দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শালবন এর ২ হাজার ৮৩৬ একর জমির উপর রয়েছে বিশাল বনাঞ্চল এলাকা। আর ওই এলাকার কিছু অসাধু ব্যাক্তিরা শালবনের গাছ কেটে দীর্ঘদিন ধরে ৩৫০ একর জমির অবৈধভাবে দখলে নিয়ে ভোগদখল করে আসছে। অবৈধ দখলদারদের দখলে থাকা ৩৫০ একর সম্পত্তির মধ্যে প্রায় ১০৯ একর বনের সম্পত্তি উদ্ধার করে উডলক বাগান সৃজন করেছে ধর্মপুর বন বীটের কর্মকর্তা মহসিন আলী। দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলার ভারত সীমান্ত ঘেষা ৮ নং ধর্মপুর ইউনিয়নে এ বিশাল বনাঞ্চল অবস্থিত। ধর্মপুর বন বীট কর্মকর্তা মহসিন আলী জানান, ২ হাজার ৮৩৬ একর জমি নিয়ে দিনাজপুর জেলার সর্ববৃহৎ এ বনাঞ্চল। এ বনাঞ্চলে রয়েছে শাল, সেগুন, আকাশমনিসহ নানা প্রজাতীর গাছ পালা। ৮ নং ধর্মপুর ইউনিয়নসহ পাশের ১০ রাণীপুকুর ও ১১ নং পলাশবাড়ী ইউনিয়নের আংশিক এলাকায় রয়েছে এ শালবন। অবৈধ দখলদারদের মধ্যে রাজনৈতিক, শ্রমজীবিসহ বিভিন্ন পেশার সাথে সম্পৃক্ত ব্যাক্তিরা প্রভাব বিস্তার আবার অনেকে ভুয়া কাগজপত্র তৈরী করে অবৈধভাবে ভোগ দখল করে আসছে। বন বিভাগ সরকারি বনভূমি অবৈধ দখলদার উচ্ছেদে নানা পরিকল্পনা গ্রহন করলেও মাঠ পর্যায়ে তা বাস্তবায়নে নানা জটিলতার সৃষ্টি হওয়ায় পূর্বের কোন বীট কর্মকর্তাগণ তা বাস্তবায়ন করতে পারেননি। ধর্মপুর বন বীট কর্মকর্তা মহসিন আলী যোগদানের পর হতে শুরু করেন অবৈধ দখলদার উচ্ছেদের পরিকল্পনা শুরু করেন। ২০২২-২০২৩ অর্থবছর হতে গত ২৬ জানুয়ারী/২০২৪ পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে ১০৯ দশমিক ০৮ একর বনের সম্পত্তি অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করে উডলক বাগান সৃজন করতে সক্ষম হয়েছে। উদ্ধারকৃত বনের সম্পত্তি হলো, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ধর্মপুর ইউনিয়নের সাহাপুর মৌজায় ৩৪ জন ব্যাক্তি অবৈধ দখলদারকে উচ্ছেদ করে ২৮ দশমিক ৫০ একর, ধর্মপুর মৌজায় ১৮ জন ব্যাক্তি অবৈধ দখলদারকে উচ্ছেদ করে ২৭ দশমিক ৩০ একর, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ১০ নং রাণীপুকুর ইউনিয়নের ছোট চৌপুকুরিয়া মৌজায় ৩ জন ব্যাক্তি অবৈধ দখলদারকে উচ্ছেদ করে ১ একর, ধর্মপুর মৌজায় ১৯ জন ব্যাক্তি অবৈধ দখলদারকে উচ্ছেদ করে ১৬ একর, ৮ নং ধর্মপুর ইউনিয়নের বড় বৈদ্যনাথপুর মৌজায় ৩২ জন ব্যাক্তি অবৈধ দখলদারকে উচ্ছেদ করে ১৬ একর, দ্বীপনগর মৌজায় ১৭ জন ব্যাক্তি অবৈধ দখলদারকে উচ্ছেদ করে ১০ একর, ধর্মজইন মৌজায় ১৫ জন ব্যাক্তি অবৈধ দখলদারকে উচ্ছেদ করে ৯ একর এবং সর্বশেষ ২৬ জানুয়ারী রানীপুর মৌজায় ৪ জন ব্যাক্তি অবৈধ দখলদারকে উচ্ছেদ করে ১ দশমিক ২৮ একর সম্পত্তি উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। এখনো প্রায় ২৪০ দশমিক ৯২ একর বনাঞ্চলের সম্পত্তি বেদখলে রয়েছে বলে জানিয়েছেন ধর্মপুর বন বীট কর্মকর্তা মহসিন আলী। পর্যায়ক্রমে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে বনাঞ্চলের সম্পত্তি উদ্ধার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। বীট কর্মকর্তা মহসিন আলী বলেন, সামাজিক বন বিভাগ দিনাজপুর এর সদর রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা মান্নান হোসেন এর দিক-নির্দেশনায় এবং স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গের সর্বাত্বক সহযোগিতায় এ পর্যন্ত ওই পরিমান বনভুমি উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।