নগরীতে একের পর এক ভরাট হয়ে যাচ্ছে পুকুর। ভূমিদস্যুদের থাবায় ইতোমধ্যে অসংখ্য পুকুর ভরাট হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে নগরীর অসংখ্য পুকুরের নাম-নিশানা পর্যন্ত হারিয়ে গেছে। পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে-পুকুর এবং খালগুলোও ভরাটের ফলে পরিবেশ দূষণে মানব সভ্যতা বিরোধী প্রতিযোগিতা চলছে।
ভরাট হওয়া পুকুর ও খালগুলোতে বহুতল ভবন এবং মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে। আবার যেসব পুকুর রয়েছে সেসবও পর্যায়ক্রমে ভরাটের প্রতিযোগিতায় নেমেছেন পরিবেশ বিনষ্টকারী ভূমি খেকোরা। তারই ধারাবাহিকতায় নগরীর ১৪ নম্বর ওয়ার্ডস্থ বাংলা বাজার সংলগ্ন মকবুল ইঞ্জিনিয়ার সড়ক এলাকায় রাতের আঁধারে পুকুর ভরাটের জন্য গত কয়েকদিন থেকে গভীর রাতে পুকুর ভরাটের জন্য ট্রাকে ট্রাকে বালু ফেলা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার সকালে হঠাৎ করে পুকুর ভরাটের এ দৃশ্য দেখে হতবাক হয়ে যান এলাকাবাসী। নিরবে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকার বাসিন্দারা। পুকুরটি ভরাটের দৃশ্য কোনভাবেই মেনে নিতে পারছেন না স্থানীয় বাসিন্দারা। কারণ এ পুকুরের ওপর নির্ভর করে এলাকার পানি সমস্যা সমাধান হচ্ছে।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ওই পুকুরের মালিক ২৪ জন। তারা সম্মিলিত ভাবে সাড়ে বারো শতকের পুুকুরটি ভরাট করেছেন। সরেজমিনে মালিক পক্ষের কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে ভরাট হওয়া অংশে টাঙানো একটি সাইনবোর্ড থেকে মাহমুদুল হাসান নামের এক মালিকের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ওখানে আমরা বাড়ি করবো। সেজন্যই ভরাট করা হয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০০০ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জারি করা এক আদেশে বলা হয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা, জনগণের আশ্রয়স্থল রক্ষা ও অগ্নিনির্বাপণে সহায়তা করতে কোনো অবস্থায় খাল-বিল, পুকুর-নালাসহ প্রাকৃতিক জলাশয় ভরাট করা যাবে না এবং এর গতিপথ পরিবর্তন করা যাবেনা। তবে কোনো দপ্তর যদি সরকারি কাজে নিজস্ব পুকুর ভরাট করতে চায়, সেক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের মাধ্যমে ভূমি মন্ত্রণালয়ে পুকুর ভরাটের একটি প্রস্তাব পাঠাতে হবে।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের রোড ইন্সপেক্টর সাজ্জাদ হোসেন বলেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে শুনে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। তবে সেখানে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে সাইনবোর্ডে থাকা একটি নম্বরে কল দিলে ওপার থেকে নিজেকে পুলিশের লোক পরিচয় দিয়ে দুরব্যবহার করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে নোটিশ করবো। পরিবেশ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক কামাল মেহেদী জানান, পুকুর ভরাট কোনভাবেই করা যাবেনা। এটা আইনগতভাবে পুরোপুরি নিষিদ্ধ। তিনি আরও জানান, পুকুর ভরাটের বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।