নাটোরের বড়াইগ্রামে সোমবার স্কুল ছাত্রদের ভলিবল খেলার দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে কয়েন ও ধানাইদহ গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ঘের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় নাটোর-পাবনা মহাসড়কসহ পুরো এলাকা রণক্ষেত্র পরিণত হয়। এই ঘটনায় ৫ জন আহত হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ সময় ধানাইদহের লোকজন প্রতিপক্ষরা তাদের উপর গুলি বর্ষণ করেছে বলে দাবি করলেও এ বিষয়টি সত্য নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে ধানাইদহ গ্রামের পটু আলীর ছেলে ওমর আলী (৬৫) কে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ফয়েজ উদ্দিন মালিথার ছেলে মামুন মালিথা (৩৫), লোকমান হোসেনের ছেলে সাহাবুল ইসলাম (৩৫) কয়েন গ্রামের হাসেন আলীর ছেলে আবদুর রহমান (৩০), মৃত কোরবান আলীর ছেলে রাজু আহম্মেদ (৩৬) কে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি ও চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পাঁচবাড়িয়া উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ভলিবল খেলা নিয়ে ধানাইদহ গ্রামের উকিল আলীর ছেলে মিল্টন হোসেনের (১৫) সাথে কয়েন গ্রামের রবিউলের ছেলে আজিজুল ইসলামের (১৫) দ্বন্দ্ব হয়। এ সময় ধানাইদহ গ্রামের কয়েকজন আজিজুল ইসলামকে মারপিট করে। আজিজুল বাড়ি ফিরে গিয়ে বিষয়টি জানালে কয়েন গ্রামের মৃত কোরবান আলীর ছেলে রাজু আহমেদের নেতৃত্বে ১৫-২০ জন ওই বিদ্যালয়ের ছাত্র ও ধানাইদহ গ্রামের সিফাত, আতাউর, শাহরিয়ার ও শাওনকে মারপিট করে। মারপিটের শিকার এসব ছাত্ররা বাড়িতে গিয়ে জানালে ধানাইদহ গ্রামের শতাধিক মানুষ কয়েন বাজারে এসে জড়ো হয়। এ সময় কয়েন গ্রামের দেড়-দুই শ' মানুষ সংঙ্ঘবদ্ধ হয়ে বাজারে এলে উভয় পক্ষ লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে কয়েন বাজার ও ধানাইদহ ব্রীজ এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বন্ধ হয়ে যায় মহাসড়কসহ দুই এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ও কয়েকশ দোকানপাট। এ সময় দুই গ্রামের পাঁচজন আহত হয়। পরে খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ আল রাজীব, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভুমি) বোরহান উদ্দিন মিঠু পুলিশসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। এ সময় ধানাইদহ গ্রামের লোকজন মাইকিং করে পুনরায় লোক সমাগম করলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ধানাইদহ গ্রামের মামুন মালিথা জানান, আমাদের কয়েকজন শিক্ষার্থী স্কুলে গিয়ে মারপিটের শিকার হয়। আমরা বিষয়টি জানতে গেলে কোরবান আলীর ছেলে রাজু আহমেদ অস্ত্র (পিস্তল) বের করে গুলি করে। গুলিটি আমার মাথা ছুঁয়ে বের হয়ে যায়। আমরা এই ঘটনার জন্য রাজুকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবী করছি। রাজু আহম্মেদ গুলি করার বিষয়টি সত্য নয় দাবি করে বলেন, ধানাইদহ গ্রামের লোকজন সব সময় আমাদের উপর অত্যাচার করে। সকালে আমাদের একজনকে মারপিট করে। আমি প্রতিবাদ করলে তারা আমাদের উপর হামলা করেছে। বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শফিউল আজম খান বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন রয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মারামারি হলেও গুলি ছোঁড়ার ঘটনা ঘটেনি