রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় মধ্যরাতে মুক্তার হোসেন নামে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে পেট্রল ঢেলে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সংবাদ পেয়ে চারঘাট ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়দের যৌথ চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ফলে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পায়। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার শলুয়া ইউনিয়নের চামটা এলাকার একটি পাকা বাড়িতে এ অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। আগুন দেওয়া বাড়িটির মালিক মুক্তার হোসেন সদ্য শেষ হওয়া জাতীয় নির্বাচনে আ'লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী শাহরিয়ার আলমের কর্মী হিসাবে এলাকায় কাজ করেছেন। চারঘাট ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের টিম লিডার মোতাহার আলী জানান, পেট্রোল দিয়ে আগুন লাগানো হয়েছে। প্রাথমিক অবস্থায় আগুনের বিষয়টি তাদের কাছে নাশকতামূলক কর্মকা- মনে হয়েছে। গোয়ালঘর, রান্নাঘর ও বসতঘর আগুনে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে জানান তিনি। স্থানীয়রা জানান, রাত আনুমানিক ২টার দিকে আগুনে পোড়ার পটপট শব্দ এবং বৈদ্যুতিক তার বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পেয়ে ওই বাড়িতে ছুটে যান তারা। এ সময় ভেতর থেকে চিৎকার আসছিল। বাহির থেকে বাড়ির দুই গেটই লক করা ছিল। এজন্য ভেতর থেকে কেউ বের হতে পারছিল না। বাড়ির রান্না ঘর ও বসত ঘরের পাশের বেলকনিতে আগুন জ্বলছিল। এলাকাবাসী এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। পরে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নেভাই। ততক্ষণে রান্না ঘরের চালা, কাঠের খড়ি, চাল, ডালসহ প্রয়োজনীয় সব জিনিস পুড়ে যায়। বসত ঘরের বেলকনির পুরো অংশও পুড়ে গেছে এবং পুরো বাড়ি পেট্রোলের গন্ধে সয়লাব হয়ে গেছে। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বাড়িক মালিক মুক্তার হোসেন বলেন, আমার এক তলা বাসায় পরিবারের সবাই থাকি। রাত ঠিক ২টার দিকে আগুন আগুন চিৎকার শুনে আমাদের ঘুম ভেঙে যায়। পরে দেখি দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে বেলকনি থেকে ঘরের ভেতরের দিকে আসছে। পেট্রোলের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছিল। সবার চিৎকারে আশপাশের মানুষজন ও ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে। আগুনে বাড়ির দুইটি বৈদ্যুতিক মিটারও পুড়ে যায় বলেও জানান তিনি। মুক্তার হোসেন অভিযোগ করেন, নৌকার পক্ষে মাঠে নেমে প্রচারণা শুরুর পর থেকেই স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি আমাকে নানা ভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছিল। ভোট নিয়ে স্থানীয় এক ইউপি সদস্যসহ কয়েকজনের সাথে ঝামেলাও হয়েছিল। তখন তারা দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিল। সেই সব সন্ত্রাসীরাই আমাকে ও পরিবারের সদস্যদের হত্যাসহ আমার বাড়িটি পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টা করেছে। অভিযুক্তদের নামগুলো আমি প্রশাসনকে জানিয়েছি। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাই। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক। আগুন নেভাতে একটু দেরি হলেই পরিবারের সদস্যরা হয়তো প্রাণে মারা পড়তো। মুক্তার আ'লীগের একনিষ্ঠ কর্মী। জড়িতদের খুঁজে বের করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনকে জানিয়েছি। চারঘাট মডেল থানার ওসি তদন্ত আফজাল হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, প্রাথমিক তদন্তে বোঝা গেছে, বাড়িটিতে পেট্রল দিয়ে আগুন দেওয়া হয়েছে। অধিকতর তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।