শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) ছিল আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস। গত ২০০৯ সালে ওয়ার্ল্ড কাস্টমস অর্গানাইজেশন (ডব্লিউসিও) ২৬ জানুয়ারিকে কাস্টমস দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। তখন থেকে বাংলাদেশসহ ডব্লিউসিও সদস্যভুক্ত ১৮৫টি দেশে একযোগে দিবসটি উদ্যাপন করা হয়। সারাদেশের মতো রাজশাহীতেও নানা কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে দিবসটি উদ্যাপিত হয়েছে। দিবসটিতে এবার ‘মিলে নবীন-পুরানো অংশীজন, কাস্টমস করবে লক্ষ্য অর্জন’ প্রতিপাদ্য নিয়ে শুক্রবার সকাল ১০ টায় রাজশাহী শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোডের্র কর নিরীক্ষা ও গোয়েন্দা বিভাগের সদস্য জি এম আবুল কালাম কায়কোবাদ। প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আবুল কালাম কায়কোবাদ বলেন, কর ধার্যের বিষয়টি বেশ প্রাচীন। সভ্যতার আদি থেকে এর সম্পর্ক। প্রাচীনকালে কর ধার্যের কারণটা ছিল রাজ পরিবার, রাজ কর্মচারী এবং ভৌগোলিক সীমানা সুরক্ষার কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গের বেতন ভাতা যোগান দেওয়া। কর ব্যবস্থার সবচেয়ে বড় পরিবর্তন সাধিত হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে। সেখানে কল্যাণকর রাষ্ট্রের ধারণাটা ব্যাপকভাবে সামনে চলে আসে। তিনি বলেন, আমাদের দেশটা হয়তো এখনো সেই পর্যায়ে যেতে পারেনি। প্রতিটা নাগরিক আর্থিক ব্যবস্থা সেভাবে সুসংগঠিত করতে পারেনি। তারপরও রাষ্ট্র অনেকগুলো কল্যাণকর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে আছে শিক্ষা সম্প্রসারণ, দারিদ্র জনগষ্ঠির মধ্যে- বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, খাদ্য বন্টন ব্যবস্থা, স্বল্পমূল্যে খাদ্য সরবরাহ। বেশ কিছু দিন আগেও আমাদের দেশে অনেক মানুষ অনাহারে থেকেছে সারাদিন কোনো খাবার জোটেনি। আমাদের আর্থিক ব্যবস্থা সুসংগঠিত করার মাধ্যমে আমরা সেই জায়গা থেকে অনেকটাই বেরিয়ে আসতে পেরেছি। রাষ্ট্রের কাজ শুধু অবকাঠামো নির্মাণ নয় উল্লেখ করে আবুল কালাম কায়কোবাদ বলেন, রাষ্ট্রকে কল্যাণকর ভূমিকায় আবতীর্ণ হতে হয়। সে পথ পরিক্রমা চলমান আছে। আশা করি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়ে পুরো দেশ একটি কল্যাণকর রাষ্ট্রে পরিণত হবে। এ সময় রাজশাহী অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে যেগুলো অতি জরুরি, তা দ্রুত এগিয়ে নেয়ার আশ্বাস দেন তিনি। রাজশাহীর কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট এর কমিশনার মো. জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন- রাজশাহী কর আপীল অঞ্চলের কর কমিশনার মনোয়ার আহমেদ, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স এ- ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান রিংকু, চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এ- ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মো. আবুল ওয়াহেদ। অনুষ্ঠানে ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন রাজশাহী কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট এর উপকমিশনার মো. নূর উদ্দিন মিলন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, ব্যবসায়ী, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।