আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণের স্থান নির্ধারণ নিয়ে দু'পক্ষের পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমস্যা নিরসনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রনি আলম নূর সম্ভাব্য দুটি স্থান পরিদর্শন করে স্থানীয় ব্যক্তিদের সাথে মতবিনিময় করেছেন।
শনিবার (২৭ জানুয়ারী) বিকালে প্রথমে সম্ভাব্য গদাইপুর গ্রামের কাছারিবাড়ি নামক স্থানে উপস্থিত জনতার সাথে কথা বলেন। এ সময় গদাইপুরে স্থান নির্ধারণের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করে বক্তব্য রাখেন, সাবেক ইউপি সদস্য খোকন খাঁ। তিনি বলেন পূর্ব পুরুষ থেকে এখানে কাছারিবাড়ি ছিল। এখানে ৬৩ শতক খাস সম্পত্তি আছে। সম্পত্তিটি আশাশুনি টু প্রতাপনগর প্রধান সড়কের পাশে অবস্থিত হওয়ায় যাতয়াত ব্যবস্থা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এখানে অফিসটি নির্মীত হলে ইউনিয়নের ৬টি ওয়ার্ডের মানুষ উপকৃত হবেন। অপরদিকে খাজরা বাজারে পুরাতন ভূমি অফিসের নির্ধারিত স্থানে উপস্থিত হয়ে যুক্তি উপস্থাপন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা দিনেশ চন্দ্র ম-ল। তিনি বলেন, ১০০ বছরের অধিক কাল থেকে খাজরা ইউনিয়ন পরিষদের পাশে অবস্থিত ভূমি অফিসে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হামলায় ভূমি অফিসটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হলে খাজরা ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষে এর কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। স্বাধীনতার আগে এবং পরে ভূমি অফিসের নামে কোবলা মূলে ১৫ শতক জমি হস্তান্তর করেন তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যান মরহুম মোবারক আলী। কিন্তু ১৯৯১-৯২ সালে ভূমি জরিপের সময় অজ্ঞাত কারণে ওই সরকারি সম্পত্তি রেকর্ডভুক্ত হয়নি। ভূমি অফিসটি খাজরা ইউনিয়নের নয়টি মৌজার মধ্যে ছয়টি মৌজার মধ্যভাগে অবস্থিত। এর চারপাশে মসজিদ, মন্দির, হাইস্কুল, দাখিল মাদ্রাসা, হাসপাতাল, বড় বাজার, কৃষি অফিস, প্রাণিসম্পদ অফিস, মহিলা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, খেলার মাঠ ও মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ রয়েছে। ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মো. আবদুল হাই এখানে যোগদানের পর থেকে স্থানীয় ব্যক্তিদের মতামতকে উপেক্ষা করে গতবছরের ২৬ এপ্রিল ১২৪ নং স্মারকে গোপনে ভূমি অফিসটি গদাইপুরে স্থানান্তরের জন্য প্রতিবেদন দাখিল করেন। তার নানাবাড়ি ওই স্থানের পাশাপাশি হওয়ায় তিনি এ জনস্বার্থ বিরোধী কাজ করেছেন। তাছাড়া বহুপূর্বে যখন গদাইপুরে কাছারিবাড়ি ছিল তখন সেখানে ডাকাতি করে কয়েকটি মৌজার কাগজপত্র লুটপাট করা হয়েছিল। তাই সেখানে ভূমি অফিস নির্মীত হলে সবসময় নিরাপত্তার বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ করবে। তাই নিরাপত্তা ও জনস্বার্থ বিবেচনা করে খাজরা বাজারের পুরাতন স্থানে ভূমি অফিস নির্মাণের জন্য উপস্থিত শতশত নারী-পুরুষ ইউএনও এর মাধ্যমে ভূমি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী নিকট উদাত্ত আহ্বান জানান। ইউএনও রনি আলম নূর পরিদর্শন শেষে ঘটনাস্থল ত্যাগ করলে উভয় স্থানে পৃথক পৃথক ভাবে নিজ নিজ দাবি আদায়ের দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, ইউপি সদস্য, ব্যাবসায়ী, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সর্বস্তরের জনগণ অংশগ্রহণ করেন।