হালকা শীতেই শেরপুর জেলার সর্বত্র বিশেষ করে গারো পাহাড়ের উপজেলা শহরগুলোর অস্থায়ী ভাবে লন্ডি দোকান নামে খ্যাত দোকানগুলোতে শীতের গরম পোশাক বিক্রি জমে উঠতে শুরু করেছে। বিত্তশালীদের অভিজাত বিপণী বিতানে পদচারণা দেখা গেলেও নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষেরা স্বল্প দামে শীতের পোশাক কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন অস্থায়ী পুরনো কাপড়ের দোকানগুলোতে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, অস্থায়ী পুরনো শীতের পোশাকের দোকানগুলোয় ক্রমেই ভির বাড়ছে। মধ্যবিত্ত ও নিম্ন শ্রেণীর আয়ের মানুষের শীতে গরম পোশাকের একমাত্র ভরসা পুরনো কাপড়ের দোকানগুলোই। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ঝিনাইগাতী পুরনো শীতের পোশাকের অস্থায়ী দোকানগুলো বসেছে। অস্থায়ী দোকানে বিক্রি হচ্ছে শীতের পোশাক। ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁক-ডাকে মুখরিত পুরো এলাকা। যেখানে নিম্ন আয়ের মানুষের পাশাপাশি মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষেরা এসেছেন স্বল্প দামে পছন্দের গরম কাপড় কিনতে। অস্থায়ী এসব দোকানে কোরিয়া, তাইওয়ান, জাপানসহ বিভিন্ন দেশের পুরনো বেল্লেজার, জ্যাকেট, সোয়েটার, ট্রাউজার, মাফলার, টুপি, হুডি, ফুলহাতা গেঞ্জি, কম্বলসহ পুরুষ, নারীসহ ছোট বাচ্চাদের শীতবস্ত্র বিক্রি হচ্ছে। শীত মৌসুমে প্রতিদিন দোকান প্রতি গড়ে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকার কাপড় বিক্রি হলেও এ বছর শীত দেরিতে আসায় বেচাকেনা কম হচ্ছে। শীত বাড়লে শীতের পোশাকের বেচাকেনা বাড়বে। জানা গেছে, প্রতি শীতের মৌসুমে অক্টোবর মাসের শেষ থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৪ মাস পুরনো শীতের পোশাক বেচা-কেনা থাকে। সকাল থেকে দোকাগুলো খোলা থাকলেও বিকালে থেকে রাত ৯/১০টা পর্যন্ত বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের কেনাকাটার ভিড় চোখে পড়ে। অস্থায়ী শীতের পোশাক বিক্রিতা মনোয়ার, নূরউদ্দিন বলেন, দীর্ঘ ৭/৮ বছর যাবৎ শীতে অস্থায়ীভাবে পোশাক বিক্রি করেন। নিম্নবিত্ত ও স্বল্প আয়ের মানুষের পাশাপাশি মধ্যবিত্তরাদের ভিড় দেখা যায়। এখানে কমদামি ৫০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে, মাঝারি ধরনের ৩০০ থেকে ৮০০ টাকা (বিদেশি জ্যাকেট ও সুয়েটার) পর্যন্ত বিক্রি হয়। কিছু দামি শীতের পোশাক ও কম্বল ৮০০/১ হাজার টাকায়ও বিক্রি হয়। বিক্রেতারা জানান, পুরনো শীতের পোশাক দেশের বাইরে থেকে আসে। গত বছরের চেয়ে এবার দ্বিগুণ দামে কেজি দরে কিনে আনতে হয় এসব পোশাকের বেল্ট। গত বছর ২মণ ওজনের যে বেল (পোশাকে বান্ডেল) ১২/১৫ হাজার টাকা ছিল। এবার ২০/২৫ হাজার টাকায় আনতে হয়েছে। এখনও তীব্র শীত পড়েনি। তাই বেচা-কেনাও কম হচ্ছে। প্রতিদিন ৪/৫হাজার টাকার বিক্রি হয়। শীত পড়লে বিক্রি বাড়বে। শীতের পোশাক ক্রেতা রুস্তম আলী বলেন, একটি মানসম্মত শীতের পোশাক কিনতে ১৫শ থেকে ২ হাজার টাকা লাগে। কিন্তু এখানে পুরনো শীত বস্ত্র হলেও স্বল্প দামে ভালো শীতের পোশাক কিনতে পারি। এখানে এক্সপার্ট কোয়ালিটির ভালো ভালো জ্যাকেটও রয়েছে। দামে পোষালে কিনে নিয়ে যাবো। শীতের পোশাক ক্রেতা ভ্যানচালক ছামেদ আলী বলেন, শীত পড়তে শুরু করেছে। নতুন শীতের পোশাক কেনার সামর্থ্য নেই। তাই মেয়ের জন্য ৩০০ টাকা দিয়ে নতুন কোয়ালিটির পোশাক কিনেছি। আমাদের মতো অতি দরিদ্রদের জন্য ভরসা পুরনো শীতের পোশাকের দোকানগুলো।