একই প্রযোজকের দ্বারা দুইবার যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন মার্কিন গায়িকা, নৃত্যশিল্পী ও অভিনেত্রী পলা আব্দুল। দীর্ঘ দিন বিষয়টি নিয়ে চুপ থাকার পর অবশেষে আইনি পদক্ষেপ নিলেন। প্রভাবশালী প্রযোজক নাইজেল লিথগো’র বিরুদ্ধে মামলা করেছেন পলা। যিনি ‘আমেরিকান আইডল’ ও ‘সো ইউ থিং ইউ ক্যান ড্যান্স’র মতো তুমুল জনপ্রিয় রিয়্যালিটি শো প্রযোজনা করেছেন। আশির দশকেই শোবিজ জগতে জনপ্রিয়তা লাভ করেন পলা আব্দুল। এরপর শূন্য দশকের শুরুর দিকে তিনি রিয়্যালিটি শো’র বিচারক হিসেবে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় অধ্যায় প্রতিষ্ঠা করেন। মামলায় পলা বলেছেন, ‘আমেরিকান আইডল’র প্রথম দিকের একটি সিজনের সময় লিফটে তাকে যৌন হয়রানি করেছেন প্রযোজক নাইজেল। অভিযোগ অনুসারে, লিফটে চড়ে হোটেলে ওঠার সময় নাইজেল তাকে ধাক্কা দিয়ে চেপে ধরেন এবং তার বুকে ও গোপনাঙ্গে স্পর্শ করেন। এ ছাড়া অভিনেত্রীর মুখও চেপে ধরেন। লিফটের দরজা খুলতেই নাইজলকে ধাক্কা মেরে দৌড়ে নিজের কক্ষে চলে যান পলা। ওই ঘটনার কয়েক বছর পর নাইজেল প্রযোজিত ‘সো ইউ থিংক ইউ ক্যান ড্যান্স’র বিচারক হন পলা আব্দুল। সে সময় এক রাতে নৈশভোজের জন্য নিজের বাড়িতে ডাকেন প্রযোজক। পলার মতে, পেশাগত দায়িত্ব হিসেবে তিনি নৈশভোজে গিয়েছিলেন। কিন্তু পলা যখন সোফায় বসে ছিলেন, তখন তার ওপর জোর করে বসার চেষ্টা করেন প্রযোজক লিথগো এবং চুমু দেওয়ার চেষ্টা করেন। সেই সঙ্গে বলেছিলেন, ‘আমরা দুজন মিলে শক্তিশালী দম্পতি হবো’। সে রাতেও নাইজেল লিথগোকে ধাক্কা মেরে বের হয়ে আসেন পলা আব্দুল। সফল এই গায়িকা-নৃত্যশিল্পী অভিযোগ, মৌখিকভাবেও তাকে বিভিন্ন সময় হয়রানি করা হয়েছিল। এমনকি অনুষ্ঠানে পুরুষ বিচারকদের তুলনায় তাকে কম পারিশ্রমিক দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগে বলা হয়েছে, “বছরের পর বছর ধরে পলা আবদুল চুপ ছিলেন; কারণ তার ভয় ছিল- লিথগোর মতো প্রভাবশালী প্রযোজকের বিরুদ্ধে মুখ খুললে সহজেই তার ক্যারিয়ার ধ্বংস করে দিতে পারে এবং ইন্ডাস্ট্রিতে তাকে ‘ব্ল্যাক লিস্টেড’ করে দিতে পারে।” বিষয়টি নিয়ে প্রযোজক নাইজেল লিথগোর পক্ষ থেকে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় জন্ম ও বেড়ে ওঠা পলা আব্দুলের। ১৮ বছর বয়সে বাস্কেটবল টিম ‘লস অ্যাঞ্জেলস ল্যাকারস’র জন্য চিয়ারলিডার হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেন তিনি। পরবর্তীতে তিনি ড্যান্স কোরিওগ্রাফার হিসেবে পরিচিতি পান। ১৯৮৮ সালে ‘ফরএভার ইউর গার্ল’ অ্যালবামের মাধ্যমে গায়িকা হিসেবে অভিষেক হয় তার। এটি ওই সময়ের অন্যতম সফল অ্যালবামের খ্যাতি পায়। শূন্য দশকে পলা আবদুল ‘আমেরিকান আইডল’, ‘দ্য এক্স ফ্যাক্টর’, ‘লিভ টু ড্যান্স’, ‘দ্য মাস্কড ড্যান্সার’সহ বেশ কিছু রিয়্যালিটি শোতে বিচারকের দায়িত্ব পালন করেছেন। সূত্র: ভ্যারাইটি