কারো দৃষ্টিতে তিনি জার্মান ফুটবলের ‘স¤্রাট’, কারো চোখে জার্মান ফুটবলের প্রথম ‘সুপারস্টার’। ফুটবল বিশ্বকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমানো কিংবদন্তি ফ্রানৎস বেকেনবাউয়ারকে নিয়ে একটু দেরিতেই এবার নিজের মনোভাব জানালেন ইয়ুর্গেন ক্লপ। লিভারপুল কোচের হৃদয়ে বিশেষ স্থানেই আছেন বেকেনবাউয়ার। নানা রোগব্যাধির সঙ্গে লড়াইয়ে হার মেনে গত রোববার নশ্বর পৃথিবীর মায়া ছাড়েন বেকেনবাউয়ার। সোমবার জার্মান গণমাধ্যমে তার মৃত্যুর খবর আসে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। অধিনায়ক ও কোচ হিসেবে প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের অবিস্মরণীয় কীর্ত গড়েছিলেন বেকেনবাউয়ার। জার্মানির ১৯৭৪ বিশ্বকাপ জয়ী দলের অধিনায়ক ছিলেন তিনি। ছিলেন ১৯৯০ বিশ্বকাপ জয়ী দলের কোচও। ফুটবলের আঙিনায় বেকেনবাউয়ারের এই সাফল্যময় পথচলা অনুপ্রাণিত করেছিল অনেক জার্মানকে। ক্লপকে করেছিল বিশেষভাবে। প্রিয় তারকার সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্কও গড়ে উঠেছিল লিভারপুল কোচের। কিংবদন্তির মৃত্যুর খবর ক্লপের জন্য অনেক বড় ধাক্কা হয়ে আসে, নিজেকে সামলে নিতে তাই একটু সময় লেগে যায় তার। স্মৃতির ঝাঁপি খুলে তিনি বললেন, ‘ডের কাইজার’-এর চলে যাওয়া তার জীবনে প্রভাব রাখবে ভীষণভাবে। “ভাঙা রেকর্ডের মতো কিছু বাজাতে চাই না আমি, কিন্তু তাকে ছাড়া এই পৃথিবী অন্যরকম হয়ে হবে, অন্ততপক্ষে আমার জন্য। তাকে আরেকটু ভালোভাবে জানার সুযোগ আমার হয়েছিল ২০০৫ কনফেডারেশন্স কাপ ও ২০০৬ বিশ্বকাপের সময়।” “যেভাবে তিনি কাজ করতেন, উষ্ণ-হৃদয়ের একজন মানুষ, বন্ধুবৎসল, হাসিখুশি, সঠিক সময়ে সিরিয়াস- তিনি আসলেই ছিলেন অনুপ্রেরণাদায়ী। তিনি যতটা ছিলেন, তার চেয়ে ভালো হওয়ার ভান কখনই করেননি। তিনি সবসময় জানতেন তার সাহায্য প্রয়োজন, বিশেষ করে একজন ম্যানেজার হিসেবে।” জীবনের পথে চলার শিক্ষাটাও বেকেনবাউয়ারের কাছ থেকে পেয়েছিলেন বলে জানালেন ক্লপ। দুই পরিবারের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল বলেও জানালেন এই জার্মান কোচ। “তিনি আমাকে এমন কিছু শিখিয়েছিলেন, যেটা আমার জীবনের জন্য প্রয়োজন ছিল, কিন্তু আমি ওই সময় জানতাম না: তুমি বিখ্যাত হতে পারো, গণমাধ্যমের শিরোনামে অনেকবার থাকতে পারো, সবাই তোমাকে নিয়ে কথা বলবে এবং (এরপরও) তুমি নিজের মধ্যেও থাকতে পারো।” বেকেনবাউয়ারের স্ত্রী হিল্ডির সঙ্গে ক্লপ নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন প্রিয় তারকার অসুস্থতার খোঁজখবর নিতে। এখন আর খবর নেওয়ার সুযোগ নেই। তবে সবকিছুর উর্ধ্বে চলে যাওয়া জার্মান গ্রেট অনন্তলোকে আরও ভালো থাকবেন বলে বিশ্বাস ক্লপের। “কয়েকমাস আগে একটা ফোন পেলাম এবং তখন তিনি সুস্থ ছিলেন, কিন্তু আপনারাও বুঝতে পারছেন তিনি খুব ভালো ছিলেন না, এখন তিনি ভালো জায়গায় আছেন।”