দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-৬ (কয়রা-পাইকগাছা) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. রশীদুজ্জামান ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করে আসনটি চতুর্থ বারের মতো নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায়। আর খুলনা জেলা আ.লীগের কোষাধাক্ষ স্বতন্ত প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার জিএম মাহবুবুল আলম চায় এ আসন তার দখলে নিতে। দেশের সর্বদক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী নির্বাচনী এলাকা পাইকগাছা ও কয়রা উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসনে খুলনা জেলার মধ্যে ভোটার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার পরে প্রচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে নির্বাচনী এলাকা। ক্ষমতাসীন আ.লীগ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনটি নিজেদের দখলে রাখতে চাইলেও আ.লীগ থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী চাইছে ভোটের রেজাল্ট পাল্টে দিয়ে আসনটি নিজের দখলে নিতে। এলাকার ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আ.লীগ প্রার্থী মো. রশীদুজ্জামানের সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থী জিএম মাহবুবুল আলমের মধ্যে মূল লড়াই হবে। উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, দ্বাদশ নির্বাচনে কয়রা উপজেলায় ৭টি ও পাইকগাছা উপজেলায় ১০টি মোট ১৭টি ইউনিয়ন এবং পাইকগাছা পৌরসভা নিয়ে এই আসনের সীমানা। বর্তমানে এই আসনে ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৪৬ হাজার ১১৬ জন। এরমধ্যে পুরুষ ২ লাখ ২৭ হাজার ৫৩৬ এবং নারী ভোটার ২ লাখ ১৪ হাজার ৫৭৯ জন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে ৭জন প্রার্থী প্রতীদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন, আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. রশীদুজ্জামান নৌকা, আ.লীগ স্বতন্ত্র প্রার্থী জিএম মাহবুবুল আলম ঈগল, জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. শফিকুল ইসলাম মধু লাঙ্গল, বিএনএম প্রার্থী ব্যারিস্টার এসএম নেওয়াজ মোরশেদ নোঙ্গর, বাংলাদেশ কংগ্রেস প্রার্থী মির্জা গোলাম আজম ডাব, ন্যাশনাল পিপুলস পার্টির আবু সুফিয়ান আম ও তৃণমূল বিএনপি'র নাদিম উদ্দিন খান সোনালী আঁশ প্রতীক। প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার পরে প্রার্থীরা আচারণ বিধি মেনে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। জানা গেছে দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৩ সালে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের এমএ গফুর, ১৯৭৯ সালে বিএনপির শেখ রাজ্জাক আলী, ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টির মোমিন উদ্দিন আহমেদ, ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টির সরদার জহুরুল হক, ১৯৯১ সালে জামায়াতের অধ্যক্ষ শাহ মোহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস, ১৯৯৬ সালে আ.লীগের অ্যাড. শেখ মো. নুরুল হক। ২০০১ সালে ৪ দলীয় জোটের প্রার্থী জামাতের অধ্যক্ষ শাহ মোহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস, ২০০৮ সালে আ.লীগের বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. সোহরাব আলী সানা, ২০১৪ সালে আ.লীগের অ্যাড. শেখ মো. নুরুল হক এমপি নির্বাচিত হন। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৩০ডিসেম্বর নির্বাচনে জয়লাভ করেন আ.লীগের মো. আক্তারুজ্জামান বাবু। বিএনএম প্রার্থী এসএম নেওয়াজ মোরশেদ বলেন, নির্বাচনী এলাকার জনগণ আমার সাথে আছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী। জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. শফিকুল ইসলাম মধু বলেন, মহাজোটের মনোনয়ন চেয়েছিলাম পাইনি, সে জন্য নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। স্বতন্ত্র প্রার্থী জিএম মাহবুবুল আলম বলেন, সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের চিত্র সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরে দীর্ঘদিন মাঠে আছি। দলের মনোনয়ন না পেয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি। নির্বাচনী এলাকার মানুষ আমার সাথে আছে। ভোট অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হলে বিজয় নিশ্চিত। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. রশীদুজ্জামান বলেন, আমি সেবক হিসেবে জনগণ পাশে থাকতে চাই। আমি মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন সংগ্রাম করছি। সে জন্য এলাকার মানুষ উন্নয়নের প্রতীক নৌকায় ভোট দিয়ে আমাকে বিজয়ী করবে। আমি নির্বাচিত হয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আসনটি উপহার দিতে সক্ষম হবো।