রঙিন পোশাকের বিষাদ যখন সঙ্গী, সাদা পোশাকের উচ্ছ্বাসের ছোঁয়াও তখনই পেলেন ধানাঞ্জয়া ডি সিলভা। ওয়ানডে দলে জায়গা হারানো ক্রিকেটার এখন টেস্ট দলের অধিনায়ক। দিমুথ কারুনারাতেœর জায়গায় শ্রীলঙ্কার নতুন টেস্ট অধিনায়ক করা হয়েছে ধানাঞ্জায়াকে। শ্রীলঙ্কার প্রধান নির্বাচক উপুল থারাঙ্গা নিশ্চিত করেছেন এই পরিবর্তন। দেশটির ১৮তম টেস্ট অধিনায়ক হতে যাচ্ছেন ধানাঞ্জায়া। শ্রীলঙ্কার হয়ে ৫১ টেস্ট খেলে ১০ সেঞ্চুরিতে ৩ হাজার ৩৫১ রান করেছেন ধানাঞ্জায়া। এছাড়াও ওয়ানডে খেলেছেন তিনি ৯০টি, টি-টোয়েন্টি ৩৯টি। কোনো সংস্করণেই এখনও নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা নেই ৩২ বছর বয়সী অলরাউন্ডারের। এই নিয়ে তিন সংস্করণেই শ্রীলঙ্কার নেতৃত্বের পরিবর্তন এলো সাম্প্রতিক সময়ে। কদিন আগেই ওয়ানডে অধিনায়ক করা হয়েছে কুসাল মেন্ডিসকে, টি-টোয়েন্টির দায়িত্ব পেয়েছেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। টেস্টের পরিবর্তনকেই বলা যায় সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য। ২০১৯ সালে শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটের বেশ দুযোর্গপূর্ণ সময়ে দায়িত্ব পান কারুনারাতেœ। তার নেতৃত্বের শুরুটা ছিল স্মরণীয়। দক্ষিণ আফ্রিকায় ঐতিহাসিক সিরিজ জয় করে শ্রীলঙ্কা। এশিয়ার একমাত্র দল হিসেবে সেখানে সিরিজ জয়ের কৃতিত্ব দেখা তারা। এরপর ভালো-মন্দ মিশিয়ে কেটেছে তার নেতৃত্বের অধ্যায়। সব মিলিয়ে ৩০ টেস্টে অধিনায়কত্ব করে তার জয়-হার সমান ১২টি করে। তবে মাঠের ফলাফল ছাপিয়ে তার নেতৃত্বের প্রভাব ছিল আরও। ড্রেসিং রুমকে ধীরস্থির ও স্থিতিশীল করে তুলেছিলেন তিনি। নেতৃত্বে তার ব্যাটিং ফর্মও বেশির ভাগ সময় ছিল ভালো। ৩৫ বছর বয়সী ওপেনারের ক্যারিয়ার ব্যাটিং গড় ৪০.৯৩। কিন্তু অধিনায়ক হিসেবে ব্যাটিং গড় ৪৯.৮৬। নেতৃত্বের ৩০ টেস্টে তার সেঞ্চুরি ৮টি, বাকি ৫৮ টেস্টে সেঞ্চুরি ৮টি। তার জায়গায় দায়িত্ব পাওয়া ধানাঞ্জায়াও শ্রীলঙ্কার টেস্ট দলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই সংস্করণে বেশ ভালো ফর্মেও আছেন তিনি। তার নেতৃত্বের অধ্যায় শুরু হবে আগামী মাসের শুরুতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে। নতুন অধিনায়ককে অভিনন্দন জানিয়ে সামাজিকমাধ্যমে বিদায়ী অধিনায়ক কারুনারাতেœ বললেন, উপযুক্ত একজনকই বেছে নেওয়া হয়েছে নেতৃত্বের জন্য। “সন্তোষজনক ও স্মরণীয় সময় শেষে শ্রীলঙ্কার টেস্ট দলের দায়িত্ব শেষ পর্যন্ত তুলে দিচ্ছি তোমার হাতে ধানাঞ্জায়া ডি সিলভা, তোমার চেয়ে ভালো আর কে হতে পারে! আমার চোখে যে দুর্দান্ত এক অলরাউন্ড অ্যাথলেট।” “ধানা, আমি তোমাকে এত বছর ধরে দেখেছি খুবই পরিণত ও দারুণ একজন ক্রিকেটার হিসেবে বেড়ে উঠতে ও গড়ে উঠতেৃ স্মার্ট, বরফশীতল মানসিকতার এবং খুবই চতুর ক্রিকেট মস্তিষ্কের একজন। মাঠের ভেতরে ও বাইরে নিজের ধরনে তুমি মানিয়ে নাও প্রতিবারই মুখে সেই বিখ্যাত হাসিটুকু নিয়ে! আমার দৃঢ় বিশ্বাস, শ্রীলঙ্কার টেস্ট ক্রিকেট খুব নিরাপদ হাতেই পড়েছে এবং তোমার অধিনায়কত্বের সময়টায় আরও এগিয়ে যাবে। এটা নিশ্চিত যে, মাঠের ভেতরে-বাইরে তোমার পাশে পাবে আমাকে।”