চপস্টিক দিয়ে একটি একটি করে মিনিটে ২৭টি ভাত খেয়ে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লিখিয়ে সনদ হাতে পেয়েছেন বরিশালের মেয়ে নুসরাত জাহান নিপা। অতিসম্প্রতি বিষয়টি নগরীতে ছড়িয়ে পরলে নিপার বাড়িতে গণমাধ্যম কর্মীদের ভিড় লেগেই রয়েছে। এনিয়ে দুটি রেকর্ড করে গিনেস বুকে নাম লিখিয়েছেন নিপা। প্রথমবার এক মিনিটে ৭১টি কয়েন দিয়ে টাওয়ার তৈরি করার রেকর্ড গড়েছিলেন নিপা। দ্বিতীয়বার চপস্টিক দিয়ে ভাত খেয়ে রেকর্ড গড়েছেন নুসরাত জাহান নিপা। নিপার রেকর্ডগুলো সংরক্ষিত রয়েছে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের সাইটে। নিপা বলেন, ২০২২ সালে এক মিনিটে ৭১টি কয়েন দিয়ে টাওয়ার তৈরি করে বিশ্বরেকর্ড করেছিলাম। তখনও ইতালিকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ এবং এবারও ইতালির রেকর্ড ভাঙা হয়েছে। এক মিনিটে ২৫টি ভাত খেয়ে ইতালির এক নাগরিক গিনেস ওয়ার্ল্ড বুকে রেকর্ড করেছিলেন। আর সেই রেকর্ডটি আমি ভেঙেছি। কয়েনদিয়ে বিশ্ব রেকর্ডের থেকে চপস্টিক দিয়ে বিশ্বরেকর্ড করাটা বেশ কঠিন ছিল। তিনি আরও বলেন, অনেক প্রাকটিস করতে হয়েছে। তবে এবার যাচাই-বাছাই শেষে সার্টিফিকেট পেতে অনেকটা সময় লেগেছে। একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কর্মরত নিপা বলেন, প্রথম রেকর্ড করার পর মানুষ নানাভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মন্তব্য করেছে। মূলত ইউটিউব দেখেই এসব ধারণা পেয়েছি। সামনে আরো নতুন কিছু করার চেষ্টা করবো। বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে রিপ্রেজেন্ট করাই হচ্ছে আমার মূল লক্ষ্য। তিনি আরও বলেন, ইচ্ছে থাকলে সব হয়। যেমন-আমার খেলাধুলার বেশ শখ, তবে বরিশালে মেয়েদের জন্য তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই ঘরে বসেই বিশ্বে বাংলাদেশকে রিপ্রেজেন্ট করার চেষ্টা করছি। আমার শহর বরিশালকে আমি রিপ্রেজেন্ট করার চেষ্টা করেছি। দুইবার বিশ্বরেকর্ড গড়েছি। এতে করে বাংলাদেশ ও বরিশালের নাম উজ্জ্বল করেছি। অনেক ধরনের বাঁধা আসবে জানিয়ে নিপা বলেন, নারীরা কাজ করতে গেলে সমস্যাটা বেশিই থাকে। নিপা জানান, প্রথমে ২০২২ সালে রেকর্ড করেছি। দ্বিতীয়টি ২০২৩ সালের মার্চের দিকে করলেও অতিসম্প্রতি সনদ হাতে পেয়েছি। নুসরাত জাহান নিপা বরিশালের এআরএস স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও সরকারি মহিলা কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিকপাস করেন। তিনি সরকারি ব্রজমোহন কলেজ থেকে রসায়নে অনার্স ও মাস্টার্স করেছেন। ভাত খাওয়ার রেকর্ড নিয়ে নিপা বলেন, এক মিনিটে ২৫টি ভাত খেয়ে ইতালির এক নাগরিক গিনেস ওয়ার্ল্ড বুকে রেকর্ড করেছিলেন, আর সেই রেকর্ডটি আমি মিনিটে ২৭টি ভাত খেয়ে ভেঙেছি। কয়েন দিয়ে বিশ্ব রেকর্ডের থেকে চপস্টিক দিয়ে বিশ্ব রেকর্ড করাটা বেশ কঠিন ছিল বলেও নিপা উল্লেখ করেছেন। নগরের দক্ষিণ সাগরদী এলাকার বাসিন্দা দেওয়ান আবদুর রশিদ ও গৃহিণী পারভীন বেগমের একমাত্র মেয়ে নুসরাত জাহান নিপা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় (এনডিও) চাকরি করছেন। সেই সঙ্গে অনলাইনের একটি প্ল্যাটফর্মে নিজেকে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে যুক্ত রেখেছেন। বেসরকারি একটি ব্যাংকের কর্মকর্তা কাজী সামসুজ্জামানের সাথে নিপার বিয়ে হওয়ার পর স্বামীর সাথে নগরীর নথুল্লাবাদ সংলগ্ন লুৎফর রহমান সড়কে বসবাস করছেন নিপা। পর পর দুইবার গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লিখিয়ে সনদ পাওয়ায় উচ্ছ্বসিত নিপার স্বামী, বাবা-মা ও শোভাকাঙ্খীরা।