শুরুটা হয় ফুটবল মাঠে গড়ানোর আগেই, আতলেতিকো মাদ্রিদের স্টেডিয়াম ওয়ান্দা মেত্রোপলিতানোর গেটে। স্বাগতিক দলের কয়েকজন সমর্থক চিৎকার করে বলছিল, ‘ভিনিসিউস, তুমি বানর।’ গত সেপ্টেম্বরের ডার্বিতেও একই অভিজ্ঞতা হয়েছিল রেয়াল মাদ্রিদের এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের। মাঝে অনেক জল গড়ালেও পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। স্পেনের মাঠে ফের বর্ণবাদী আচরণের শিকার হলেন ভিনিউস। গত বছর জানুয়ারিতে রেয়ালের অনুশীলন মাঠের সামনে একটি সেতুতে ভিনিসিউসের জার্সি পরানো একটি কালো প্রতিকৃতি ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এই ঘটনায় চারজনকে আটক করা হয়। পরে বড় অঙ্কের জরিমানা করা হয় এবং সব ধরনের ভেন্যু থেকে তাদেরকে নিষিদ্ধ করা হয় দুই বছরের জন্য। এরপরও থামছেন না আতলেতিকোর উগ্র সমর্থকরা। ফের ভিনিসিউসকে লক্ষ্য করে বর্ণবাদী শ্লোগান দিয়েছেন তারা। এবার যেন আরও উন্মত্ত ছিলেন তারা, আক্রমণ করেছেন একজন টেলিভিশন ক্যামেরাম্যানকে। খেলা শুরুর বাঁশি বাজার পর থেকে পুরোটা সময় আতলেতিকোর সমর্থকরা উত্ত্যক্ত করেছে ভিনিসিউসকে। একটু পর দিয়েছেন দুয়ো। ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড বল স্পর্শ করা মাত্রই বাড়তে থাকে তাদের গলার জোর। প্রথমার্ধে একপর্যায়ে গ্যালারির দিকে ইশারা দিয়ে রেফারিকে কিছু একটা দেখাচ্ছিলেন ভিনিসিউস। তাতে খুব একটা গা করেননি রেফারি। প্রতিবাদ করায় উল্টো দেখান হলুদ কার্ড। ব্যাপারটা একদমই পছন্দ হয়নি রেয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তির। “ধীরে ধীরে সে শিখবে। খুবই প্রতিন্দ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচ ছিল, অনেক লড়াই চলছিল। কখনও কখনও সবসময় মাথা ঠাণ্ডা রাখা সম্ভব হয় না। এই ব্যাপারটা বোধগম্য।” গত কয়েক মাস ধরে অনেকবারই প্রতিপক্ষের মাঠে বর্ণবাদী আচরণের শিকার হয়েছেন ভিনিসিউস। এর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া এই ফরোয়ার্ডকে আনা হয়েছে ফিফার বর্ণবাদ বিরোধী কমিটির নেতৃত্বে। আগামী মার্চে বর্ণবাদ বিরোধী প্রচারণার অংশ হিসেবে ‘একই ত্বক, উভয় দেশ’ স্লোগান নিয়ে রেয়ালের মাঠে মুখোমুখি হবে স্পেন ও ব্রাজিল। এর আগে মেত্রোপলিতানোয় এই তিক্ত অভিজ্ঞতা আবারও বুঝিয়ে দিল, ফুটবলে বর্ণবাদের শেকড় অনেক গভীরে।