নীলফামারীর সৈয়দপুরে যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করায় তিন পরিবার এক মাস ধরে অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। বাড়ী থেকে বের হতে না পারায় ওই পরিবার তিনটির ১২ জন সদস্য পড়েছে চরম বিপাকে। ১১ ডিসেম্বর সৈয়দপুর উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের লক্ষণপুর চড়কপাড়ায় গিয়ে দেখা যায় ওই করুন দৃশ্য। পরিবারের কর্তা মোঃ মতিউল সরকার কেঁদে কেঁদে বলেন তার পরিবারের করুন অবস্থার কথা। তিনি বলেন প্রায় ১৬ বছর পুর্বে ১৬ শতক জমি ক্রয় করে তার ওপর বসতঘর নির্মাণ করে শুরু করেন বসবাস। বর্তমানে ওই বসতবাড়ীতে তিন পরিবার মিলে রয়েছেন। তিন পরিবারের সদস্য সংখ্যা রয়েছে ১২ জন। তারা সকলেই দিনমজুরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। সম্প্রতি পরিবার কর্তার এক ছেলে ভ্যানে করে চটপটি বিক্রি করে। বসতঘর নির্মাণের সময় প্রতিবেশী হায়দায় আলি,বুদি ও মোনায়েমের জায়গার ওপর দিয়ে যাতায়াত করতেন মতিউল সরকার। যাতায়াত চলাকালীন সময়ে প্রতিবেশী হায়দার আলি রাস্তার জন্য তার জায়গা বিক্রির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু ওই জায়গায় অন্য ওয়ারিস থাকায় তা বিক্রি হয়নি। এদিকে পরিবার তিনটির যাতায়াতের রাস্তা না থাকায় আরেক প্রতিবেশী মোনায়েম তার জমির ওপর দিয়ে যাতায়াতের সুযোগ করে দেন। এদিকে বুদি নামে আর এক প্রতিবেশীও তার জমির ওপর দিয়ে বের হওয়ার জন্য রাস্তা করে দেন। ওই সময় প্রতিবেশীরা সকলেই তাদের জমির ওপর দিয়ে রাস্তা দিলেও বর্তমানে তারা সকলেই বিরোধীতা করছেন পরিবারটির সাথে। যে প্রতিবেশীরা যাতায়াতের রাস্তা দিয়েছিল তারা আজ সেই রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন। কেউ কাটা বিছিয়ে,কেউ পাকা করে আবার কেউ বাঁশের বেড়া দিয়ে পরিবারটির তিন দিকের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে ওই তিন পরিবার বাড়ী থেকে বের হতে পারছে না। গবাদি পশুসহ মানুষজন হয়ে পড়েছে অবরুদ্ধ। বাড়ীর কর্তা জানান, বসতঘর নির্মাণের সময় প্রতিবেশীরা আমাকে যাতায়াতের রাস্তা দেয়ায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তাছাড়া আমি তাদের জমির মুল্যও দিতে চেয়েছিলাম। তাদের প্রতিশ্রুতির কারণ আমি সেখানে বসতঘর নির্মাণ করে বসবাস শুরু করি। আজ ১৫ বছর পর কি এমন হল যে তারা সকলেই রাস্তা বন্ধ করে দিল। বাড়ী থেকে বের হওয়ার রাস্তা বন্ধ থাকায় আমি সকলের কাছে গিয়েছি। অনুরোধ করেছি তাদের। আমাকে বাড়ী থেকে বের হওয়ার জন্য একটু জমি দেন বিনিময়ে ওই জমির বর্তমান বাজার মুল্য দেব। কিন্তু আমার অনুরোধ কেউ রাখেনি। কোন উপায় না পেয়ে আমি বিষয়টি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ডাঃ শাহাজাদা সরকারকে জানাই। তিনিও এ ব্যাপারে কোন উদ্যোগ নেননি। তিন পরিবারের ১২ জন সদস্য এবং গবাদী পশু নিয়ে বাড়ী থেকে বের হতে পারছি না। বাড়ী থেকে বের হতে না পরায় বন্ধ হয়ে গেছে আমার আয় রোজগার পথ। অবরুদ্ধ জীবন থেকে রক্ষা পেতে তিনি নীলফামারী জেলা প্রশাসকের দৃষ্ঠি কামনা করেন। বাড়ীর রাস্তা বন্ধের ব্যাপারে ওই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ ডাঃ শাহাজাদা সরকার বলেন, কেউ যদি জমি না দেয় তাহলে আমার কি করার আছে। বাড়ী করার সময় রাস্তা ঠিক করা উচিৎ ছিল। এখন কেউ তাকে রাস্তার জন্য জমি দিতে রাজি না।