বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলায় নির্বিচারে ফসলি জমিসহ খাস জমির মাটি কেটে বিক্রির মহোৎসব চলছে। রাতের আঁধারে স্থানীয় মাটি ব্যবসায়ী সংঘবদ্ধ চক্র কৃষকদের নামমাত্র মূল্য দিয়ে আবার অনেকের জমি থেকে জোরপূর্বক মাটি কেটে রমরমা ব্যবসা চালাচ্ছেন।
আজ শনিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার গুলিয়া, কল্যাণনগর, বিজরুল, নিনগ্রাম, রিধইলসহ বিভিন্ন স্থানে মালিকানা ফসলি জমি ছাড়াও সরকারি খাস জমি থেকেও গভীর গর্ত করে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া গুলিয়া গ্রামে সরকারি খাস জমিতে এক্সক্যাভেটর (ভেকু) মেশিন বসিয়ে মাটি কেটে পাঁচার করায় ওই জমি পুকুরে পরিণত হয়েছে। চিহ্নিত মাটি খেকো আবুল কাশেমসহ ৪-৫ জন ব্যবসায়ী রাতের আঁধারে ড্রাম ট্রাকে করে ওই জমির মাটি বিক্রি করেন বলে অভিযোগ করেন এলাকার বাসিন্দারা। প্রকাশ্যে মাটি কেটে বিক্রির হিড়িক চললেও রহস্যজনক কারণে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় প্রশাসনের নীরবতায় ক্ষোভ বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে।
জানা গেছে, বগুড়া জেলার কাহালু, গাবতলী, শিবগঞ্জ, শাজাহানপুর, শেরপুর উপজেলায় ভাটায় ইট তৈরীর জন্য এই উপজেলার মাটি উপযোগী হওয়ার কারণে ফসলের মাঠ থেকে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে সবচেয়ে বেশী। আমন ধান কাটর পর থেকেই কৃষক তাদের জমির উপরি ভাগ থেকে এক ফুট পরিমান মাটি বিক্রি করে দিচ্ছেন। সেই মাটি রাতের আধাঁরে এক্সেভেটর মেশিন দিয়ে কেটে ট্রাক যোগে চলে যাচ্ছে ইট ভাটায়।
কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায় তারা এক শতাংশ জমির এক ফুট মাটি বিক্রি করেন এক থেকে দেড় হাজার টাকায়। সেই মাটি ব্যবসায়ীরা ট্রাক যোগে ভাটায় পৌঁছে দিচ্ছে দ্বিগুন দামে। উত্তোলিত মাটি অর্ধশতাধিক ট্রাক্টর-মহেন্দ্র দিয়ে পাঁচার করা হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। ট্রাক্টর-মহেন্দ্রর বিরামহীন চলাচলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে নন্দীগ্রাম উপজেলার পাকা সড়ক। পাশাপাশি বিকট আওয়াজ আর ধুলাবালির কারণে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে আশপাশের জনজীবন।
থালতা মাজগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের ভূমি অফিসের নায়েব জমশের আলী বলেন, সরকারি জমি থেকে মাটি কাঁটার বিষয়ে শুনেছি। যে ব্যাক্তি সরকারি জমি ও ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে বিক্রি করছে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।
এপ্রসঙ্গে নন্দীগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ‘কোনো অবস্থায় ফসলি জমির মাটি বিক্রি করা যাবে না। যারা অবৈধভাবে মাটি কেটে বিক্রি করছে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুতই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’