বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ভীতি-ত্রাসে তাড়াহুড়ো করে ক্ষমতা নবায়নে অবৈধ শপথ নিতে গিয়ে আইন-কানুন ও সংবিধানের কবর রচনা করা হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। রিজভী বলেন, সংবিধানের ৭২ (৩) অনুচ্ছেদে বলা আছে, রাষ্ট্রপতি আগে ভেঙে না দিয়ে থাকলে, প্রথম বৈঠকের তারিখ থেকে পাঁচ বছর অতিবাহিত হলে সংসদ ভেঙে যাবে। যেহেতু রাষ্ট্রপতি সংসদ ভেঙে দেননি, তার মানে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত একাদশ সংসদের যারা সংসদ সদস্য, তারা সংসদ সদস্য হিসেবে আছেন। তিনি বলেন, দেশের আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ মুহূর্তে দেশে মিডনাইট একাদশ সংসদের ৩৫০ জন, আর ডামি দ্বাদশ সংসদের ২৯৮ জন মোট ৬৪৮ জন শপথবদ্ধ এমপি রয়েছেন। এখন রাষ্ট্রপতি সংসদ ডাকলে দুই সংসদের সদস্যরাই তাতে যোগ দিতে পারেন। অথচ এটি সাংবিধানিকভাবে অবৈধ। তিনি আরও বলেন, আগামী ২৯ জানুয়ারি একাদশ সংসদের মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ অরাজকতা থাকবে। এটি চরম সাংবিধানিক লঙ্ঘন। গণতন্ত্র ও দেশের স্বার্থে এ সময়ের মধ্যে অবৈধ দ্বাদশ সংসদ বাতিল করে দিতে পারেন উচ্চ আদালত। জনগণের প্রত্যাশা শেষ আশ্রয়স্থল আদালত তাদের যুগান্তকারী ভূমিকা নিতে পারেন। রিজভী বলেন, বর্তমানে দুটি সংসদ বহাল অর্থাৎ প্রতি আসনে এখন দুজন করে এমপি। সত্যিই সেলুকাস, কী বিচিত্র এই দেশ বানিয়েছেন। অবৈধ শপথে অবৈধ সংসদের অবৈধ কার্যক্রম এবং অবৈধ মন্ত্রিপরিষদের কোনো অন্যায্য আদেশ-নির্দেশ দেশের জনগণ মানতে বাধ্য নয়। আওয়ামী লীগের গোটা শাসনামল দুর্নীতি, মহা হরিলুট, মহা সম্পদ পাঁচার ও মহা মাফিয়া চক্র কবলিত। বিএনপির এ নেতা বলেন, পেশিশক্তির বলে মানবাধিকার, সংবিধান ও গণতন্ত্রের জীবন্ত পোস্টমর্টেম করা হয়েছে। আইন-কানুন নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে আওয়ামী গেস্টাপোদের হাতে। বিএনপির এই নেতা বলেন, দেড় দশক ধরে দেশের ভোটবঞ্চিত মানুষের প্রাণ তড়পানো মৌলিক দাবি-নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন। কিন্তু শেখ হাসিনা ও তার লুটেরা পরিষদবর্গ সংবিধানের দোহায় দিয়ে একটির পর একটি বিনা ভোট, নিশি ভোট, ডামি নির্বাচন করে ক্ষমতা দখল করে দেশে জংলি আইনের শাসন কায়েম করেছে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার যেমন খুশি তেমন শাসনের বাকশাল রাজ্যে বিচার বিভাগ, প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা সব কিছুই তার অঙ্গুলি নির্দেশে পরিচালিত হচ্ছে। পেশীশক্তির বলে মানবাধিকার, সংবিধান ও গণতন্ত্রের জীবন্ত পোস্টমর্টেম করা হয়েছে। আইন-কানুন নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে আওয়ামী গেষ্টাপোদের হাতে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন, আপনি যদি আবারো প্রমাণ চান ৩০০ সংসদীয় নির্বাচনী আসনে শুধুমাত্র প্রার্থী আপনি এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। নির্বাচনে সারাদেশে তারেক রহমান যদি আপনি শেখ হাসিনার চেয়ে দ্বিগুন ভোট বেশি না পান, তাহলে কথা দিচ্ছি, আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব। শেখ হাসিনাকে বলছি, সাহস থাকলে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করুন। দেশের অবিসংবাদিত নেতা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে খিস্তিখেউড় বন্ধ করুন। সংবাদ সম্মেলনে রিজভী জিয়াউর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে দুদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।