তীব্র শীত আর ঘন কুয়াশায় উষ্ণতা পেতে আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ হয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নাসরিন বেগম (৩৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। রোববার (১৪ জানুয়ারি) সকালে হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে মারা যান ওই নারী। এর আগের দিন শনিবার সকালে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার বাসিন্দা আমেনা বেগম (৬০) সেখানে চিকিৎসাধী অবস্থায় মারা যান। তিনি পীরগাছা উপজেলার গোয়ালু গ্রামের মৃত জালাল উদ্দিনের স্ত্রী। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে অগ্নিদগ্ধ দুজন রোগীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আ. ম. আখতারুজ্জামান। বর্তমানে হাসপাতালের বার্ন ইউনিট এবং সার্জারি, শিশু ও মহিলা ওয়ার্ডে ৪২ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। জানা গেছে, কনকনে শীতে খড়কুটো জ¦ালিয়ে আগুন পোহাতে গিয়ে ৪৪ জন দগ্ধ রোগীর মধ্যে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে রংপুরসহ আশপাশের জেলা-উপজেলা থেকে এসব দগ্ধ রোগী ভর্তি হয়েছেন। এরমধ্যে গত ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এর একজন হলেন রংপুর নগরের তাজহাট এলাকার বাসিন্দা নাসরিন বেগম (৩৫)। অন্যজন পীরগাছা উপজেলার আমেনা বেগম (৬০)। হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ দিনের ব্যবধানে (রোববার দুপুর পর্যন্ত) শীতে আগুন পোহানোসহ গরম পানি ব্যবহার করতে গিয়ে দগ্ধ হয়ে রোগী ভর্তি হন ৪৪ জন। এর মধ্যে বর্তমানে বার্ন ইউনিটে ১১ জন এবং সার্জারি, শিশু ও মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন ৩১ জন। চিকিৎসাধীনদের মধ্যে বেশির ভাগই নারী ও শিশু। বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের চিকিৎসক ফারুক আলম জানান, চিকিৎসাধীন রোগীদের শরীরের ১০ থেকে ৪৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। অল্প কয়েক দিন হলো এ অঞ্চলে কনকনে শীত পড়েছে। শীত থেকে রেহাই পেতে গ্রামাঞ্চলের মানুষজন খড়কুটোয় আগুন জ¦ালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করেন। সেই সঙ্গে গরম পানির ব্যবহারও বেড়ে যায়। অসাবধানতার কারণে এসব দুর্ঘটনা ঘটছে। তাঁরা সাধ্যমতো দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আ. ম. আখতারুজ্জামান জানান, অগ্নিদগ্ধ হয়ে বর্তমানে মোট ৪২ রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। এর মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু। ২৪ ঘণ্টায় দুজন নারীর মৃত্যু হয়েছে। প্রতি শীত মৌসুমে এ রকম অগ্নিদগ্ধের ঘটনা ঘটছে। এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো দরকার।