ঝিনাইদহের শৈলকূপায় ইরি-বোরো মৌসুমে ধান রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। আমন ধানের লোকসান পোষাতেই এবার ইরি-বোরো ধান চাষে ঝুঁকেছেন কৃষকরা। ইতোমধ্যে উপজেলাজুড়ে লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৫০ ভাগ জমিতে ধান রোপণ করা শুরু হয়েছে। শীত উপেক্ষা করে কাকডাকা ভোর থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত কোমর বেঁধে মাঠে কাজ করছেন চাষিরা। এ দিকে শ্রমিক ও বাজারে ডিজেল তেল ও কীটনাশক ওষুধের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ধান আবাদে বিঘা প্রতি অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে প্রায় চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা। শৈলকুপা উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে চলতি মৌসুমে উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১১হাজার ৭শ ৭০ হেক্টর জমিতে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন। বোরো আবাদের জন্য বীজতলা তৈরি করতে এ উপজেলায় সরকারিভাবে বিনামূল্যে প্রণোদনা হিসেবে ৯ হাজার ৫শ জন কৃষককে উফশি জাতের পাঁচ কেজি করে ধানের বীজ ও ১০ কেজি এমওপি ও ১০ কেজি ডিএপি সার দেয়া হয়। এ ছাড়াও ৪শতাধিক জন কৃষককে দুই কেজি করে উন্নত জাতের হাইব্রিকেট ধানের বীজ দেয়া। তবে গত মৌসুমে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে এবার বোরো ধান আবাদ হচ্ছে। চলতি বোরো মৌসুমে ব্রীরি২৮,৫০,বঙ্গবন্ধু ১০০, বিধান ৮৯,৯২ও ৭৪ সহ বিভিন্ন জাতের ধান আবাদ করেছে। এসব ধানে ফলন বেশি হয় বলে কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে। কৃষকরা জানান, বাজারে আমন মৌসুমের ধানের দাম ভালো না পাওয়ায় কৃষকরা লোকসানের মুখে পড়েছেন। এ বছর আমন ধানের ফলন ভালো হলেও বাজারে তেমন দাম না পাওয়ায় বেশ লোকসানের মুখে পড়েন তারা। ফলে আমনের লোকসান পুশাতেই এবার ইরি-বোরো ধান চাষে ঝুঁকেছেন কৃষকরা। উপজেলার ধলহরাচন্দ্র গ্রামের কৃষক সফিউল ইসলাম,ছোট ধলহারা গ্রামের শহিদুল ইসলাম, হাট ফাজিলপুর গ্রামের বকুল বিশ্বাস সহ অনেকেই জানান, গত কয়েক বছরের তুলনায় বর্তমানে ধান উৎপাদন খরচ বাড়লেও বাজারে ধানের দাম কম পাওয়া গেছে। তাই কৃষকরা সব ক্ষতি পোষাতেই ইরি-বোরো ধান চাষে বেশি ঝুঁকেছেন। ইতোমধ্যেই উপজেলার অধিকাংশ জমিতেই ধান রোপন করেছেন কৃষকরা। কৃষকরা জানান, বাজারে শ্রমিক, ডিজেল তেল, সার ও কীটনাশক ওষুধের দাম বৃদ্ধি হওয়ায় কৃষকদের ধান চাষে বিঘা প্রতি প্রায় চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা অতিরিক্ত খরচ গুনতে হচ্ছে। এসবের দাম কমে গেলে কৃষকরা ধান চাষে অধিক লাভবান হবেন বলে আশা করছেন তারা। শৈলকুপা উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ আরিফুজ্জামান জানান, ইরি-বোরো ধান চাষে কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি অফিসাররা কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে আসছে। এবার চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১১ হাজার ৭শ৭০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই লক্ষ্যমাত্রার ৩০ ভাগ জমিতে ধান রোপণ করা হয়ে গেছে। আশা করছি, এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষ করবে কৃষক।