নেত্রকোনার কলমাকান্দায় মাদ্রাসায় আসা-যাওয়ার পথে উত্ত্যক্তের বিষয় পরিবারকে জানানোয় নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে কয়েকজনের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় করা মামলায় গত ২৯ ডিসেম্বর এক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর শুক্রবার আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গতকাল দুপুরে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার লতিফপুর এলাকা থেকে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার সকালে তাঁদেরকে কলমাকান্দা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। ময়মনসিংহ র্যাব-১৪ এর উপপরিচালক (অপারেশনস অফিসার) মো. আনোয়ার হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। গ্রেপ্তাররা হলেন নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার রাধানগর গ্রামের দৌলত মিয়া (২৩) ও একই উপজেলার জয়নগর গ্রামের দেলোয়ার হোসেন (২২)। এর আগে ২৯ ডিসেম্বর একই মামলার আসামি মো. মনির মিয়াকে (২৪) নেত্রকোনার দুর্গাপুর থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। মামলার বরাত দিয়ে র্যাব জানায়, ভুক্তভোগী ছাত্রী কলমাকান্দার একটি মাদ্রাসার নবম শ্রেণির ছাত্রী। মাদ্রাসায় যাওয়া-আসার পথে আসামিরা প্রায়ই তাকে উত্ত্যক্ত করতেন ও অশালীন কথাবার্তা বলতেন। গত ১১ নভেম্বর ওই ছাত্রী বিষয়টি তার মাকে জানায়। ওই দিন বিকেলে ছাত্রীর মা ঘটনাটি স্থানীয় নারী ইউপি সদস্যকে জানান। পরে ছাত্রীর মাকে নিয়ে ইউপি সদস্য অভিযুক্ত মনির মিয়ার বাড়িতে গিয়ে অভিভাবকদের বিষয়টি জানান। এতে মনির মিয়া ও তাঁর পরিবারের লোকজন ইউপি সদস্যসহ ও ছাত্রীর মায়ের ওপর ক্ষিপ্ত হন। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে মনির মিয়াসহ তার পরিবারের লোকজন ছাত্রীর মা ও ইউপি সদস্যকে পিটিয়ে জখম করেন। খবর পেয়ে ওই ছাত্রী ও প্রতিবেশীরা গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে পাশের বাড়িতে নিয়ে আসেন। পরে ওই ছাত্রী তার মায়ের কাপড়-চোপড় নেওয়ার জন্য নিজের বাড়িতে যায়। এ সময় অভিযুক্তরা ওই ছাত্রীকে পাশের ধানখেতে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণ করেন। চিৎকারে ছাত্রীর পরিবারের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরবর্তীতে, উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান চিকিৎসকেরা। এ ঘটনায় ওই ছাত্রী বাদী হয়ে তিনজনের নামসহ অজ্ঞাত আরও দুজনকে আসামি করে আদালতে লিখিত অভিযোগ দেয়। পরে আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে কলমাকান্দা থানা-পুলিশকে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেন। গত ৯ ডিসেম্বর মামলাটি রেকর্ডভুক্ত হয়। কিন্তু ঘটনার পর থেকে আসামিরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। গত ২৯ ডিসেম্বর আসামি মো. মনির মিয়াকে নেত্রকোনার দুর্গাপুর থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে গতকাল দুপুরে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার লতিফপুর এলাকা থেকে দৌলত মিয়া ও দেলোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। ময়মনসিংহ র্যাব-১৪-এর উপপরিচালক (অপারেশনস অফিসার) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘গ্রেপ্তার দুই আসামিকে আজ সকালে কলমাকান্দা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতেও র্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’ কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ লুৎফুল হক বলেন, ‘গ্রেপ্তার দুই আসামিকে আজ বিকেলে আদালতে পাঠানো হয়। এর আগে এই মামলার অপর আসামি মনির মিয়াকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।