আরব সাগরে তিনটি যুদ্ধজাহাজ এবং পি-৮১ দূরপাল্লার প্যাট্রলিং যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছে ভারত। পণ্যবাহী জাহাজের ওপর ড্রোন হামলার পর এই পদক্ষেপ। আরব সাগর অঞ্চল থেকে পশ্চিম এশিয়ার দিকে কড়া নজর রাখবে এই জাহাজগুলো। প্রয়োজনে প্রত্যুত্তর দেওয়ার ক্ষমতাও আছে এই যুদ্ধজাহাজগুলোর। ভারতীয় নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সম্প্রতি ভারতের সীমান্ত থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইল দূরত্বে একটি পণ্যবাহী জাহাজে ড্রোন হামলার পরই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বস্তুত ওই জাহাজটি এখন ভারতীয় সীমান্তে এসে দাঁড়িয়েছে। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণও হয়েছে। এমভি চেম প্লুটো নামের এই জাহাজটি লাইবেরিয়ার। তবে নেদারল্যান্ডসের একটি সংস্থা জাহাজটি চালায়। সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক নিয়ে জাহাজটি ভারতের দিকে আসছিল। জাহাজটির অধিকাংশ কর্মী ও কর্মকর্তাও ভারতীয়। ভারতের উপকূল থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইল আগে তার ওপর ড্রোন হামলা হয়। জাহাজের বেশ কিছু জায়গায় আগুন ধরে যায়। তবে দ্রুত সেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। পেন্টাগন জানায়, ইরান এই ড্রোন আক্রমণের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। তার পরই আরব সাগরে যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত। আইএনএস মরমুগাও, আইএনএস কোচি এবং আইএনএস কলকাতা যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করা হয়েছে। পুরো এলাকাটিতে এই তিনটি জাহাজ টহল দেবে। প্রয়োজন হলে পি-৮১ দূরপাল্লার যুদ্ধবিমান দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তৈরি থাকবে। এদিকে সোমবার মুম্বাই বন্দরে পৌঁছনোর পর আক্রান্ত জাহাজটিকে পরীক্ষা করে দেখেন ভারতীয় নৌবাহিনীর সেনারা। ২১ জন ভারতীয় কর্মকর্তা ও কর্মী এবং একজন ভিয়েতনামের কর্মীর সঙ্গে আলাদা আলাদা করে কথা বলা হয়। যে জায়গায় ড্রোন এসে লেগেছিল তাও প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা করে দেখা হবে। নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জাহাজটিকে আবার পরীক্ষা করা হবে। এর আগে গত ৩ ডিসেম্বর লোহিত সাগরে সুয়েজ খালের কাছে কয়েকটি মার্কিন জাহাজে আক্রমণ চালিয়েছিল ইরানের মদদপুষ্ট হুতি বিদ্রোহীরা। বস্তুত তার পর থেকে লোহিত সাগর ও সুয়েজের ওই রাস্তা দিয়ে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। জাহাজগুলো আফ্রিকা ঘুরে এশিয়ার দিকে আসছে। সুয়েজ অঞ্চলে পেন্টাগন নতুন একটি টহলদারি গোষ্ঠী তৈরির পরিকল্পনা করেছে। তারই মধ্যে ভারতের কার্যত নাকের ডগায় আবার একটি জাহাজে আক্রমণ হলো। ঘটনায় কোনো প্রাণহানি না হলেও যেকোনো সময় ঘটনাটি আরো ভয়াবহ হতে পারত। ফলে নিজের সীমান্তে ভারত টহলদারি অনেক গুণ বাড়িয়ে দিল।