দিঘলিয়ায় চিহ্নিত সন্ত্রাসী মাসুম মোল্যা ও তার বাহিনীর হাতে নানা অত্যাচার ও নির্যাতনে জিম্মী হয়ে পড়েছে বারাকপুর ও গাজীরহাট ইউনিয়নের হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। মাসুম মোল্যার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন মামলা করার পরও গ্রেপ্তার এড়িয়ে তার নানা অপরাধ কর্মকান্ডের পরিধি বাড়িয়েই চলেছে। তার এহেন তৎপরতা দেখে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে মাসুম মোল্যা গংয়ের খুটির জোর কোথায়? কে তার পৃষ্ঠপোষক?
দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর ইউনিয়নের আড়ুয়া অঞ্চলের মানুষের সূত্রে জানা গেছে, দিঘলিয়া উপজেলার আড়ুয়া খেয়াঘাটের ইজারাদার ওই এলাকার বিল্লাল মোল্যার পুত্র মাসুম মোল্যা বিগত ৪ বছর ধরে নানা সন্ত্রাসী কর্মকা- করে আসছে। তার নানা অপতৎপরতায় এ এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন জিম্মি হয়ে পড়েছে। ওই মাসুম মোল্যার বিরুদ্ধে দিঘলিয়া থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। গত ২ জানুয়ারী স্থানীয় আড়ুয়া উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যাপীঠের দশম শ্রেণির ৩ জন হিন্দু সম্প্রদায়ের ছাত্রকে বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে অবাঞ্চিতভাবে স্কুলের ভেতরে ঢুকে নির্মমভাবে মারধর করে। ছাত্র ৩ জন হলো আড়ুয়া গ্রামের শিবু পদ বাছাড়ের পুত্র পল্লব বাছাড় (১৬), লক্ষ্মীকাঠি গ্রামের স্বপন বিশ্বাসের পুত্র আকাশ বিশ্বাস (১৭) ও সুকান্ত বিশ্বাসের পুত্র প্রান্ত বিশ্বাস। এ ব্যাপারে দিঘলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
উক্ত মামলায় জামিনে এসে আবার এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকা- শুরু করে। তারই ধারাবাহিকতায় ওই মাসুম মোল্যা ও তার পুত্র ফারদিন মোল্যার নেতৃত্বে ৭/৮ জনের এক সংঘবদ্ধ চক্র গত ২৯ জানুয়ারী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের রতন সরকারের পুত্র হৃদয় শেখ (২৩) নামক এক ছেলেকে ধর্মীয় উৎসব থেকে ধরে এনে মারধর করে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাতুড়ী দিয়ে আঘাত করে এবং ধরালো দা দিয়ে মাথায় কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। সে এলাকায় চাঁদাবাজী, ঘের দখল, জমি দখল, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে চলেছে। যে তার এ সকল অপতৎপরতার প্রতিবাদ করে তার বিরুদ্ধেই সে খড়গহস্ত হয়। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হলে সে জামিন নিয়ে এসে সংখ্যা লঘুদের উপর আবার অত্যাচার নির্যাতন শুরু করে। অনেকে প্রাণ ভয়ে মুখ খোলে না। নিরবে চাঁদা দিয়ে দেয়। কোনো তথ্য প্রকাশ করেনা।
উল্লেখ্য রাধামাধবপুর গ্রামের বিল্লাল মোল্যার পুত্র মাসুম মোল্যার বিরুদ্ধে নানা সন্ত্রাসী ও অপকর্মের ঘটনা এলাকার মানুষের কাছ থেকে জানা যায়।
উক্ত মাসুম মোল্যার ছেলে ফারদেন মোল্যা ফেসবুকে পিস্তলসহ নানা অস্ত্রের ছবি আপলোড দিয়ে এলাকায় সংখ্যা লঘুষহ সাধারণ মানুষের মাঝে ত্রাস সৃষ্টি করে আসছে। সে মাদক সেবনের ছবি আপলোড দিয়ে উঠতি বয়সী যুবকদের মাদকাসক্তির দিকে উৎসাহ সৃস্টি করছে।
বিজ্ঞমহলের জিজ্ঞাসা মাসুমবাহিনীর হাতে গুরুতর আহত ও রক্ত ঝরা ছাত্র এবং যুবকের রক্তের এবং তাদের মায়ের বুকফাটা কান্নার কি কোনো মূল্য নেই? কোন অশুভ শক্তির ইশারায় তাকে পুলিশসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা গ্রেপ্তার করতে পারছেনা? তারা আর কত সংখ্যা লঘু সম্প্রদায়ের লোকজনের রক্ত ঝরাতে হবে তা এলাকাবাসী আইন প্রয়োগকারী সকল সংস্থাসহ সকল প্রশাসনিক মহলের কাছে জানতে চায়। ওই মাসুম মোল্লা, তার পুত্র ফারদিন মোল্যাসহ সকল অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে ব্যর্থ হলে আগামীতে উপজেলা ও জেলাব্যাপী নতুন নতুন করমসূচি প্রহণ করারও কথা জানান। মাসুমবাহিনীর একের পর এক অত্যাচার ও নির্যাতন স্থানীয় সংখ্যালঘুদের পীঠ দেওয়ালে ঠেকে যাওয়ার কথাও সাংবাদিকদের জনিয়েছেন এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী এই মাসুম, তার পুত্র ফারদিনসহ তার অপকর্মের সহযোগী এবং তার পর্দার আড়ালে থাকা গডফাদারদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির জোর দাবী জানিয়েছেন শান্তিপ্রিয় সুশীল সমাজ, নানা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ এলাকাবাসী।