ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের মেইন বাসষ্ট্যান্ড থেকে পুরাতন ব্রিজ, নিমতলা বাজার, থানা সড়ক পর্যন্ত যাওয়ার রাস্তাটি অত্যন্ত ব্যস্ততম এবং এসব সড়কে দুই পাশে ফুটপাতের ব্যবসায়ী, রিক্সা, ভ্যান ও ইজিবাইক চালকদের দখলে। অনেকে রঙ্গিন ছাতা স্থাপন করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। প্রতিনিয়ত ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারন মানুষ ও বিভিন্ন মার্কেটের ব্যবসায়ীদের। এসব দোকানে ক্রেতাদের ও ভিড় থাকে অনেকটা বেশি এবং প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত এসব দোকান পরিচালিত হয়। শহরের রাস্তার দু’পাশের ফুটপাতজুড়ে হকারদের জুতার দোকান, পুরাতন কাপড়, নতুন কাপড়, কসমেটিক, ফল, তালাচাবি, ফাস্ট ফুড, চায়ের দোকান, ছিট কাপড়, জুতার দোকানসহ নানা ধরনের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া ফার্নিচার ব্যবসায়ীদের ফুটপাতে ফার্নিচার বিক্রয়ের দোকান। এতে গোটা ফুটপাত সহ রাস্তা চলে গেছে রাস্তার পাশের দোকান ও কিছু ভাসমান হকারদের দখলে। ফলে কালীগঞ্জ শহরের প্রধান সড়ক গুলি সংকুচিত হয়ে পড়েছে এবং চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন পথচারীরা। অনেক সময় ঘটে থাকে ছোট বড় দূর্ঘটনা। শহরের মেইন বাসষ্ট্যান্ড থেকে পুরাতন বাজারে যেতে ফুটপাতে চলছে নানা ধরনের ব্যবসা। এ ছাড়া শহরের প্রতিটিা ফুটপাতে দেখা যায়, ভ্রাম্যমাণ হকারদের জুতার দোকানসহ ভ্যান, রিক্সা ও ইজিবাইকের যন্ত্রতন্ত্র পার্কিং। এসব ব্যবসায়িরা জানান, ফুটপাতে দোকান বসালে ও যেসব ব্যবসায়িদের দোকানের সামনে ফুটপাতে দোকান দিচ্ছে তাদের দিতে হয় প্রতিদিন নির্ধারিত টাকা। আবার অনেকের পরিজন বলে মোটা অংকের টাকা নিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে এসব ফুটপাতের দোকান বসানো হয়েছে। ফলে শহরটি কালীগঞ্জ পৌরসভার অধিনে হলে ও নগদ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও মার্কেট ব্যবসায়িরা। আবার শুক্রবার ও সোমবার হাটের দিতে হয় টাকার পরিমান বেশি যেহেতু এই দুই হাটের দিন দোকান বেশি বসানো হয়। কালীগঞ্জ শহরের পথচারীদের অনেকেই বলেন, মুলরাস্তা এবং ফুটপাত মানুষের চলাচলের রাস্তা কিন্তু বসানো হয়েছে দোকানপাট। আর এসবের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে স্থায়ী দোকান ব্যবসায়িরা। সড়কের রাস্তা কালীগঞ্জ পৌরসভার অধিনে হলে ও পৌর কর্র্তপক্ষ কিছুই পাচ্ছে না।এসব রাস্তা মেরামত ও সংস্কার করে থাকে পৌরসভা, আর অর্থ হাতাচ্ছে স্থায়ী দোকান মালিকরা। রাস্তার সাথে ফুটপাত জুড়ে বসেছে হরেক রকমের দোকান বসানোর কারণে রিকসা, ভ্যান,ইজিবাইকসহ বিভিন্ন যানবাহনের পাকিং করে থাকে। এসব কারণে সাধারণ পথচারীদের পড়তে হচ্ছে প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে। জনসাধারণের চলাচলের জন্য রাস্তার দু’ধারে রয়েছে অসংখ্য ফুটপাত। ফুটপাত দিয়ে হাঁটা পথচারীদের নাগরিক অধিকার কিন্তু ফুটপাতে হাঁটাও কেড়ে নিয়েছে অবৈধ দখলদারেরা। এসব রোধ করার জন্য এগিয়ে আসছে না কেউ।পথচারীরা বলছেন, ফুটপাত এখন দখলবাজদের কবলে রয়েছে রাস্তার দুই পাশে যেসব ফুটপাত রয়েছে তা বর্তমানে হকারদের দখলে, তাদের দোকানে সারা দিন ভিড় লেগেই থাকে। যে কারণে পথচারীদের হাঁটার কোনো সুযোগ নেই। এসব ফুটপাত দখল হয়ে যাওয়ায় বেশির ভাগ পথচারীই রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়া খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাড়িয়েছে। যে কারণে প্রতিনিয়ত যানজটেরও সৃষ্টি হতেই আছে।ফুটপাতে বসানো দোকান ব্যবসায়িরা বলছেন আমরা যে সব সস্থায়ী দোকান বা মার্কেটের সামনে বসে ব্যবসা করি সে ক্ষেত্রে মালিকগন যেভাবে নির্দেশ দেয় সেভাবেই আমাদের ব্যবসা করতে হয়, বেশি কিছু বললে মালিকরা আমাদের দোকান উঠিয়ে নিয়ে যেতে বলে। ফলে পরিবার পরিজনের কথা চিন্তা করে পেটের তাগিদে ও বেচে থাকার জন্য শত কষ্ট হলে ও আমরা এভাবে ফুটপাতে ব্যবসা করে থাকি। যেহেতু মোটা অংকের টাকা নেই যা দিয়ে ভাল একটি দোকান বা সপিং মার্কেটে দোকান নিতে পারবো। এ কারণে আমাদের এভাকে শতভাগ কষ্ট করে ব্যবসা চালিয়ে যেতে হয় কালীগঞ্জ শহরের ফুটপাতে। কালীগঞ্জ শহরের এসব রাস্তা খুুবই গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় সব সময় থাকে ব্যাস্ততম। এ শহরে রয়েছে মুনছুর প্লাজা শপিংমল, নেছা শপিং মল, ১০ তলা ওসমান রাশিদা মার্কেট, রহমানিয়া সুপার মার্কেট, ফাতেমা প্রাইভেট হাসপাতাল, চামড়ার আড়ত, ছন্দা নিছনেমা হল মার্কেট, কালিবাড়ি, নিমতলা বাজার, ব্যাংক, বীমা, কাচাবাজারসহ একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আবার ফুটপাত দখল হয়ে যাওয়ায় পথচারীর সঙ্গে সঙ্গে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন হাসপাতাল ও ক্লিনিকের রোগীরা। কারণ এই পথ দিয়েই যেতে হয় কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এদিকে ফুটপাত দখলের কারণে যানজট লেগে আছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ বলেন, ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা অধিকাংশ সবাই গরীব মানুষ। তারা দীর্ঘদিন ধরে ফুটপাতে ব্যবসা করে আসছেন। এতে ব্যবসায়ী এবং পথচারীদের সমস্য হচ্ছে এটা আমি জানি। আর এ সমস্যা দীর্ঘদিনের। আমি চেষ্ঠা করছি চলমান এই সমস্যার সমাধান করতে। ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের জন্য পৌরসভার পক্ষ থেকে একটি হকারস্ মার্কেট করার পরিকল্পনা রয়েছে। সেখানে তাদের স্থানান্তর করা হবে। আশা করি এই সমস্য সমাধান হবে। ইজিবাইক, ভ্যান রিক্সাসহ অন্যান্য যানবাহন রেখে যানজট সৃষ্টি না করার জন্য আমি সেখানে নিজে গিয়ে কয়েক বার তাদেরকে সরিয়ে দিয়েছি কিন্তু দুয়েকদিন পরিস্কার থাকলেও পুনরায় যানজটের সৃষ্টি করে। ব্যবসায়ী এবং পথচারীদের চলাচলের অসুবিধা যাতে না হয় তার জন্য রাস্তার মাঝখান দিয়ে একটি ডিভাইডার নির্মাণ করা হয়েছে।