প্রয়োজনীয় পরিচর্যার অভাবে রংপুরের পীরগঞ্জে উপজেলায় দেশের প্রথম মডেল হিসাবে ৩৬৫ প্রজাতির ওষুধির গাছ নিয়ে বিগত ২০০৩ ইং সনে গড়ে তোলা ওষুধি মিউজিয়ামটি এখন বিলুপ্তির বর্তমানে পথে। উপজেলা পরিষদের আর্থিক সহযোগিতায় উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের ব্যবস্থাপনায় ওই মিউজিয়ামটি গড়ে তোলা করা হয়েছিল। কৃষি বিভাগ জানায়, সরকারের ভেষজ ওষুধি বৃক্ষের চারা রোপণের নির্দেশ প্রাপ্ত হয়ে তদানিন্তন জতীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অনুপ্রেরণায় কৃষি অধিদপ্তরের সার্বিক তত্ত্বাবধানে উদ্বোধনী দিনে প্রায় ২’শ ওষুধি গাছের চারা রোপণের মাধ্যমে মিউজিয়ামের যাত্রা শুরু করা হয়েছিল। এরপর কৃষি দপ্তরের উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন স্থান হতে দূর্লভ প্রজাতির ওষুধি গাছের চারা সংগ্রহ সাপেক্ষে মিউজিয়ামটিতে ৩৫৫ প্রজাতির ওষুধি গাছের চারা রোপণ করা হয়। তথ্যানুযায়ী মিউজিয়ামটিতে হরিতকি, বহেরা, আমলকি, নিম, নিসিন্দা, আকন্দ, অর্শ্বগন্ধা, সর্পগন্ধা, বাসক, অশোক, নাগেশ্বর, কালমেঘ, ওলটকম্বল, অর্জুন, রক্ত চন্দন, শ্বেত চন্দন, বেল, হাড়জোরা, শ্বতমুলী, ঘৃতকুমারী, পাথরকুচি, নয়ন তারা, দন্তমুল, অনন্তমুল, ঘৃত কাঞ্চন, কদবেল, কমরচা, চালতা, জারুল, ডেউয়া, বিলাতি, গাব, কাজু বাদাম, ছাতিম, শিমুল, সজিনা, খয়ের, তেজপাতা, পলাশ, সোনালু, ডালিম, পিয়ারা, জাম, জলপাই, দেবদারু, পেঁপে, জামির, লেবু, তেতুল, বকুল, মহুয়া, শিউলী, কেয়া, টগর, মাধবীলতা, লতাকুস্তরী, বেলি, চেরি, মল্লিকা, করবী, কাঞ্চন, ধুতরা, অপরজিতা, পারুল, মালতি, বগফুল, সোনামুখি, জয়ন্তী, গাদাফুল, আতা, জয়তুন, ছোটকলা, বার্লি কেউরা, বরুন, কুলখ, বাসন্তি, কদম, রক্তজবা, শ্বেতজবা, তরুলতা, সেওড়া, আগড়, রাহুচান্ডাল, উলট চান্ডাল, বনহলুদ, তরুক চন্ডাল, থানকুনি,বনটেপরাই, কাটানটে, ডানকুনি, রসুলশাক, পুদিনা, আমরুল, বেতশাক, হেলঞ্চা, টেনটেনী, শ্বেতপূর্ণ, রক্তপূর্ণতা, স্বর্ণলতা, গাজর, বোনফুল, কাকদানী, জবা, চিতা, বড় চান্দর, চলুদ, আদা তুলসী, লজ্জাবতী, মেহেদী, পিতরাজ, রসুন, ভাদী, কাবাব, বড় এলাচ, ভূই কুমড়া, মুল বাকরাজ, গোভেন্ডা, কৃষ্ণ তুলসী, পদ্ম, বাবর তুলসী, আটাস্বর, বনখাওয়া, লালওরা, দুধলতা, নইলতা, লালডাকাত, চামার আলু, পিলু, মানকচু, শ্বেত শিমুল, কৃষ্ণচুড়া, কার্পাস তুলা, সমাশ, জুইফুল, স্থলপদ্ম, ধাইফুল, শ্বতপত্রী, নাগপুস্তী, ইন্দ্রজল, পিতসুল, কলক নাথ, বনধনিয়া, চৈতাল, কেশুর, সুজনকাটা, বিন্না ফুলের মূল, কালজিরা, আখ, লঙ্গ, খাড়াজোরা, তালমাখনা, ছাগলগোটা, জয়পাল, কারকুচরি, চম্পাফুল, তিশি, অড়হর, বন আদা, কালো কিশোরী, কলাবতি সাদা ও কলাবতি লাল, হাছরি, রাগিবিন্যা, একবীর, ট্যাবালেবু, উপমনি, কুকসিনা, বিষহরি, জলকম, সেগুন, আলো আধারী, ফুল বদর, বিশল্য করলী, বাবলা, কলা কষ্টিকারী, রূপরাজ, গলোঞ্জ, পদ্মগোলঞ্চ, লবংগ, চরকমনি, খুজা কাঁচাকলা, মোসাফল, পেয়ারা, খেজুর তাল, জাফরান, ধান মরিচ, ককফলা, সিদুর গোটা, জামাল, জয়ফুর, গামার, তালমাখনা, কামিনী, রামাবাসক, পিপুল, এলাচী, দারুচিনি, বাদাম, তুঁত, জংগমূল, সোনাপাতা, শিয়ালকাটা, বোড়াচক্র, ভূই আমলা, আংগুর, লিচু, রসসিন্দুর, গন্ধনা, ঘোড়া নিম, তেলধারা, জিরা, লাউ পুঁইশাক, বিষসিং, যাওন, নারকেল, সুপারী, বটগাছ, ইপিল, গোরসুল, ওদরা, পাথর চুড়া, বচ, তোকমা, জিওল, আলকুশি, বরুন, কচুর, সিদুরগোটা, ভ্যাটফুল, গুল, কাঠাল, বরবটি, সিম, পটল, তরমুজ, চিচিঙ্গা, মিষ্টি আলু, বেগুন, তামাক, চিরতা, লাউ, আমড়া, দুর্বাঘাস, শিয়ালমুত্রী, কাকলা, মুথা, বায়সী, কটফল, এবারু, পান, বামুন মাটি, ধুন্দল, মুক্ত ঝুড়ি, কবচ, গোল মরিচ, চাল কুমড়া, ধনে, অতিবিষা, সুর্বা, বনুক, কেওড়া, লালতড়া, বিছুটা, রাখাল, মসুর, ফলে খাড়া, ভুজরাজ, কাকজংগো, কাকাদানি, বাধুনী, আম, তিল, চমক, খেসারী, ঢেঁরশ, বাঁশ, সরিষা, পেঁয়াজ, মূলা, পানি ফল, মেথী, কলমী, আলু, গম, কুমকুম, জামিনি, কুশ, উলুখড়, জাাতিফুল, আজুফল, আনারস, চাঁপা ও চামার আলুসহ ৩৫৫ প্রজাতির ওষুধি গাছ মিউজিয়ামটিতে শোভা পাচ্ছিল। উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে দৃষ্টিনন্দন স্থানে গড়ে তোলা এই মিউজিয়াম সে সময় দেখার জন্য প্রতিদিন গাছ পাগল শতশত মানুষ ও কবিরাজির কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিরা মিউজিয়ামটি দেখতে ভীড় জমাতো। সে সময় প্রতিটি গাছে পৃথক পৃথক নাম লিখে নেমপে¬ট ব্যবহার করা হয়েছিল। যাতে দর্শনার্থীরা সহজে ওষুধি গাছগুলোকে চিনতে ও বুঝতে পারে। পরবর্তী পর্যায়ে কৃষি বিভাগের উদাসিনতা ও দায়িত্বহীনতার কারণে মূলবান এই মিউজিয়াম আজ বিলুপ্তির পথে। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবীদ সাদেকুজ্জামানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন-প্রয়োজনীয় অর্থের বরাদ্দ না থাকায় ওষুধি মিউজিয়ামটির যথাযথ রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।