ফুটবলে ভিডিও অ্যাসিসটেন্ট রেফারি (ভিএআর) প্রযুক্তি চালুর পর থেকে এটি ঘিরে আগ্রহ যেমন বেড়েছে তেমনি সমালোচনাও। বিশেষ করে, সাম্প্রতিক সময়ে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে নিয়মিতই ভিএআরের সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন দলের কোচকে। সবশেষ এভারটন কোচ শন ডাইস বিরক্তি প্রকাশ করে বলেছেন, ‘ভিএআর তার ধৈর্য্যরে পরীক্ষা নিচ্ছে।’ ভিএআর বিতর্কে সবশেষ সংযুক্তি এফএ কাপের তৃতীয় রাউন্ডে এভারটন ও ক্রিস্টাল প্যালেস ম্যাচের একটি ঘটনা। বৃহস্পতিবার রাতে গোলশূন্য ড্র ম্যাচের ৭৯তম মিনিটে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো লাল কার্ড দেখেন এভারটন স্ট্রাইকার ডমিনিক ক্যালভার্ট-লুইন। প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডার ন্যাথানিয়েল ক্লাইনকে চ্যালেঞ্জ জানাতে গিয়ে ফাউল করে বসেন ক্যালভার্ট-লুইন। ডাইসের মতে, ক্লাইনের পায়ে ক্যালভার্ট-লুইনের পায়ের সংঘর্ষ ছিল খুবই সামান্য, ‘ছুঁয়ে গিয়েছিল’ মাত্র। আর এজন্যই লাল কার্ডের সিদ্ধান্ত নিয়ে যত আপত্তি এভারটন কোচের। ম্যাচ রেফারি ক্রিস ক্যাভেনাও শুরুতে কোনোরকম অ্যাকশন নেননি। পরে ভিএআরে ক্যালভার্ট-লুইন বহিষ্কার হওয়ায় কিছুতেই মানতে পারছেন না ডাইস। “স্লো মোশনে যেন ভিন্ন কিছুই দেখা গেছে।” “আপনি যদি সবকিছু স্লো মোশনে দেখতে চান, তাহলে একেবার সবকিছুই স্লো মোশনে দেখতে হবে। ওখানে স্পর্শটা ছিল খুবই সামান্য, খেলা চলাকালীন তো তিনি (রেফারি ক্রিস ক্যাভেনা) কিছুই দেননি। এরপর তারা স্লো মোশনে দেখন এবং সবকিছু খুব খারাপ হয়ে উঠল।” এভারটন ও প্যালেস লড়াই ড্র হওয়ায় এই মাসেই পরবর্তীতে গুডিসন পার্কে ‘রিপ্লে’ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু এই লাল কার্ডের জন্য তিন ম্যাচের নিষেধাজ্ঞায় থাকবেন ইংল্যান্ডের ক্যালভার্ট-লুইন। ফুটবল ম্যাচে ভিএআর প্রযুক্তি ব্যবহারের সিদ্ধান্তটি দারুণ পছন্দ হয়েছিল বলে জানান ডাইস। কিন্তু সময় যত গড়াচ্ছে, এটি ঘিরে তার মনোভাব ক্রমেই পাল্টে যাচ্ছে। “আমি একজন (ভিএআরের) ভক্ত। আমরা সবাই জানতাম, প্রযুক্তিটির ব্যবহার আরও ভালোভাবে করতে হবে। ভেবেছিলাম, সবকিছু ধীরে ধীরে আরও ভালো হবে। তবে এখন মনে হচ্ছে, যেন আরও পেছনের দিকে যাচ্ছে। অবশ্য আমি এখনও এর পক্ষে, তবে এটি আমার ধৈর্য্যরে পরীক্ষা নিতে শুরু করেছে।” ভিএআর নিয়ে কিছুদিন আগে আরও বেশি ক্ষেপেছিলেন আর্সেনাল কোচ মিকেল আর্তেতা। গত নভেম্বরে প্রিমিয়ার লিগে নিউক্যাসল ইউনাইটেডের বিপক্ষে ১-০ গোলে হারের পর রেফারি ও ভিএআরকে ধুয়ে দেন আর্তেতা। সেই ম্যাচে বিতর্কিত একটি সিদ্ধান্ত যায় নিউক্যাসলের পক্ষে, যা মেনে নিতে পারেননি এই স্প্যানিয়ার্ড। প্রিমিয়ার লিগের মতো একটু টুর্নামেন্ট এমন রেফারিং কীভাবে চলতে পারে, সেই প্রশ্নও তুলেছিলেন আর্তেতা। এরপর ম্যাচ অফিশিয়ালদের নিয়ে অপমানজনক মন্তব্যের জন্য ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন তাকে অভিযুক্ত করে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য বড় কোনো শাস্তি পেতে হয়নি তাকে। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে আর্সেনালের বিপক্ষে লিগ ম্যাচে একটি সম্ভাব্য পেনাল্টি না পেয়ে ভিএআরকে প্রশ্নবিদ্ধ করেন লিভারপুল কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপ। ভিএআর দেখার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তার যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।