প্রতিযোগিতার বয়সভিত্তিক ক্যাটাগরিতে এসেছে পরিবর্তন। অনূর্ধ্ব-২০ এর বদলে এবার আসরটি হবে অনূর্ধ্ব-১৯ বছর বয়সীদের নিয়ে, তবে মেয়েদের লক্ষ্য সেই আগের মতোই- মুকুট ধরে রাখা। কোচ সাইফুল বারী টিটুর চাওয়াও একই, তবে তিনি কিছুটা সতর্ক। কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে আগামী শুক্রবার নেপালের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ উইমেন’স চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু করবে বাংলাদেশ। এবারের প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশসহ অংশ নিচ্ছে ভারত, নেপাল ও ভুটান। বয়সভিত্তিক এই প্রতিযোগিতার গত আসর হয়েছিল অনূর্ধ্ব-২০ বছর বয়স ক্যাটাগরিতে। নেপালকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে শিরোপা উৎসবে মেতেছিল মেয়েরা। এবারের লক্ষ্য জানাতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে (বাফুফে) মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে এসে অধিনায়ক আফিদা খন্দকার, সহ-অধিনায়ক স্বপ্না রানী আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে বলেছেন সাফল্যের ভেলায় ভাসতে চান এবারও। অল্প কথায় আফিদা বললেন, “আমাদের লক্ষ্য ফাইনাল খেলা এবং হাসি নিয়ে টুর্নামেন্ট শেষ করা।” পরে স্বপ্নাও সুর মেলালেন অধিনায়কের কণ্ঠে। “যদিও এর আগে আমরা অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়ন হয়েছি, (এবার অনূর্ধ্ব-১৯), তো আমরা তার ধারাবাহিকতা ধরে রাখার চেষ্টা করব। আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন, যেন আমরা নিজেদের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে ট্রফিটা দেশে রাখতে পারি।” ২৩ জনের দলে জাতীয় দলের খেলোয়াড় আছেন পাঁচ জন- আফিদা, স্বপ্না, স্বর্ণা রানী, ইতি খাতুন ও সুরমা জান্নাত। বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিকেএসপির তিন জন- নবীরুন খাতুন, লুৎফুর আক্তার লিমা ও বন্যা খাতুন। অভিজ্ঞ ও নবীনদের নিয়ে গড়া দল নিয়ে সন্তুষ্ট কোচ টিটু। তবে ভারত ও নেপালকে সমীহ করছেন তিনি। “ফিজিক্যালি এদের মধ্যে পার্থক্য নাই। তবে অভিজ্ঞতার দিক থেকে যদি বলি, জাতীয় দলে যারা খেলেছে (অনূর্ধ্ব-১৯ দলের) তাদের অভিজ্ঞতা অনেক বেশি। সে তুলনায় নতুনদের পরিপক্কতা কম এবং এটাই আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ থাকবে যে ওদেরকে দলের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া।” “র্যাঙ্কিংয়ের দিক থেকে ভারত (৬৫তম) ও নেপাল (১০৫তম) আমাদের (১৪০তম) চেয়ে অনেক এগিয়ে, কিন্তু খেলা আমাদের নিজেদের মাঠে। এখানে প্রতিদিন অনুশীলন করেছি, তো এই সুবিধা আমরা দ্রুত নেওয়া, অনাকাঙিক্ষত ভুলগুলো (আনফোর্সড এরোরগুলো) ট্যাকল দেওয়া- আমার মনে হয় এগুলো গুরুত্বপূর্ণ আমাদের জন্য।” ফরোয়ার্ড সাগরিকার চোট নিয়ে আপাতত দুঃশ্চিন্তা নেই বলেও জানালেন টিটু। সেরাটা বের করে আনতে নতুনদেরও তিনি স্বাধীনতা নিয়ে খেলার সুযোগ দিতে চান। “অনূর্ধ্ব-১৭ দল থেকে যারা এই স্কোয়াডে এসেছেৃঅনেক সময় চাপ তাদের জন্য নিজেদের সেরাটা মেলে ধরার ক্ষেত্রে বাধা তৈরি করে। আমি চাই না, তারা এই চাপটুকু অনুভব করুক। অনেক ক্ষেত্রে আমরাও নতুন খেলোয়াড়কে দ্রুত পাস দিতে বলি, কিন্তু দেখা যাচ্ছে সে তিন-চারজনকে কাটিয়ে এগিয়ে যেতে পারত, এসব বিষয়গুলো মাথায় রেখেই আমরা সবকিছু সাজিয়েছি।” “সাগরিকা অনুশীন করেছে তিন দিন। সে ভালো অবস্খায় আছে। ফাইনালে গেলে সবসময় চেষ্টা থাকবে শিরোপা জেতার। যেহেতু আমরা বর্তমান চ্যাম্পিয়ন। শিরোপা ধরে রাখতে যতটা চেষ্টা করা যায়, ততটাই করা হবে। তবে আমি মনে করি, ম্যাচ বাই ম্যাচ ভাবাই আমাদের জন্য ভালো হবে।” অনূর্ধ্ব-১৮, ১৯ ও ২০- এই তিন ফরম্যাটে বয়সভিত্তিক প্রতিযোগিতাটি মাঠে গড়িয়েছে সব মিলিয়ে মোট চার বার। তিন বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। একবার শিরোপা জিতেছে ভারত; ২০২২ সালে অনূর্ধ্ব-১৮ বছর বয়সীদের নিয়ে হওয়া প্রতিযোগিতায়।