অসুস্থ মায়ের চিকিৎসার জন্য সৌদি প্রবাসী হেনা আক্তার টাকা পাঠিয়েছিলেন ২০১৯ সালে। দীর্ঘ চার বছরেরও অধিক সময় পর সেই টাকা গ্রাহকের হাতে এসেছে। এরইমধ্যে অর্থাভাবে বিনাচিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করেছেন রেমিট্যান্স যোদ্ধা হেনা আক্তারের মা। ঘটনাটি জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার।
সূত্রমতে, আগৈলঝাড়ার বাকাল গ্রামের মৃত গনি সরদারের মেয়ে হেনা আক্তার পরিবারের সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে দীর্ঘদিন থেকে সৌদি আরবে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করছেন। দেশে তার গর্ভধারীনি মা রহিমা বেগম অসুস্থ হয়ে পরলে তার চিকিৎসার জন্য ২০১৯ সালের ২ ডিসেম্বর সৌদি আরবের আল-রাজি মানি এক্সচেঞ্জ থেকে ৪৪ হাজার ৪৬৪ টাকা তার বোন রিনা বেগমের জনতা ব্যাংক আগৈলঝাড়া শাখার চলতি হিসাব নাম্বারে পাঠানো হয়।
শুক্রবার সকালে রিনা বেগম জানান, তিনি ওই শাখায় টাকা উত্তোলন করতে গেলে ব্যাংকের তৎকালীন ব্যবস্থাপক প্রদীপ কুমার বিশ্বাস টাকা আসেনি জানিয়ে একাধিকবার তাকে ফেরত দেন। পরে তিনি (রিনা বেগম) টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য আগৈলঝাড়া জনতা ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক বরাবর লিখিত আবেদন করেন। এরপর বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর তথ্য প্রমাণ নিয়ে ব্যাংকে গিয়ে শাখা ব্যবস্থাপকের কাছে জানতে পারেন যে ওই টাকা চার বছরেও তার হিসাবে জমা হয়নি।
সূত্রমতে, বর্তমান শাখা ব্যবস্থাপক শহিদুল হক যোগদানের পর ঘটনাটি জানতে পেরে ২০২২ সালের ১৩ জুলাই জনতা ব্যাংকের ঢাকার প্রধান কার্যালয়ে চিঠি দিয়ে বিষয়টি অবহিত করেন। প্রধান কার্যালয় চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, হেনা আক্তারের পাঠানো রেমিট্যান্স ভুলবশত চাঁদপুরের জনতা ব্যাংকের বালিথুবা বাজার শাখায় রিনা বেগম নামের এক গ্রাহকের হিসাবে জমা হয়েছে। পরে ওই গ্রাহক টাকা তুলে নিয়ে গেছেন। এরপর গত ৩১ জানুয়ারি জনতা ব্যাংকের চাঁদপুর জেলার বালিথুবা বাজার শাখার ব্যবস্থাপক মোঃ ওমর ফারুক আগৈলঝাড়া জনতা ব্যাংকের গ্রাহক রিনা বেগমের একাউন্টে ৪৪ হাজার ৪৬৪ টাকাসহ অতিরিক্ত আরও ৮৮৯ টাকা জমা প্রদান করেন। আগৈলঝাড়া জনতা ব্যাংকের গ্রাহক রিনা বেগম বলেন, ৩১ জানুয়ারি তার মোবাইল ফোন নম্বরে ম্যাসেজ এসেছে যে তার একাউন্টে টাকা জমা হয়েছে। কিন্তু ইতোমধ্যে অর্থাভাবে বিনাচিকিৎসায় তার মা মৃত্যুবরণ করেছেন।
আগৈলঝাড়া জনতা ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক মোঃ শহিদুল হক বলেন, আমাদের ব্যাংকের গ্রাহক উপজেলার বাকাল গ্রামের রিনা বেগমের চলতি হিসাব নম্বর ১০২১০০৩২১০। এই অ্যাকাউন্ট নম্বরে তার বোন হেনা আক্তার সৌদি আরব থেকে চার বছর আগে ৪৪ হাজার ৪৬৪ টাকা ৬৭ পয়সা পাঠিয়েছেন। কিন্তু ওই টাকা ভুল করে জনতা ব্যাংকের চাঁদপুর জেলার বালিথুবা বাজার শাখায় চলে যায়। ওই টাকার সাথে চার বছরে অতিরিক্ত আরও ৮৮৯ টাকা ২৯ পয়সা রিনা বেগমের একাউন্টে জমা হয়েছে।