গত কয়েক দিনের হাড় কাঁপানো শীতে কাহিল সাধারণ মানুষ। সরকারি ভাবে পীরগাছা উপজেলার ৯ টি ইউনিয়নে ২শত করে কম্বল বিতরণ করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপতুল্য। এদিকে শীতার্ত মানুষের মুখে হাসি ফোটানো এবং একটু উষ্ণতার পরশ ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে আমেরিকার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘নারিস বাংলাদেশ’। সংগঠনটির আয়োজন করেছে শীতকালীন কম্বল ড্রাইভ"। শুক্রবার শুক্রবার সকালে উপজেলার পীরগাছা সদর ইউনিয়নের সুখানপুকুরে দুই শতাধিক শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করেন সংগঠনটি। প্রবাসীদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে দেশের অসহায় মানুষগুলোর শীত নিবারণের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অসহায় মানুষগুলো। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে রংপুর নগরীর বিভিন্ন স্থানে অর্ধশতাধিক রাস্তার পাশে ছিন্নমূল শীতার্ত মানুষকে কম্বল বিতরণ করেন সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরা। এই ক্যাম্পেইনের প্রথম ধাপে তারা ২৭০ পরিবার কে কম্বল উপহার দিয়েছেন। কম্বল নিতে আসা মো. আনসার মিয়া (৬৫) বলেন, ‘‘হামরা তো গরিব মানুষ, দিন আনি দিন খাই। এই কম্বল খান প্যায়া খুব উপকার হইল। শীতের দিনোত এরাগুলো হামার পাশত আসি দাঁড়াইছে হামাক অনেক আনন্দ নাগছে। আল্লাহ ছাওয়াগুলার ভালো করুক’’। কম্বল হাতে কেঁদে ফেলেন সুশীল চন্দ্র রায় (৭৮) লাঠিতে ভর করে কম্বল নিতে মাঠে এসেছেন তিনি। সুশীল চন্দ্র বলেন, ‘তোমাক আশীর্বাদ করি। এত দুরত আসিয়া হামাক কম্বল দেনেন, খুব ভাল নাগিল’। সহিদা বেগম (৪৫) বলেন, ‘‘এইবার এলাও এইঠেনা কায়ো কম্বল দিবার আইসে নাই। তোমরায় দিলেন। কম্বলখান পাইয়া হামার খুব উপকার হইল’’। সংগঠনটির বাংলাদেশ থেকে ভেটেড ভলেন্টিয়ার মোঃ মুহতাসিম আবশাদ জিসান বলেন, ‘‘আমরা গত তিন বছর থেকে নারিশ বাংলাদেশ এর হয়ে বন্যা কবলিত, নদী ভাঙ্গনের শিকার মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। মানুষের ক্ষুধানিবারণ, কুরবানির ঈদে অসহায় মানুষের জন্য কুরবানি করা, শীতে শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো সহ অনেক কাজ করছে নারিশ বাংলাদেশ। সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে আসলে এই কাজগুলো করা আমাদের জন্য অনেক সহজ হবে বলে আমি মনে করি’’। নারিশ বাংলাদেশ এর প্রতিষ্ঠাতা আমেরিকান প্রবাসী ফারিস ভূইয়া বলেন, ‘‘নারিশ বাংলাদেশ তার নিবেদিতপ্রাণ স্বেচ্ছাসেবী কর্মী ও দাতাদের সহযোগীতায় সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা করে আসছে বাংলাদেশের সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়াবার। নারিশ বাংলাদেশের এই সামান্য উদ্যোগ এই তীব্র শীতে একটু হলেও স্বস্তি ও উষ্ণতা ছড়িয়ে দিতে পারবে মানুষের মাঝে।