ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে হত্যার উদ্যেশ্যে মারধর ও ৬ লাখ টাকা চুরির অভিযোগে থানায় মামলা করেছেন অরূয়াইল ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু তালেব। গত রোববার পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৮ জনকে আটক করলেও গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে ১ জনকে। প্রতিপক্ষের লোকজন বলছেন বাকি ৭ জনের মধ্যে ৩ জনকে ক্ষমতার প্রভাবে ও বিশেষ তদবিরে অভিভাবকের জিম্মায় ছেড়ে দিয়েছেন। আর ১৫১ ধারায় চালান দিয়েছেন ৪ জনকে। আমরা থানা পুলিশের কাছেও যেতে পারছি না। সবই ক্ষমতা আর টাকা। মামলায় সাবেক ছাত্রদল নেতাসহ ৩০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। আর অজ্ঞাতনামা আসামীর সংখ্যা হচ্ছে ‘আরো অনেকে।’ তাই আতঙ্কে রাতে গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র সরে গেছেন রানিদিয়া গ্রামের পুরূষরা। মামলা, পুলিশ ও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, পুলিশ কোটি টাকা মূল্যের স্টীল বডি নৌকা নিয়ে রানিদিয়া গ্রামের মমিন (৩৫) ও ফারূকের বিরোধ নিস্পত্তি করার দায়িত্ব দিয়েছিলেন আ.লীগ নেতা আবু তালেবকে। মমিনদের কথা ছিল নিজ গ্রামের লোকজন নিয়ে বসে নিস্পত্তি করবেন। কিন্তু আবু তালেব তা মানতে নারাজ। তিনি নৌকাটি তার জিম্মায় নিতে চেয়ে ব্যর্থ হন। তাই মমিনদের উপর চড়াও হন তালেব। এর থেকে সূত্রপাত হয়েছে গত রোববার আবু তালেব ও রানিদিয়া গ্রামের মমিনদের মধ্যে সংঘর্ষের। ওই সংঘর্ষে আহত হয়েছে ১৫ জন। এরমধ্যে গুরূতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন আবু তালেবের স্বজন সাবেক ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম। মামলায় বলা হয়, নৌকাটি তালেবেরে জিম্মায় দেয়ার সিদ্ধান্ত হওয়ার ২ মাস পরও দেননি মমিন। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে মমিনের উপর চড়াও হয় তালেব। এরই জের ধরে মমিন একদল লোক নিয়ে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে রফিকুলের কনফেকশনারী দোকানে গিয়ে হামলা ভাংচুর মারধর ও লুটপাট চালায়। তাদের উপর্যুপরি আঘাতে গুরূতর আহত হন রফিকুল ও খোকন। রফিকুলকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে অবস্থার অবনতি দেখে চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন আছে রফিকুল। দোকানের ক্যাশ ও রফিকুলের কাছ থেকে দুই জনে ৬ লক্ষাধিক টাকা চুরি করে নিয়ে গেছেন। এ ঘটনায় আ.লীগ নেতা আবু তালেব বাদী হয়ে ৩০ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরো অনেকে বলে গত রোববার রাতে সরাইল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। এই মামলায় অরূয়াইল ইউপি ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি বাদল মিয়া, ৩ বৃদ্ধ মুসলিম উদ্দিন (৫৮), খালেক (৫৯), রশিদ মিয়া (৬০) ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়-য়া ছাত্র সোহাগ মিয়াকে আসামি করা হয়েছে। মুমিনের পিতা মুসলিম উদ্দিন মুঠোফোনে বলেন, আমাদেরকে লুটপাট করতে আবু তালেব মিথ্যা মামলা করেছে। বিষয়টি আমাদের গ্রামের। সালিসে বসিয়ে দেয়ার শর্তে ফারূক তালেবকে ১ লাখ টাকা দিয়েছে। আমরা তার দাবীকৃত টাকা দেয়নি। মামলার বিষয় গুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমরা থানার কাছেও যেতে পারছি না। তালেবের মাধ্যমে সব জায়গায় ফারূকের আধিপত্য। সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম আটক ৮ জনের মধ্যে ৩ জনকে অভিভাবকের জিম্মায় ছেড়ে দেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, মুখলেছ নামের একজনকে গ্রেপ্তার ও ৪ জনকে ১৫১ ধারায় চালান দেয়া হয়েছে। বর্তমানে ওই এলাকার পরিস্থিতি শান্ত আছে।