আগামী ৭জানুয়ারী অনুষ্ঠিতব্য আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নোয়াখালী-২ (সেনবাগ-সোনাইমুড়ীর আংশিক) আসনে নৌকা মার্কার প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে স্বতস্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিকের কাচিঁ মার্কা।
সাবেক দুই বারের এমপি ও সেনবাগ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বিশিষ্ঠ শিল্পপতি বেঙ্গল গ্রুপের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোরশেদ আলম এবারও নৌকার প্রার্থী হয়েছেন। আর এবার দলের কোন বাঁধা না থাকায় বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বীতার কোন রকমের বিধিনিষেধ না থাকার সুযোগে স্বতস্ত্র প্রার্থী হিসেবে কাঁচি প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্ব্দ্বীতা করছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সহ-সভাপতি ও নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি তমা কনষ্টাশনের কর্নধান আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক। নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা দিন রাত সমান তালে তত শীত ও শৈত্য প্রবাহ উপেক্ষা করে ওঠান বৈঠক,পথ সভা ও সমাবেশের মাধ্যমে ভোটারদে নিজেদের পক্ষে টানার জোর চেষ্ঠা চালিয়ে চালাচ্ছেন। বর্তমান এমপি তৃতীয় বারের মতো নৌকা মার্কার প্রার্থী আলহাজ্ব মোরশেদ আলমের বিরুদ্ধে এবার দলীয় তৃণমূল নেতাকমীদের খোজঁখবর না নেওয়া, ত্যাগী ও মামলা হামলার শিকার নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে ইউনিয়ন ও পৌরসভায় কাউন্সিল না করে প্রচন্দে লোকজন দিয়ে কমিটি গঠন করা, পরিবারতন্ত্র ওএলাকায় কম আসা সহ নানা অভিযোগে এবার পদ বঞ্চিত তৃণমূল আওয়ামী লীগ ও দলীয় সিন্ধান্ত গ্রহণে অসযোগীতা করার অভিযোগে বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লায়ন জাহাঙ্গীর আলম মানিক ,উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জাফর আহম্মদ চৌধুরী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার সাবেক মেয়র আবু জাফর টিপু, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সেক্রেটারী ও নৌকা মার্কার সাবেক প্রার্থী ড. জামালউদ্দিন এফসিএ, সেনবাগ পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও পৌরসভার সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র নুরজ্জামান চৌধুরী, পৌরসভার সাবেক সেক্রেটারী অ্যাডভোকেট আবদুল আজিম চৌধুরী মানিক ,কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সিহাব উদ্দিন,সেনবাগ উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক আওয়ামী লীগ নেতা আলী আক্কোস রতন,উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাজেদুল হক তানভির ,কাদরা ই্ডনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও কাদরা ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি গিয়াস উদ্দিন ভূঁইয়া,অজুনতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন রিপন,বিজবাগ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সেলিম উদ্দিন কাজল,কাবিলপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাবেক সভাপতি জিয়াউলি হক পাটোয়ারী দুলু,সেক্রেটারী মাইন উদ্দিন লিটনের নেতৃত্বে বিশাল একটি অংশ মোরশেদ আলমে বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিকে পক্ষে অবস্থান নিয়ে কাচিঁ মার্কার পক্ষে ভোট করছে। এতে করে বেকাদায় পড়েছে নৌকা মার্কার প্রার্থী মোরশেদ আলম। বর্তমানে কাচিঁ মার্কা মোরশেদ আলমে গলার কাটা হিসেবে দাঁড়িয়েছে। তৃণমূল আওয়ামী লীগ ও স্থানীয় ভোটারদের ভাষ্য-প্রশাসন নিরপেক্ষ থাকলে এবং ভোট সুষ্ঠু হলে কাঁচি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মানিকের জয়লাভ করার সম্ভাবনাই বেশি।
অপরদিকে নৌকার প্রার্থী মোরশেদ আলম বুধবার (৩জানুয়ারী) সেনবাগ সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এক নির্বাচনী জনসভায় তার অতিতে ভুল ক্রটির জন্য ক্ষমা চেয়ে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়া জন্য দলীয় নেতাকর্মী সহ এলাকা বাসীকে কেন্দ্রে গিয়ে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার আহবান জানান। নৌকা মার্কার প্রার্থী মোরশেদ আলম আওয়ামী লীগ নেতাদের অভিমান ভাঙ্গাতে চেষ্টা করছেন এবং ভোটারদের নিকট তার বিগত ১০ বছরের উন্নয়নের ছিত্র তুলে ধরে নিজের পক্ষে আনার চেষ্টা চালাচ্ছেন। মোরশেদ আলম জানান ,তিনি বিগত দুই বার টানা সেনবাগে এমপি হিসবে দায়ীত্ব পালন করেছেন। তাই ১০ বছরের ক্ষমতায় সেনবাগে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। তার সময় সেনবাগে কোন রাজনৈতিক খুন খারাপি হয়নি। তিনি আশাবাদী এবারও তৃতীয় বারের মতো নৌকা মার্কার প্রার্থী হিসেবে তিনি জয়লাভ করবেন।
অপর দিকে স্বতন্ত্র কাচিঁ মার্কার প্রার্থী বাফুকের সহসভাপতি ও নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি আতাউর রহমান ভূঁইযা মানিক জানান, তিনি এলাকার অসহায় ও কন্যা দায় গ্রস্থ নারীদের বিবাহ,অসহায়দের সাহায্য, চিকিৎসা সহায়তা প্রদান, এলাকায়,স্কুল ,কলেজ ও বিনোদনের জন্য পার্ক নির্মান করার কারণে জনগণ তার পক্ষে ভোট দিবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন-মোরশেদ আলম বিগত ১০ বছর এমপি ছিলেন তিনি জনগণের জন্য কিছুই করেনী। যা করেছেন নিজের জন্য করেছেন। তিনি অধিকাংশ সময় নিজের ব্যবসার কাজে ঢাকায় অবস্থান করতেন। মাঝে মধ্যে এলাকায় এলেও তার অপর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বেগমগঞ্জের চৌমুহনীর মোরশেদ আলম কমপ্লেক্সেএ অবস্থান করতেন সেখানে কিছু সংখ্যক নেতাকর্মী দেখা করার সুযোগ পেতেন। এসব কারণে সেনবাগের ভোটাররা তার থেকে মুখ পিরিয়ে নিয়েছেন।
নোয়াখালী-২ আসনে মোট ৭জন প্রার্থী প্রাতদ্বন্দ্বীতা করছে।অন্যরা হচ্ছে-জাতীয় পার্টি লাঙ্গল প্রতিকের প্রার্থী এম তালেবুজ্জামান, জাসদের মশাল মার্কার নাইমুল আহসান জুয়েল, কল্যাণ পার্টির (হাত ঘড়ি) মার্কা প্রার্থী কাজী সরওয়ার আলম, বাংলাদেশ ন্যাশনালিষ্ট পার্টি (বিএনএফ) টেলিভিশন মার্কার প্রার্থী মোঃ আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট (ছড়ি) মার্কার প্রার্থী রবিউল হোসাইন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছে।
নোয়াখালী-২ আসনের মোট ভোটার ৩৬০৬৪জন এরমধ্যে তৃতী লিঙ্গ হিজরা রয়েছে একজন। সেনবাগের ৯টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ৮২টি কেন্দ্রে মোট ভোটার ২৫০১৩৯জন ও সোনাইমুড়ীর ৪টি ইউনিয়নে ৩৬টি কেন্দ্রে ভোটার রয়েছে ১১০৩২৫জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার সংখ্য ১৮৫৯৭২জন ও মহিলা ভোটার সংখ্য ১৭৪৪৯১ এবং হিজরা একজন।