শ্যামনগর উপজেলা ও কালিগঞ্জ (আংশিক) নিয়ে গঠিত সাতক্ষীরা-৪ আসনে সাত প্রার্থীর মধ্যে ভোটের মাঠে পাঁচজনের খোঁজ মিলছে না। জাতীয় পার্টি (এ) ও তৃণমুল বিএনপি মনোনীত প্রার্থীসহ অন্যান্যের অনুপস্থিতিতে প্রচার-প্রচারণায় রয়েছে কেবলই আওয়ামী লীগ ও বিএনএম। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের অধিকাংশের নির্লিপ্ততার পাশাপাশি কয়েকটি বড় দলের বর্জন ঘটনার প্রভাব পড়ছে স্থানীয় নির্বাচনী পরিবেশে। ফলে সপ্তাহকালের বেশী বাকি থাকা সত্ত্বেও নির্বাচনী এলাকার সাধারন ভোটারদের মধ্যে কোন উচ্ছ্বাস ও উম্মাদনা পরিলক্ষিত হচ্ছে না। তবে মাঠে সক্রিয় আওয়ামী লীগ ও বিএনএম দলীয় দুই প্রার্থীর মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বীতার সম্ভাবনা দেখছে স্থানীয় ভোটাররা। সরেজমিনে সংসদীয় আসন-১০৮ তথা সাতক্ষীরা-৪ (শ্যামনগর ও কালিগঞ্জ (আংশিক) ঘুরে ও স্থানীয় ভোটার ও সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলে এমন চিত্রের দেখা মিলেছে। ভোটারদের অভিমত সকল দল অংশগ্রহণ না করায় এবারের ভোটকে ঘিরে মানুষের মধ্যে আগ্রহ কম। তাছাড়া অংশগ্রহনকারী সব প্রার্থী মাঠে না থাকায় নির্বাচনী উত্তাপ সেভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে না। যদিও এসব ভোটারের দাবি মহাজোট থেকে নির্বাচিত জাতীয় পাটি (এ) এর সাবেক এমপি এইচ এম গোলাম রেজা এবং আওয়ামী লীগের প্রার্থী এসএম আতাউল হক দোলনের মধ্যে তুমুল লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখছেন তারা। ভোটার উপস্থিতি বেশী হলে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে বিএনএম প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতাকারী গোলাম রেজার ভাগ্যে সিঁকে ছিড়তে পারে। বিপরীতে কেন্দ্রে যদি ভোটারদের উপস্থিতি তুলনামুলকভাবে কম হয় সেক্ষেত্রে পিতার পর আতাউল হক দোলন প্রথমবারের মত জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হতে পারেন। মুন্সিগঞ্জের উত্তর কদমতলা গ্রামের আবদুর রশিদ বলেন সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত না হওয়ায় ভোটকে ঘিরে এলাকাবাসীর মধ্যে কোন আগ্রহ নেই। মাত্র দু’জন প্রার্থী নির্বাচনী তৎপরতায় চালাচ্ছেন জানিয়ে তিনি আরও বলেন সংসদীয় আসনটিতে আরও পাঁচ প্রার্থী থাকলেও জাতীয় পার্টি কিংবা তৃণমুল বিএনপিসহ কারও পোষ্টার কিংবা প্রচারনা গত ১০ দিনেও চোখে পড়েনি। পোড়াকাটলা গ্রামের পরীক্ষিত মন্ডল বলেন, অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে কেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি পর্যাপ্ত নাও হতে পারে। তবে মুল প্রতিদ্বন্দ্বীতায় থাকা দুই প্রার্থী শেষ মুহুর্তে ভোটারদের মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি করতে পারলে পরিস্থিতির উন্নতির সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি আরও বলেন ভোটার উপস্থিতি যতবেশী হবে নোঙর প্রতীকের প্রার্থী গোলাম রেজার জন্য তা মঙ্গলজনক হবে। তবে অপেক্ষাকৃত কম ভোট পড়লে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নৌকা প্রতীকের আতাউল হকের বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বহুগুনে বেশী। জানা যায় শামনগর ও কালিগঞ্জ (আংশিক) আসনে মোট মোট আট জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিলেও আওয়ামী লীগের জেলা কমিটির সদস্য মাসুদা খানম মেধা শেষ মুহুর্তে তা প্রত্যাহার করেন। শেষপর্যন্ত সাত প্রার্থী ভোটের লড়াইয়ে টিকে থাকলেও জাতীয় পার্টির (এ) মাহবুবর রহমান, তৃণমুল বিএনপির আসলাম আল মেহেদী, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মোঃ সফিকুল ইসলাম, এনপিপির শেখ একরামুল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মিজানুর রহমানের দেখা নেই নির্বাচনী মাঠে। প্রচার প্রচারণা দুরের কথা পোষ্টারও দেখা যাচ্ছে না তাদের। নির্বাচনে অবতীর্ন হয়ে প্রচারনায় না থাকার বিষয়ে জাতীয় পার্টি (এ) প্রার্থী মাহবুবর রহমান বলেন কিছু স্থানে সমঝোতা হওয়ায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। পরিবেশ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করছেন দাবি করে তিনি আরও বলেন উঠান বৈঠক করে ভোটারদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করছেন তিনি। তৃণমুল বিএনপির আসলাম আল মেহেদী বলেন সভা-সমাবেশ না হলেও বিভিন্ন এলাকায় যেয়ে ভোটারদের কেন্দ্রে যাওয়ার আগ্রহ সৃষ্টিসহ সমর্থন লাভের চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি। এনপিপির প্রার্থী শেখ একরামুল বলেন দু’এক দিনের মধ্যে পোষ্টারসহ প্রচারযন্ত্রে প্রচারনার কাজ শুরু হবে। উল্লেখ্য শামনগর ও কালিগঞ্জ (আংশিক) আসনে মোট ভোটার সংখ্যা টার লাখ ৪২ হাজার একশ ৯৩ জন। যার মধ্যে শ্যামনগর উপজেলার ১২ ইউনিয়নে ভোটার দুই লাখ ৮৪ হাজার তিনশ ৫৮ এবং কালিগঞ্জের আট ইউনিয়নে ভোটার এক লাখ ৫৭ হাজার আটশ ৩৫ জন। সংসদীয় আসেনর একশ ৪২টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে বলে নির্বাচন অফিস সুত্র জানায়।