে দশে আছে। আরেক ম্যাচে শেফিল্ড ইউনাইটেডকে ২-০ গোলে হারিয়ে ৩৪ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে লিভারপুল। ম্যানচেস্টার সিটিকে ১-০ গোলে হারানো অ্যাস্টন ভিলা ৩২ পয়েন্ট নিয়ে তিনে আছে। চার নম্বরে শিরোপাধারী সিটির পয়েন্ট ৩০। ৩৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে আর্সেনাল।