বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে কলকাতার অলিগলি ঘুরে বেড়িয়েছেন জয়া আহসান। ক্লান্ত হয়ে পরে গিয়ে বসলেন একটি রেস্টুরেন্টে, দুপুরের খাবার খাবেন। ফোনের এপার থেকে শোনা যাচ্ছে, বন্ধুদের বলছেন তিনি কী কী খাবেন।
এমন হন্তদন্ত হয়ে কী করছেন ‘গেরিলা’ অভিনেত্রী? ‘আর বলবেন না! বাড়ি খুঁজে বেড়াচ্ছি।
মনমতো পাঁচ্ছি না’, আদুরে গলায় বললেন জয়া আহসান।
সেকি! দক্ষিণ কলকাতার যোধপুর পার্কের বাড়িটার কী হলো? ওখানে আর থাকছেন না! মন খারাপ করে জয়া বললেন, ‘বাড়িটা বেঁচে দিয়েছে ওরা।’ ওরা কারা? ‘কারা আবার! বাড়ির মালিক।’
ওপার বাংলায় জয়ার যত সাফল্য, কর্মমুখর বা কর্মহীন দিনযাপনের সঙ্গী দক্ষিণ কলকাতার যোধপুর পার্কের এই বাড়ি।
টালিগঞ্জের বাসিন্দাদের কত কত স্মৃতি জয়ার ফ্ল্যাটটি ঘিরে। লোকমুখে তো শোনা যায়, ওটা নাকি জয়ারই কেনা ফ্ল্যাট। গুঞ্জনের কথাটা বলতেই জয়া হাসলেন। তারপর ফোনের স্পিকারে দীর্ঘশ্বাস ছড়িয়ে বললেন, ‘আমরা কি আর এখানে বাড়ি কিনতে পারব!’ কেন? ‘বিদেশের মাটিতে বাড়ি কেনা এত সহজ নয়।
অনেক ঝক্কি-ঝামেলা।’
জয়া আহসান বাংলাদেশের মেয়ে, এখানেই তাঁর ঘরবাড়ি। কলকাতা তাঁর ‘সেকেন্ড হোম’। দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী তিনি, অভিনয়ের দাবিতে বছরের বেশির ভাগ সময় কলকাতায়ই কাটে তাঁর। ২০১৩ সালে ওপারের ছবিতে [আবর্ত] অভিষেক হয়েছিল তাঁর। তারপর এক দশক পার করেছেন ওপার বাংলার ইন্ডাস্ট্রিতে। ‘রাজকাহিনী’, ‘ভালোবাসার শহর’, ‘বিসর্জন’, ‘এক যে ছিল রাজা’, ‘বিজয়া’, ‘কণ্ঠ’, ‘রোববার ’, ‘বিনিসুতোয়’, ‘অর্ধাঙ্গিনী’ ও ‘দশম অবতার’-এর মতো ছবি করেছেন। করেছেন বলিউড ছবি ‘কড়ক সিং’, সামনের মাসেই মুক্তি পাবে ‘ভূতপরী’। ক্যারিয়ারগ্রাফ দেখলেই বোঝা যায় ওপারে ধীরে ধীরে কত শক্তপোক্ত করেছেন নিজের জায়গাটা। দীর্ঘ এই ক্যারিয়ারের অনেকটা সময়জুড়ে ভিনদেশে জয়ার সঙ্গী হয়েই ছিল যোধপুরের বাড়িটি। অন্য রকম একটা মায়া জন্মে গিয়েছিল, সেটা জয়াকে বেশ কষ্ট দিচ্ছে। মুখ ফুটে অবশ্য বলেননি সে কথা। তবে কথা শুনে বুঝতে বাকি রইল না। প্রায় চার বছর আগে পশ্চিমবঙ্গে যখন ঘূর্ণিঝড় আম্পান আছড়ে পড়েছিল, ঢাকায় বসে নিজের সাজানোগোছানো ফ্ল্যাটটির কথাই সবার আগে মনে পড়েছিল জয়ার। শুধু তা-ই নয়, সে সময় করোনার কারণে প্রায় ৯ মাস ঢাকায় ছিলেন জয়া। দুই দেশের মধ্যে বিমান চলাচল শুরু হওয়ার পর বিমানের প্রথম দিকের যাত্রী হয়ে গেলেন ওপারে। যোধপুরের ফ্ল্যাটটি নিজ হাতে পরিষ্কার করে জানালা খুলে যখন চা হাতে বসলেন, পাশ থেকেই কানে এলো সেই পরিচিত পাখির ডাক। গণমাধ্যমে সেদিনের অনুভূতির কথা জানিয়েছিলেন জয়া নিজেই। দীর্ঘদিনের সেই ঠিকানা ছেড়ে এবার নতুন ঠিকানায় উঠতে হবে অভিনেত্রীকে। তাই নেমেছেন নতুন ঠিকানার সন্ধানে।