ভারতের ম্যাচ মানে ক্রিকেট দুনিয়ার যে কোনো প্রান্তেই তুমুল আগ্রহ। সেখানে ডারবানে তো প্রচুর প্রবাসী ভারতীয়র বসবাস। দক্ষিণ আফ্রিকা-ভারতের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচকে ঘিরেও সেখানে উত্তজনা ছিল তুঙ্গে। বিক্রি হয়ে গিয়েছিল সব টিকেট। কিন্তু বৃষ্টির কারণে ম্যাচই গেছে ভেস্তে। এখানেই সুনিল গাভাস্কার আঙুল তুললেন দক্ষিণ আফ্রিকার বোর্ড তথা সব দেশের ক্রিকেট বোর্ডের দিকে। তার প্রশ্ন, গোটা মাঠ কেন ঢেকে রাখা হয় না! ডারবানে রোববার টানা বৃষ্টিতে এই ম্যাচের টসই হতে পারেনি। খেলা শুরুর নির্ধারিত সময়ের ১ ঘণ্টা ৫৪ মিনিট পর পরিত্যক্ত করে দেওয়া হয় ম্যাচ। দর্শকদের জন্য এটা যেমন ছিল হতাশার, তেমনি কিংসমিড মাঠ কর্তৃপক্ষের জন্যও ছিল এটি বড় ধাক্কা। চলতি দক্ষিণ আফ্রিকার গ্রীষ্মে এই মাঠে এই একটি আন্তর্জাতিক ম্যাচই ছিল সূচিতে। তাছাড়া এই মাঠের দীর্ঘদিনের কিউরেটর উইলসন এনগোবেসের তৈরি করা উইকেটে শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ ছিল এটিই। এই মৌসুম শেষেই তিনি অবসরে যাচ্ছেন। তার বিদায়টাও সুখকর হলো না বৈরি প্রকৃতির কারণে। বিশ্বের যে কোনো দেশেই ভারতের সফর মানে সেই বোর্ডের আয় অন্য যে কোনো সিরিজ থেকে কয়েক গুণ বেশি। ভারতের এবারের সফর থেকে যেমন ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকার সম্ভাব্য হয় ১ বিলিয়ন র্যান্ডের বেশি (প্রায় ৫ কোটি ৩০ লাখ ডলার)। মূলত টিভি সত্ত্ব ও স্পন্সরশিপ থেকেই আসবে এই আয়। সেখানে একটি ম্যাচ না হওয়া মানে আয় অনেকটা কমে যাওয়া। ক্রিকেটীয় দিক থেকেও দুই দলের জন্যই ম্যাচ না হওয়াটা ভীষণ হতাশাজনক। আগামী বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা দুই দলেরই টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার সুযোগ ছিল স্রেফ ৬টি। সেখান থেকেও একটি ম্যাচ এভাবে বিফলে গেল। সব মিলিয়ে হতাশার সুর চারপাশে। গাভাস্কার শুধু হতাশই নন, বেজায় চটেছেনও তিনি। স্টার স্পোর্টসে আলোচনায় বোর্ডগুলোকে কাঠগড়ায় তুললেন সাবেক এই ভারতীয় অধিনায়ক। “মাঠ যদি ঢেকে রাখা না হয় এবং এরপর বৃষ্টি থামে, তখনও অন্তত ঘণ্টাখানেক সময় লেগে যায় খেলা শুরু হতে। হঠাৎ করে আবার বৃষ্টি শুরু হলে আর খেলাই হয় না। সবাই (ক্রিকেট বোর্ডগুলো) তো অনেক অর্থ আয় করে। এখানে কোনো ভুল নেই।” “সব ক্রিকেট বোর্ডেরই অনেক টাকা। তারা যদি এটা স্বীকার না করে, তাহলে মিথ্যা বলছে। হয়তো বিসিসিআইয়ের মতো টাকা তাদের নেই, সেটা ঠিক। তবে পুরো মাঠ ঢেকে রাখার জন্য কাভার কেনার টাকা নিশ্চয়ই সব বোর্ডের আছে!” এমনিতে অনেক মাঠের আউটফিল্ড ভালো ও পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা অত্যাধুনিক বলেই গোটা মাঠ ঢেকে রাখা হয় না। ভারতেও খুব কম ভেন্যুতেই গোটা মাঠ ঢেকে রাখা হয়। তবে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সের উদাহরণ টেনে গাভাস্কার বললেন, বৃষ্টির ক্ষেত্রে সব মাঠেই এই ব্যবস্থা রাখা উচিত। “সব বোর্ডের উচিত গোটা মাঠ ঢেকে রাখার ব্যবস্থা করা। এখানে অজুহাত চলে না। ইডেন গার্ডেন্সে একটি টেস্ট ম্যাচের কথা মনে পড়ে আমার। খেলা সময়মতো শুরু হতে পারেনি সেখানে। পরের ম্যাচে দেখা গেছে, ইডেন গার্ডেন্সে গোটা মাঠ ঢেকে রাখা হয়েছে। এই ধরনের উদ্যোগই নেওয়া উচিত। সৌরভ গাঙ্গুলি তখন দায়িত্বে ছিলেন এবং তিনি নিশ্চিত করেছেন, ইডেন গার্ডেন্সের দিকে কেউ যেন আঙুল তুলতে না পারে।”