গারো পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে পৌষ মাসের শুরু থেকেই শীতের তীব্রতা বাড়তে থাকে। গত দুইদিন যাবত এই উপজেলায় জেঁকে বসেছে তীব্র শীত। জেঁকে বসা শীতের সাথে পাল্লা দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে শৈত্য প্রবাহ। এতে কষ্ট বেড়েছে দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষের। বিশেষ করে করে পাহাড়ের অভ্যন্তরে ও আশপাশের এলাকায় বসবাসকারী মুসলিম সম্প্রদায়সহ উপজাতি গরো ও কোচ সম্প্রদায়ের মানুষের কষ্ট বেড়েছে দ্বিগুণ। হিমশীতল ঠান্ডা শীতের মাঝে কাজে যোগ দিতে পারছে না শ্রমিকরা। গত কয়েকদিন ধরে উপজেলার সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকা সমেশ্চুড়া, মধুটিলা, বুরুঙ্গা, কালাপানি, আন্ধারুপাড়া, খলচান্দা, বারোমারী, দাওধারা, কাটাবাড়ি, হাতিপাগার, নাকুগাঁও, কালাকুমা, তারানী, পানিহাটা ও মায়াঘাসী এলাকার গারো পাহাড়ি পল্লিতে চলছে তীব্র শীতের মহড়া। উত্তরে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের হিমালয় পর্বতের হিমবায়ু আর ঘন কুয়াশায় এখন এলাকায় জেঁকে বসেছে প্রচ- শীত। এসব এলাকায় তাপমাত্রা সর্বনিম্ন ১০/১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমে এসেছে। এতে খেটে খাওয়া ছিন্নমূল মানুষগুলো প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্রের অভাবে পড়ছেন। গারো আদিবাসী নেতা ও সাবেক ট্রাইবাল চেয়ারম্যান মি. লুইস নেংমিনজা জানান, পাহাড়ি এলাকায় ব্যাপক শীত পড়েছে। প্রচ- শীতের কারণে সীমান্ত এলাকার গারো আদিবাসীরা আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। প্রতিবছর এভাবেই শীতের সঙ্গে লড়াই করে তাদেরকে বেঁচে থাকতে হয়। এসব অঞ্চলের শীতার্ত মানুষ পাহাড় থেকে লাকড়ি ও খড়কুটা সংগ্রহ করে আগুন দিয়ে তা জ¦ালিয়ে শরীর ছেঁকে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। উপজেলার ভটপুর গ্রামের বাসিন্দা রমিজ উদ্দিন বলেন, গত দুইদিন যাবত ব্যাপক শীত পড়েছে। ভিতর এলাকার চেয়ে সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকায় শীত পড়ে বেশি। সেই হিসেবে এই এলাকার গরীব অসহায় মানুষ তেমন শীতবস্ত্র পায় না। সীমান্তবর্তী পাহাড়ি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পল্লি খলচান্দা গ্রামের বাসিন্দা পরিমল কোচ বলেন, সমতলের চেয়ে পাহাড়ে শীত পড়েছে বেশি। পর্যাপ্ত শীতবস্ত্রের অভাবে রাত জেগে আগুন জ¦ালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে মানুষ। তাছাড়া কোচরা সবসময়ই সরকারি বরাদ্দের চেয়ে শীতবস্ত্র কম পায়। এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইলিশায় রিছিল জানান, সরকারিভাবে এই উপজেলায় শীতবস্ত্র হিসেবে কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যেই ইউনিয়ন পর্যায়ে বেশকিছু কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া বাকী এলাকায় খুব শীঘ্রই এসব শীতবস্ত্র বিতরণ করা হবে।