রাজশাহী-৫ আসনে নির্বাচনের আগে ও পরে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক এবং তাদের বাড়িতে হামলা-মামলার প্রতিবাদ জানিয়ে তা বন্ধের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনায় সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে এ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ওবায়দুর রহমান রাজশাহীর সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরতœ জননেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে ও নির্বাচন কমিশনের প্রতিশ্রুতি মোতাবেক জনগণের অংশগ্রহনমূলক নির্বাচন সফল করার লক্ষ্যে আমি রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দূর্গাপুর) সংসদীয় অসনে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি। নির্বাচনে প্রচার প্রচারণার শুরু থেকে আমার নেতা-কর্মীসহ আমাকে নৌকার প্রার্থী ও তার পক্ষের লোকজন বিভিন্নভাবে বাধা প্রদান করে এবং নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে নির্বাচনী আচরনবিধি লঙ্গন করে যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে উপস্থাপন হয়েছে। নির্বাচনের ফল পাল্টে দেওয়ার কথা বর্ণনা দিতে গিয়ে সংবাদ সম্মেলনে কান্নায় ভেঙে পড়ে ঈগলের প্রার্থী ওবায়দুর রহমান বলেন, ৮৬ হাজার ৯১৩ ভোট পেয়ে প্রকৃতপক্ষে আমিই জয়যুক্ত হয়েছি। আর নৌকার প্রার্থী আবদুল ওয়াদুদ দারা ৮৩ হাজার ৮৬২ ভোট পেয়েছেন। যা বিভিন্ন টেলিভিশনেও দেখানো হয়েছে। কিন্তু পরে ফল পরিবর্তন করে আমাকে পরাজিত ঘোষণা করা হয়। সংবাদ সম্মেলন থেকে এ আসনের ভোট পুনঃগণনার দাবি জানিয়ে ওবায়দুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে নির্বাচনের শুরু থেকে পুঠিয়া-দূর্গাপুর এলাকার সাধারণ জনগণ আমাকে সমর্থন দিয়ে আমার পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হলে তখন থেকে নৌকার প্রার্থী ও তার সমর্থকগণ বিভিন্ন ধরনের নীলনকশা আঁকতে থাকেন। নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আশার সাথে সাথে নৌকার প্রার্থী আবদুল ওয়াদুদ দারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে বিভিন্ন ধরণের অরজকতা সৃষ্টি করে। আমার কর্মী সমর্থকসহ সাধারণ ভোটারদের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করে এবং তাদের কর্মীগন প্রচার করেন যে ভোট যেই পাক দারা ভাই এমপি হবে এবং দারা নিজেও বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে ভোট শুরু হওয়ার সাথে সাথে নিজেকে নৌকার এমপি হিসেবে ঘোষণা দিতে থাকেন। বানেশ্বর ইসলামীয়া উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাড়াও ডিবিসি নিউজ চ্যানেলে প্রচারিত হয়েছে। যে কারণে, আমি জননেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে বলতে চাই নির্বাচনের আগ মুহুর্তে বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে তার পেটুয়াবাহিনী দিয়ে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সাধারণ ভোটারদের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি ও বিভিন্ন স্থানে আমার কর্মী ও সাধারণ ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে আসার পথ বন্ধ করে। এছাড়াও বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র হতে আমার ঈগল প্রতীকের পোলিং এজেন্টদের বেলা ১২ থেকে ১ টার মধ্যেই নৌকার এজেন্ট এবং নৌকার সমর্থকরা জোর পূর্বক বের করে দেওয়া হয় এতকিছুর পরেও পুঠিয়া-দূর্গাপুর সাধারণ জনগণ আমাকে নির্বাচিত করতে আমার ঈগল প্রতিকে ব্যাপক ভোট প্রদান করেন। প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ পুঠিয়া-দূর্গাপুর সংসদীয় আসনের জনগণ প্রকৃত পক্ষে আমাকে তাদের মূলবান ভোট প্রদান করলেও জনগণের বিপক্ষে ফলাফল ঘোষনা করে, আবদুল ওয়াদুদ দারাকে নির্বাচিত ঘোষনা করে যেটা কোনোভাবে সাধারণ ভোটারদের কাম্য ছিল না। পুঠিয়া-দূর্গাপুর সংসদীয় আসনের ভোটাররা আমাকে ভোট দেওয়ায় আবদুল ওয়াদুদ দারার লোকজন নির্বাচন পূর্ববর্তী ও পরবর্তী শিলমাড়িয়া ইউনিয়নে শক্তিপাড়া সংখ্যালঘু সম্পাদয়ের তন্ময় কুমার বেধরক মারপিট করে। বেলপুকুরিয়া ইউনিয়নের তাড়াশ গ্রামে আদিল, আয়ব আলী, জানে আলম, জাফর, বয়নুদ্দিন, শিহির আরো অনেকে হত্যার উদ্দেশ্যে হাসুয়া দিয়ে মাথায় আঘাত করে তারা উভয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসারত আছে। বিড়ালদহ গ্রামে মহিন ও হাতিনাদা গ্রামে আনারুলকে বর্তমান বাড়ি ছাড়া করেছে এবং প্রাননাশের হুমকি দিয়েছে। মটরসাইকেল যোগে বিভিন্ন স্থানে আমার কর্মী সমর্থকদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে। এতে আমার কর্মীরা ঘর থেকে বের হতে পারছে না। তিনি বলেন- দূর্গাপুর উপজেলার আলীপুর গ্রামের শফিকুলের পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে কয়েক লক্ষাধিক টাকার মাছ মেরে ফেলে ও পান বরজ হতে পান লুট করে নেয়। ঝালুকা ইউনিয়নের চৌপুকুরিয়া গ্রামের মহাতাজ মেম্বার, শফিকুল, আবদুল মোতালেব, পলাশ, শিমুল, চৌপুকুরিয়াগ্রামের সবাইকে বেধরখ মারপিট করে। বর্তমানে সবাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। দূর্গাপুর উপজেলা ৩নং পানানগর ইউনিয়নের লছর শাহ্র ছেলে আদম আলী, আলাউদ্দিন, মামুন শাহ, আজাহার চেয়ারম্যান ও কহিদুলের নেতৃত্বে নৌকার মিছিল নিয়ে তাদের বাড়িতে হামলা করে। ওই সময় বাড়ির জানালা দরজা ভাংচুর করে। এরপর খেরুর ছেলে ওহিরের প্রায় তিন বিঘা জমি মহিপাড়া আজিজের নেতৃত্বে দখল করে নেয়। এছাড়াও দুর্গাপুরের ৪নং দেলুয়াবাড়ি ইউনিয়নের আশিকুল, আবদুল মালেক সপ্না মেম্বারের বাড়িতে হামলা করে। আর ২নং কিসমতগনকৈড় ইউনিয়নের খোকন আলী, জুয়েল, আসাদুল ও আলিফের নেতৃত্বে তাদেরকে মারধোর করে গ্রাম ছাড়া করেছে। এখন পর্যন্ত তারা নিজ বাড়িতে ফিরতে পারে নাই। দূর্গাপুর পৌরসভা এলাকার শরিফ আজাহার, রোকন ও মজনুর নেতৃত্বে এবং দূর্গাপুর বাজারের মিলু, রেজাউল, সোহাগ, শাকিব, হায়দার, মোস্তাজ ও নিঝুমের নেতৃত্বে দূর্গাপুর বাজারে অবস্থিত আমার ঈগল প্রতিকের কর্মীদের দোকানে ও বিভিন্ন নেতা কর্মীর নাম ধরে হুমকি প্রদর্শক করে আসছে। এখনও দূর্গাপুর উপজেলার ৭নং জয়নগর ইউনিয়নের প্রভাষক মোজাম্মেল হকের পেটুয়াবাহিনী হুমকি ধামকি দিচ্ছে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হুমকি দিচ্ছে। যে কারণে আমার কর্মী সমর্থক এলাকার বাইরে মানবেতর জীবন যাপন করছে। এছাড়াও দূর্গাপুর থানার সামনের বাজারে উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের ছেলে বাদল ম-লকে সোহানের নেতৃত্বে ১০-১২ জন হামলা করে জখম করে এবং পৌরসভা যুবলীগের সেক্রেটারী আবুল বাসারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করে তার কর্মচারীদের হাট থেকে বের করে দেন। বর্তমানে এই দুই উপজেলার প্রতিটি গ্রামে আমার কর্মী সমর্থকরা আতংকের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। প্রশাসনকে বার বার অভিযোগ দেওয়ার পরেও কোন প্রদক্ষেপ নিচ্ছে না। তাই সাংবাদিকদের মাধ্যমে আমি বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরতœ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানাতে চাই, আপনার নির্দেশে নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ ও উৎসবমূখর করার লক্ষ্যে আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি। এতে আমার কোন ভুল হলে আমাকে ক্ষমা করবেন। সেই সাথে আবদুল ওয়াদুদ দারাকে এমন অরজাকতা কর্মকা- থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ প্রদানের অনুরোধ করছি।