গাজীপুর-৪, কাপাসিয়া আসনের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ব্যাপক ভাবে জমে উঠেছে। পরপর তিনবার নির্বাচিত এমপি বঙ্গতাজ তাজউদ্দীন আহমদ কন্যা সিমিন হোসেন রিমি চতুর্থ বারের মতো নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তার সাথে তার ফুফাতো ভাই আলম আহমেদ দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঈগল প্রতীকে তিনিও নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। অন্যান্য দলের প্রার্থীরা ভাই-বোনের নির্বাচনের লড়াইয়ে আলোচনা থেকে দূরে সরে থাকলেও এলাকাতে তাদের প্রচার-প্রচারণার বিভিন্ন পোস্টার শোভা পাচ্ছে। কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য আলম আহমেদ ঈগল প্রতীক নিয়ে প্রচার-প্রচারণায় জনশ্রুতিতে এগিয়ে আছেন। নির্বাচনের শুরুতেই ঋণ খেলাপীর দায়ে তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। পরে তা হাইকোর্ট থেকে অনুমতি নিয়ে তিনি নির্বাচনী মাঠে ফেরত আসেন। আদালতে ওই আদেশের বিরুদ্ধে ফুফাতো বোন সিমিন হোসেন রিমি আবার রিট করেন। সেটির শুনানির জন্য আগামী ২ জানুয়ারি দিন ধার্য রয়েছে। তারই মধ্যে নির্বাচনী এলাকায় প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত রয়েছেন তিনি। নির্বাচনী প্রচারণায় তার সাথে রয়েছেন আওয়ামী লীগ ও কৃষক লীগ সহ অঙ্গ সংগঠনের ত্যাগী নেতা কর্মীরা। যারা বিগত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতা থাকাকালীন সময়ে দলের সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিল। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হেভি ওয়েট নেতারা হলেন, জেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান, কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় সাবেক সভাপতি ও জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি মোঃ মোতাহার হোসেন মোল্লা। রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কাপাসিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান প্রাক্তন প্রভাষক রুহুল আমিন, উপজেলা কৃষকলীগের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আইনুদ্দিন মাস্টার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, জেলা পরিষদ সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান আরিফ, কাপাসিয়া ডিগ্রি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি মাহবুবুল আলম বাবলু ও সাবেক ভিপি হাফিজুল হক চৌধুরী আইয়ুব রয়েছেন। তাদের সাথে রয়েছেন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের তৃণমূলের সুবিধা বঞ্চিত নেতারা। যারা একসময় সাবেক গণ ও পূর্ত প্রতিমন্ত্রী অ্যাড. মোঃ আফসার উদ্দিন আহমেদ ও সোহেল তাজের ঘনিষ্ঠ সহচর ছিল। তাদের নিয়ে নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন আলম আহমেদ। এবারই তার প্রথম ভেটে অংশগ্রহণ হলেও আলম আহমেদ কাপাসিয়ার রাজনীতির মাঠে একেবারে নতুন মুখ নয়। তিনি পেশায় একজন শিল্পপতি। বিগত ১০ বছর ধরে তিনি নির্বাচনী এলাকায় আওয়ামী লীগের উন্নয়নের সার্বিক চিত্র তুলে ধরে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে আসছেন। বিভিন্ন জাতীয় কর্মসূচিতে দলের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন। এই আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য বঙ্গতাজ কন্যা ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সিমিন হোসেন রিমি। তিনি এই সংসদীয় আসনে তিনবার নির্বাচিত এমপি। এবার চতুর্থ বারের জন্য নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিন দফায় (১৫ বছরে) তিনি এলাকায় অনেক উন্নয়ন করেছেন। সেই উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে বিভিন্ন প্রচার পত্র দলীয় কর্মীরা নির্বাচনী এলাকায় বিতরণ করছেন। তবে গত ১৫ বছরে রিমির চারপাশে যারা উৎপ্রোত ভাবে ছিলেন, বর্তমানে তাদের মধ্যে কয়েকজন নেতাকে এখন দেখা যাচ্ছে না। তবে আলোচনা রয়েছে যে, তিনি তাদেরকে সরিয়ে রাখছেন। তবে রিমির নৌকার প্রচারণায় তাদেরকে বিভিন্ন এলাকাতে পোস্টার, লিফলেট বিতরণ করতে দেখা যায। এখন রিমির প্রচারণায় তাঁর সাথে রয়েছেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাড. মোঃ আমানত হোসেন খান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. মাজহারুল ইসলাম সেলিম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান প্রধান, সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ আসাদুজ্জামান আসাদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন আহমেদ সেলিম সহ যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সক্রিয় নেতাকর্মীরা। তাদের নিয়ে নির্বাচনের মাঠে প্রচারণা করতে দেখা যায়। নতুন মুখ হিসেবে ত্যাগী নেতাদের নিয়ে বিশাল মিছিল ও শো-ডাউন দিয়ে আলম আহমেদ আলোচনায় থাকলেও ভোটের পরিসংখ্যানে এগিয়ে আছেন সিমিন হোসেন রিমি। বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের এই জন্মভূমি কাপাসিয়ায় আগামীর নেতৃত্বে কে থাকছেন, মেয়ে নাকি ভাগিনা তা নিয়ে ভোটার ও এলাকার সাধারণ মানুষের মনে রয়েছে ব্যাপক আগ্রহ।