প্রেমিক এড়িয়ে চলায় অভিমানে নিজের শরীরে আগুন দেওয়া ফেনীর সেই কলেজছাত্রী মাশকুরা আক্তার মুমুর (১৯) মৃত্যু হয়েছে। আজ শনিবার দুপুরে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মুমুর বাবা আবদুল মালেক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত সোমবার দুপুরে ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের লক্ষ্মীয়ারা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে এ ঘটনা ঘটে। মুমু ফেনী ন্যাশনাল কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। তিনি পরিবারের সঙ্গে শহরের পাঠান বাড়ি সড়কে থাকতেন। তাদের গ্রামের বাড়ি জামালপুর সদর উপজেলার রামনগর এলাকায়। আবদুল মালেক বলেন, গত বছরের অক্টোবর-নভেম্বর মাসে মুমুর বিয়ের জন্য একটি প্রস্তাব আসে। এতে সে অসম্মতি জানিয়ে নাহিদ নামে এক সহপাঠীর সঙ্গে সম্পর্কের কথা জানায়। তখন থেকে আমি আর তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিইনি। পরে গত বছরের নভেম্বর মাসে নাহিদের ভাই লক্ষ্মীয়ারা বাজারে আমার সঙ্গে এসব নিয়ে কথা বলেন। তার ভাই বলেন নাহিদকে প্রবাসে পাঠিয়ে দেবেন এবং প্রবাস থেকে ফেরা পর্যন্ত আমার মেয়ে যেন তার জন্য অপেক্ষা করেন। এরপর এ বিষয়ে গত এক বছর আর কোনো কথা বলিনি। পরে নাহিদ তাকে প্রত্যাখ্যান করে। যেখান থেকে অভিমানে মুমু এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে ধারণা করছি। স্থানীয় সূত্র জানায়, নাহিদ নামে এক ফল ব্যবসায়ীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল মুমুর। তাদের মধ্যে কিছুদিন ধরে টানাপড়েন চলছিল। গত সোমবার সকালে ওই এলাকায় যান মুমু। কিছুক্ষণ পর লক্ষ্মীয়ারা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে নিজের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেন তিনি। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দগ্ধ মুমু সাংবাদিকদের কাছে নিজের শরীরে নিজে আগুন দিয়েছেন বলে জানান। এ ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন মুমুর প্রেমিক নাহিদ। নাহিদের সঙ্গে মুমুর প্রেমের সম্পর্কের কথা জানতেন না দাবি করে তার ভাই নাসির উদ্দিন সোহেল বলেন, গত সোমবার এ ঘটনার পরই আমাদের পরিবার এ সম্পর্কের কথা জেনেছে। তাদের প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে দুই পরিবারের পারিবারিক কথাবার্তার যে কথা ছড়িয়ে পড়েছে তা সত্য না। এ সময় নাহিদ ও তার বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলে তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন সোহেল। ফেনী সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থোয়াই অং প্রু মারমা দগ্ধ ছাত্রীর মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ঘটনার রহস্য উদঘাটনে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।